ছবি : মেসেঞ্জার
বাংলাদেশে সাপ্লাই চেইন ম্যানেজমেন্টের ভবিষ্যতের জন্য দক্ষ জনশক্তির প্রয়োজন। পাশাপাশি বেসরকারি বিনিয়োগ ও পণ্যপরিবহণে রেল ও নৌপথের ব্যবহার বৃদ্ধিতে গুরুত্ব আরোপ করেন আলোচকরা।
শনিবার (২৯ জুন) রাজধানীর সোবাহানবাগে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অফ ম্যানেজমেন্ট (বিআইএম) কার্যালয়ে "ন্যাশনাল লজিস্টিক্স পলিসি ২০২৪ এ্যান্ড ফিউচার অফ সাপ্লাই চেইন ফ্যাসিলিটাশন ইন বাংলাদেশ" শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অফ ম্যানেজমেন্ট (বিআইএম) গবেষণা ও প্রকাশনা বিভাগের ম্যানেজমেন্ট কাউন্সিলর মোহাম্মদ সাঈদুর রহমান অনুষ্ঠানের সঞ্চালনা করেন।
বিশ্ব বাজারে বাংলাদেশী বাজারের প্রচুর চাহিদা আছে বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্বাহী সেল ও পিইপিজেড মহপরিচালক শাহিদা সুলতানা। তিনি বলেন,"আমাদের অনেকগুলো প্রতিষ্ঠান আছে। সব আছে। তবুও আমাদের বেকারের সংখ্যা বেশি। কোয়ালিটি কোনো সার্ভিস নেই। গ্যাপ আছে। বাইরে থেকে কাজের লোক নিয়ে নিয়ে কাজ করাই।"
দক্ষ মানবসম্পদের ওপর গুরুত্ব আরোপ করে তিনি বলেন,"আমাদের টোটাল চক্রের মধ্যে একটি বড় গ্যাপ) প্রতিষ্ঠান, ডিমান্ড, সাপ্লাই এই তিনটির মধ্যে সংযোগ করতে পারছি না। বেশ কিছুদিন ধরে পরিকল্পনা করছি আমাদের সমস্যাটা আসলে কোথায়? এটা খুঁজে বের করতে হবে। যারা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করে তারাও হতাশার মধ্যে থাকে যারা কাজ করে তারাও সরকারি চাকরির জন্য অপেক্ষায় থাকে।"
লজিস্টিক্স পলিসিতে সরকারি এবং বেসরকারি অফিস জড়িত ছিল জানিয়ে শাহিদা সুলতানা বলেন, পলিসির ভাষাও বিজনেস ফ্রেন্ডলি করার চেষ্টা করেছি। যারা আমাদের উন্নয়ন সহযোগী তারাও আমাদের অনেক সহযোগিতা করছে।
বেসরকারি খাতের সরকারের কাছে কিছু চাওয়া পাওয়া থাকে জানিয়ে তিনি বলেন,"রেগুলেশনস যেগুলো হয় সেগুলো ইনকনজিসটেন্স থাকে। গতবছর যেগুলো দিয়েছি। সেগুলো থাকবে না। ট্যাক্স রিকল্পনা থেকে শুরু সমস্ত পরিকল্পনায় তার সমস্যা হয়ে যায়। এ কারণে আমাদের বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগ করতে ভয় পায়।"
বিআইএম মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) মোঃ মতিয়ার রহমান বলেন, "আজকে যে পলিসি নিয়ে কথা হয়েছে এই ডকুমেন্টসটা যে তৈরী হয়েছে সেটা কি নতুন কিছু। হ্যাঁ। সাধারণের মত চিন্তা করা কথা চমৎকারভাবে ন্যাশনাল লজিস্টিক্স পলিসি করা হয়েছে।"
এই পলিসি করার জন্য প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়কে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, "এই পলিসির মাধ্যমে সরকারি ও বেসরকারি খাত মিলেমিশে একাকার হয়ে গেছে।"
বাংলাদেশ সাপ্লাই চেইন ম্যানেজমেন্ট সোসাইটির সভাপতি নকীব খান বলেন, "২০৩০ সালে বিশ্বের নবম ভোক্তা বাজার হবে বাংলাদেশ। সেজন্য বিভিন্ন ক্ষেত্রে যদি আমরা উন্নত না হই তাহলে আমরা কিন্তু আমাদের নির্ধারিত লক্ষ্যে পৌছাতে পারবো না।"
বিশ্বের নতুন নতুন প্রযুক্তি আমাদের গ্রহণ করতে হবে জানিয়ে তিনি বলেন,"আমাদের দক্ষ জনশক্তি দরকার।"
দেশে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন,"শুধু সরকারি খাতে নয়; বেসরকারি খাতেও বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। মাতারবাড়িতে গভীর সমুদ্রবন্দর হচ্ছে৷ যার ফলে বাংলাদেশ অনেক দূর এগিয়ে যাবে। "
শুধু সড়কপথে নয় পণ্য পরিবহনে রেল ও নৌপথ ব্যবহার করার প্রতি গুরুত্ব আরোপ করেন তিনি। বলেন, "পৃথিবী অনেক দূর এগিয়ে গেছে। সে তুলনায় আমরা অনেক পিছিয়ে আছি। আমাদের দক্ষ জনশক্তি দরকার। আমাদের এখানে নজর দিতে হবে। "
শুধু পোশাক শিল্প রপ্তানীতে ব্যস্ত না হয় আমাদের আরো বেশি বৈচিত্র্যময় পণ্য রপ্তানীতে মনযোগ দিতে হবে বলে মনে করেন তিনি। বাংলাদেশ মাত্র ১ বছরে লজিস্টিক্স পলিসি করেছে যা অত্যন্ত প্রশংসনীয় দাবি করে তিনি বলেন," যেটা প্রতিবেশী দেশ ভারতের লেগেছে ৮ বছর।"
উক্ত অনুষ্ঠানে সাপ্লাই চেইন ফোরাম এর উদ্যোগে সাপ্লাই চেইন প্রফেশনালদের জন্য "স্কোর" নামে ম্যাগাজিন এর মোড়ক উন্মোচন করা হয়। অতি শীঘ্রই এই ম্যাগাজিন সবার কাছে পৌঁছে যাবে। এই ম্যাগাজিন এর মাধ্যমে সাপ্লাই চেইন প্রফেশনালরা উপকৃত হবে। বিআইএম এর উদ্যোগে অনুষ্ঠিত এই প্রোগ্রামে অ্যাসোসিয়েটেড পার্টনার ছিল বিআইবিএম সাপ্লাই চেইন ফোরাম।
মেসেঞ্জার/আপেল