ঢাকা,  শনিবার
২১ ডিসেম্বর ২০২৪

The Daily Messenger

‘সংখ্যা লঘুদের ওপর নির্যাতনকে ইস্যু তৈরীকারীরাই তাতীঁবাজার মন্ডপে হামলা করেছে’

মেসেঞ্জার অনলাইন

প্রকাশিত: ১৬:০০, ১৪ অক্টোবর ২০২৪

‘সংখ্যা লঘুদের ওপর নির্যাতনকে ইস্যু তৈরীকারীরাই তাতীঁবাজার মন্ডপে হামলা করেছে’

ছবি : মেসেঞ্জার

রাজধানীর তাঁতীবাজারে পূজামণ্ডপে ‘পেট্রলবোমা’ নিক্ষেপের ঘটনার জড়িত ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চেয়ে মানববন্ধনে স্থানীয় বিাএনপি নেতারা অভিযোগ করেছেন, সংখ্যা লঘুদের ওপর নির্যাতন ও হামলা করে এতদিন ধরে যারা ইস্যু তৈরী কারে অপরাজনীতি করে আসছে, তাতীঁবাজারের পুজা মন্ডপে তারাই হামলা করেছে। আর এসব হামলার মাধ্যমে দেশ অস্থিতিশীল করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে বলেও অভিযোগ করে তারা। অবিলম্বে এই হামলায় জড়িতের গ্রেপ্তারের দাবিও জানান তারা। 

রবিবার (১৩ অক্টোবর) সকালে তাঁতীবাজারে মোড়ে রাজধানীর কোতোয়ালী থানাধীন এলাকার বিএনপি ও এর বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের কয়েকশো নেতাকর্মী একত্রিত হয়ে এই মানববন্ধন করেন তারা। এসময় তারা (১১ অক্টোবর) রাতে তাঁতীবাজার পূজামণ্ডপে ঘটা সন্ত্রাসী হামলার তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানান। একই সাথে এই হামলায় জড়িতদের অতিদ্রুত বিচারের আওতায় আনারও দাবী জানান তারা।

মানববন্ধনে স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীদের সাথে উপস্থিত স্থানীয় তথা তাঁতীবাজার এলাকার হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দও এই হামলার সাথে জড়িতদের খুজে বের করে দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবি জানান। তারা বলেন, এই হামলা হিন্দু-মুসলিম সম্প্রদায়ের সম্প্রীতি বিনষ্ট করতে চাওয়া একটি মহল পরিকল্পিতভাবে করেছে।

পুরান ঢাকায় আমরা হিন্দু-মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষেরা যে এতদিন ধরে খুব ভাল সম্পর্ক এবং পারস্পরিক সম্প্রীতির বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে বসবাস করে আসছি, একটি মহল যারা সংখ্যা লঘুদের ওপর নির্যাতনকে ইস্যু বানিয়ে দীর্ঘ দিন যাবত রাজনীতি করে আসছে তারাই আমাদের পুজা মন্ডপে হামলা চালিয়ে আমাদের দীর্ঘ দিনের সম্প্রীতি নষ্ট করার চেষ্টা করছে। খুব দ্রুত তাদের মুখোশ উন্মোচন করে আইনের আওতায় আনারও দাবি জানান তারা। 

মানববন্ধনে উপস্থিত ঢাকা মহানগর শ্রমিক দলের সভাপিত সুমন ভূইয়া বলেন, স্বৈরাচারি হাসিনা পালিয়ে গিয়ে ভারতে আশ্রয় নিলেও তার দোসররা এখনো বহাল তবিয়তেই রয়েছে। স্বৈরাচার পতনের পর থেকেই তারা নানাবিধ ষড়যন্ত্র করে দেশে বিশৃংখল পরিবেশ তৈরী করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে।

তারই অংশ হিসেবে এখন তারা বেছে নিয়ে আমাদের সম্প্রীতি নষ্ট করে দেশ অস্থিশীল করার কাজকে। তবে তাদের এসব অপচেষ্টা আমরা হিন্দু-মুসলিম সবাই মিলেই রুখে দিয়ে আসছি। সমানেও তাদের সকল অপচেষ্টা আমরা রুখে দিবো।

এসময় তিনি বলেন, একটি মহল নিজেরাই সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা করে সেটাকে ইস্যু বানিয়ে এতদিন ধরে বিভিন্ন রাজনৈতিক ফায়দা নিয়ে আসেছে। তবে এখন দেশের তাদের সেই নীল নকশা দেশের মানুষ বুঝে গিয়েছে। তাই আমরা এদেশের হিন্দু-মুসলিম-বৌদ্ধ-খ্রিস্টানসহ আপামর জনগন তাদের প্রতিরোধ করে নিজেদের সম্প্রীতি নিজেরাই রক্ষা করবো। 

কোতওয়ালী থানার ৩৬,৩৭ এবং ৩২ ওয়ার্ডের সাবেক সংরক্ষিত কাউন্সিলর সুরাইয়া বেগম বলেন, আমাদের পুরান ঢাকায় হিন্দু-মুসলিমরা মিলে খুব সুন্দরভাবে বসবাস করাটাই আমাদের ঐতিহ্য। এটাই আমাদের সৌন্দর্য্য। তাদের পুজা উতসবকে আমরা সবাই মিলে উদযাপন করে আসছি।

আর আমাদের ঈদসহ ধর্মীয় উৎসবেও তাদের অংশগ্রহন আমাদের মধ্যকার সম্পর্ককে আরো সুন্দর করে আসছে। যুগ যুগ ধরে আমাদের এই বন্ধন অটুট রয়েছে। তবে একটি রাজনৈতিক দল দেশকে অস্থিতিশীল করতেই আমাদের এই সম্প্রীতি নষ্ট করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে।

তাতীঁবাজারের পুজা মন্ডপে হামলার ঘটনাও সেই মহলটিও ঘটিয়েছে বলে দাবি করেন সাবেক এই মহিলা ওয়ার্ড কাউন্সিলর। দাবি করেন এই হামলা ও পরিকল্পনার সাথে জড়িতদের দ্রুত আইনের আওয়তায় এনে দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি দেওয়া হোক। 

কো্তওয়ালী-তাতীঁবাজার এলাকার স্থানীয় বিএনপি আয়োজিত এই মানবন্ধনে ঢাকা মহানগর দক্ষিন বিএনপির সাবেক সদস্য হাজী নাজিম, কোতোওয়ালী থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি হায়দার আলী বাবলা, কোতোওয়ালী থানা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাক আহমেদ, ৩৭নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি সিরাজুল ইসলাম সিরাজ, সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ রানা, ৩৬নং ওয়ার্ড বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আবু তাহের, সাধারণ সম্পাদক আরিফ হোসেন বাপ্পি, ৩২নং ওয়ার্ড বিএনপির (আংশিক) সভাপতি মোহাম্মদ হাবিব, মহিলা দলের কোতোওয়ালি থানা সভাপতি ইরানী আক্তার, কোতোওয়ালী থানা যুবদলের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আহমেদ হোসেন সোবহান, সাংগঠনিক সম্পাদক জুয়েল হাওলাদার, থানা ছাত্রদলের সদস্য সচিব মো.মামুন ৩৭নং ওয়ার্ড যুবদলের আহবায়ক হাজী আফজাল হোসেন লিটল, ৩৬নং ওয়ার্ড যুবদলের আহবায়ক রবিন নন্দি বাবুসহ স্থানীয় বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠন ও তাতীবাজার এলাকার হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতারা এই  মানববন্ধনে অংশ নেন।

মেসেঞ্জার/তারেক