ঢাকা,  মঙ্গলবার
১১ মার্চ ২০২৫

The Daily Messenger

সংস্কার কমিশনের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে কর্মসূচি ঘোষণা ২৫ ক্যাডারের কর্মকর্তাদের

মেসেঞ্জার অনলাইন

প্রকাশিত: ১৯:৪৬, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪

সংস্কার কমিশনের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে কর্মসূচি ঘোষণা ২৫ ক্যাডারের কর্মকর্তাদের

ছবি: সংগৃহীত

জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে কর্মসূচি ঘোষণা করেছে ২৫টি ক্যাডারদের সমন্বয়ে গড়ে তোলা 'আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদ'। শনিবার (২১ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর পুর্তভবনে 'আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদ' এর সঙ্গে পরিষদের অন্তর্ভুক্ত ২৫টি ক্যাডারের নেতৃবৃন্দের মতবিনিময় সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে।

সভায় সংস্কার কমিশনের প্রস্তাব মোটেই গ্রহণযোগ্য নয় বলে জানিয়ে এর প্রতিবাদে বিবৃতি প্রদান, কলম বিরতি, মানববন্ধন ও কেন্দ্রীয় সমাবেশের ঘোষণা দিয়েছে 'আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদ'।

প্রসঙ্গত, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের উপসচিব পুলে প্রশাসন ক্যাডারের জন্য ৫০% কোটা রেখে অন্যান্য ২৫টি ক্যাডারের জন্য ৫০% মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ এবং শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ক্যাডারকে সিভিল সার্ভিস থেকে আলাদা করার সুপারিশের সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।

আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদ দাবি হচ্ছে- উপসচিব পদে পদোন্নতিতে কোন কোটা থাকবে না, পঞ্চম গ্রেডের সবাই গাড়ির ঋণের সুবিধা পাবে, পদসৃজন, ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে তাদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে।

বিবৃতিতে 'আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদ জানায়, 'কমিশনের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ২৩ ডিসেম্বর (সোমবার প্রতিটি ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশন কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী উদ্ভুত পরিস্থিতির বিষয়ে বিবৃতি প্রদান করবে, ২৪ ডিসেম্বর মঙ্গলবার সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ১ ঘন্টা সব অফিসে কলম বিরতি পালন করা হবে, ২৬ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত সকল অফিসে স্ব-স্ব কর্মস্থলের সামনে মানব বন্ধন কর্মসূচি পালিত হবে। এছাড়া যে সব বিভাগে বিভাগীয় সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়নি, অতি দ্রুত সেখানে সমাবেশ আয়োজন এবং জনসম্পৃক্ততা আরও বৃদ্ধি করা হবে। আর আগামী ৪ জানুয়ারি শনিবার ঢাকায় সমাবেশ আয়োজন করা হবে এবং পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।'

নতুন বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে গঠিত সংস্কার কমিশনসমূহের মধ্যে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ সরকারের সকল নীতি নির্ধারণ করে এবং বাস্তবায়নে নেতৃত্ব দেয় সিভিল প্রশাসন; যা বর্তমানে ২৬টি ক্যাডার নিয়ে গঠিত। যেখানে কার্যকর রাষ্ট্রব্যবস্থা গড়তে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের আমূল পরিবর্তন দরকার, সেখানে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন বৈষম্যমূলকভাবে উপসিচব পুলে একটি ক্যাডারের জন্য ৫০% কোটা সুপারিশের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে মিডিয়ার সামনে উপস্থাপন করায় সিভিল সার্ভিসের অন্য ২৫টি ক্যাডারের সকল সদস্যের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।'

বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, 'সভায় বক্তারা বলেন, সিভিল সার্ভিসের কার্যকর সেবা নিশ্চিত করতে প্রতিটি মন্ত্রণালয়ে স্ব-স্ব ক্যাডারের অভিজ্ঞ ও দক্ষ কর্মকর্তারা পদায়িত হবেন। বর্তমানে প্রতিটি সেক্টরে নীতি নির্ধারণ, পরিকল্পনা প্রণয়ন ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করছেন প্রশাসন ক্যাডারের সদস্যরা যারা সেই সেক্টর সম্পর্কে অনভিজ্ঞ ও অদক্ষ। ফলে সেক্টরগুলো কাঙ্ক্ষিত জনসেবা নিশ্চিত করতে পারছে না। তাছাড়া সব সেক্টরে একটি ক্যাডারের নিয়ন্ত্রণ থাকায় সৃষ্ট আমলাতান্ত্রিক সিন্ডিকেট, অব্যবস্থাপনা, দুর্নীতি ও বৈষম্য রাষ্ট্রের সকল সেক্টরকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে গেছে। দেশের মানুষ প্রকৃত জনসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।'

বলা হয়েছে, 'জনবান্ধব সরকারের পরিবর্তে দেশে বিভিন্ন সময়ে গড়ে উঠেছে জনবিচ্ছিন্ন স্বৈরাচারী সরকার। কমিশন কর্তৃক শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ক্যাডারকে সিভিল সার্ভিস থেকে আলাদা করতে চাওয়া জনমনে নতুন সন্দেহের উদ্রেক করেছে। কমিশনের এ সকল সিদ্ধান্ত সিভিল সার্ভিসের মধ্যে চরম বিশৃংখলা সৃষ্টি করতে পারে। বৈষম্যহীন জনকল্যাণমূলক রাষ্ট্র গঠনে প্রত্যেকটি মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট ক্যাডারের কর্মকর্তার দ্বারা পরিচালনা এবং কোটামুক্ত মেধাভিত্তিক উপসচিব পুল অত্যন্ত জরুরি বলে জোর দাবি করেন বক্তারা।

আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদের সমন্বয়ক ড. মুহম্মদ মফিজুর রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে ২৫টি ক্যাডারের সভাপতি-সেক্রেটারিসহ সিনিয়র নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

মেসেঞ্জার/জেআরটি