ছবি : সংগৃহীত
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, বাংলাদেশ ভারত থেকে এক হাজার মেগাওয়াট নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ আমদানি করবে সরকার।
বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) বিকেলে সচিবালয়ে নিজ কার্যালয়ে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে বলে জানান প্রতিমন্ত্রী।
শিগগিরই এ বিদ্যুৎ দেশের জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ভারত থেকে নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ আমদানির আগে নেপাল থেকে চলতি মাসে ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আনার চুক্তি চলছে। এছাড়া ভুটান থেকে বিদ্যুৎ আমদানির উদ্যোগ রয়েছে বলেও জানান তিনি।
বর্তমানেও ভারত থেকে বিদ্যুৎ আমদানি করে বাংলাদেশ। রাষ্ট্রীয় চুক্তির মাধ্যমে ভারত সরকার ও ত্রিপুরা রাজ্য সরকার থেকে গ্যাস ও জ্বালানি তেল থেকে উৎপাদিত বিদ্যুৎ আমদানি করছে বাংলাদেশ। আর আদানি পাওয়ারের কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকেও বিদ্যুৎ আমদানি করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ সরকারের উন্নয়ন পরিকল্পনায় বিদ্যুৎ উৎপাদনের উৎসে জীবাশ্ব জ্বালানি থেকে সরে এসে নবায়নযোগ্য জ্বালানিকে প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে। ২০২৫ সালে ১০ শতাংশ ও ২০৪১ সালে দেশের মোট বিদ্যুতের চাহিদার ৪০ শতাংশ নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে সরবরাহ করার পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। এজন্য সরকার দেশের অভ্যন্তরে সৌরবিদ্যুৎ, বায়ু বিদ্যুৎ উৎপাদনে জোর দিয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে প্রতিমন্ত্রী বাজেটে বরাদ্দ, বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম সমন্বয়, গ্যাস উত্তোলনে ভবিষ্যত পরিকল্পনাসহ এ খাতের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেন। একইসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আসন্ন চীন সফরে বিদ্যুৎ বিভাগ কী প্রস্তাব করেছে তারও ধারণা দেন।
নসরুল হামিদ বলেন, বর্তমানে বিদ্যুৎ, গ্যাস ও জ্বালানি তেলের বেশি দামের অন্যতম কারণ ডলারের উচ্চমূল্য। ডলারের দাম স্থিতিশীল না হওয়া পর্যন্ত বিদ্যুৎ, গ্যাস ও জ্বালানি তেলের দাম কমার সম্ভবনা কম। অন্যদিকে সরকারের ভর্তুকি থেকে বেরিয়ে আসার পরিকল্পনার কারণেও দাম বাড়ছে বলে তিনি জানিয়েছেন।
বিদ্যুৎ-গ্যাসের দাম বাড়বে
প্রতিমন্ত্রী বলেন, বিদ্যুতের উৎপাদন ও বিক্রি দরে ব্যাপক পার্থক্য আছে। ডলারের উচ্চ মূল্যের কারণে এ পার্থক্য এখন আরও বেশি হয়েছে।
'আমাকে অনেকে প্রশ্ন করেন, কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের শুরুতে যে খরচ বা দামে বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে বলা হয়েছিল, এখন তা হচ্ছে না কেন? এসব বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন খরচ ধরা হয়েছিল প্রতি ডলারের দর ৭৯ টাকা ধরে। সেই ডলারের দর এখন ১১৭ টাকা,' বলেন প্রতিমন্ত্রী।
শুধু কয়লা নয়, ডলারের দামের কারণে অন্যান্য খাতের বিদ্যুতের উৎপাদন খরচও বেড়েছে বলে জানান তিনি।
সরকার প্রায় ৫০ শতাংশ ভর্তুকি দেয় জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, এখন এ ভর্তুকি থেকে বের হতে চায় সরকার। 'সেজন্য প্রাইস অ্যাডজাষ্টমেন্ট [মূল্য সমন্বয়] করা হবে। ইতোমধ্যে দুবার করা হয়েছে। এ বছর আরও দুবার করা হবে।'
জ্বালানি তেলের দাম বেশি ডলারের দামের কারণে
প্রতিমন্ত্রী বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দামের তুলনায় বাংলাদেশে জ্বালানি তেলের দাম বেশি হওয়ার কারণও ডলারের উচ্চমূল্য। আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমলেও বাংলাদেশ ডলারের উচ্চমূল্যের কারণে দাম ঠিক করার ক্ষেত্রে ক্ষতির মুখে পড়েছে।
'তবে ভালো খবর হচ্ছে সরকার জ্বালানি তেলভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন থেকে বের হয়ে এসেছে। বিদ্যুৎ উৎপাদনে ঘাটতির মধ্যেও জ্বালানি তেলভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র চালানো হয়নি। সরকার ভর্তুকি কমানোর চেষ্টা করছে। ডলারের দামে ওঠানামা যদি না হয়, তাহলে ভর্তুকি কমে আসবে,' বলেন নসরুল হামিদ।
মেসেঞ্জার/সজিব