ছবি: মেসেঞ্জার
ঢাকার লালমাটিয়ায় ভূমি গ্যালারি ও গ্যালারি শিল্পাঙ্গন প্রাঙ্গণে চিত্রপ্রেমী ও শিল্প বোদ্ধাদের মুগ্ধ করতে সমকালীন শিল্পী সৈয়দ গোলাম দস্তগীরের চিত্র প্রদর্শনী ‘এপিক জার্নি অব এ মাইগ্রেটরি বার্ড’ শুরু হতে যাচ্ছে। একক এই প্রদর্শনীটি আগামী ২৮ ডিসেম্বর শুরু হয়ে ১৪ জানুয়ারি পর্যন্ত সকলের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।
অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ প্রদর্শনীটি উদ্বোধন করবেন এবং প্রখ্যাত শিল্পী হামিদুজ্জামান খান এতে সভাপতিত্ব করবেন।
জন্মের পরপরই আমাদের জীবন ও প্রকৃতির সাথে এক অবিচ্ছেদ্য সম্পর্ক শুরু হয়; ধীরে ধীরে তা হয়ে ওঠে ভ্রমণপিপাসু এক আত্মার পরিভ্রমণ; যা আমাদের ইতিহাস, ঐতিহ্য আর যুগ-যুগান্তরের রঙিন পথ ধরে এগিয়ে নিয়ে যায়। শিল্পী তার এই আবেগকেই ‘এপিক জার্নি অব এ মাইগ্রেটরি বার্ড’-এ নানা রঙ ও ক্যানভাসে চিত্রিত করেছেন। মহাকাব্যিক এই যাত্রাকে তিনি অত্যন্ত মুনশিয়ানার সাথে ফুটিয়ে তুলেছেন; যা কেবল চোখে দেখা নয়, বরং, চেতনার গভীরে প্রবেশ করে; সীমানা ও বাধা অতিক্রম করার মধ্য দিয়ে যা আমাদের জীবনের আন্তঃসম্পর্ক ও সহাবস্থানের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়।
২০১০ থেকে ২০২৪, এই এক দশকেরও বেশি সময় ধরে চলা প্রকল্পগুলো একক প্রদর্শনীতে স্থান পেয়েছে। যেখানে দৃঢ়তা ও স্পর্শকাতরতার মাধ্যমে পরিযায়ী পাখিদের যাত্রাকে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। প্রদর্শনীতে প্রায় ৪০টি নির্বাচিত শিল্পকর্ম প্রদর্শিত হবে। যেখানে দর্শনার্থীরা শিল্পীর নিরলস পরিশ্রম এবং আত্মার গভীরে লুকিয়ে থাকা উপলব্ধি, ভাবনা ও স্বাধীনতার বহিঃপ্রকাশ দেখার সুযোগ পাবেন। এই কাজগুলো দর্শকদের সাথে গভীর সংযোগ তৈরি করবে; তাদের সামনে বৃহত্তর দৃষ্টিভঙ্গির নিখুঁত প্রতিচ্ছবি তুলে ধরবে।
এই প্রদর্শনীটি এমন একটি উপাখ্যান যা দর্শকদের দেখার ভঙ্গি বদলে নতুন প্রেক্ষাপট উপলব্ধি করার সুযোগ করে দিবে; সময়ের সাথে সাথে উপলব্ধির মুহূর্তকে নতুন এক ধারণায় নিয়ে যাবে। পাখির উড্ডয়ন ও তার দৃশ্যগত উপলব্ধির অনুসন্ধানের মধ্য দিয়ে শিল্পী দস্তগীর এই প্রকল্পে একটি পাখির নিরবচ্ছিন্ন গতি ও টিকে থাকার সংগ্রামকে তুলে নিয়ে আসেন; নকশা, আকার ও রঙের টাইপোগ্রাফিতে ফুটিয়ে তোলা অস্তিত্বগত সংকেতে পর্যবেক্ষণমূলক অন্তর্দৃষ্টি বিশ্লেষণ করেন। পাখির অভিবাসনের ওপর তিনি গভীরভাবে আলোকপাত করেন এবং মানচিত্র পাঠ, স্যাটেলাইট চিত্র ও শক্তিশালী শিল্পসম্মত বহিঃপ্রকাশের মতো প্রযুক্তিগত পদ্ধতির মাধ্যমে এই ধারণাকে আরও সমৃদ্ধ করেন। বোঝাপড়ার অব্যক্ত অনুভূতির সাথে কীভাবে আমাদের দেখার ভঙ্গি মিলে যেতে পারে, তার এক অনন্য সুযোগ হিসেবে দর্শনার্থীদের সামনে এই প্রদর্শনীটি এসেছে; যেখানে একটি পাখির খোঁজ, দিকনির্দেশনা ও দূরত্ব অতিক্রম করার সহজাত প্রবৃত্তির বাইরেও আমাদের ধারণা প্রসারিত হয়। মানব অস্তিত্বের অন্তর্নিহিত অর্থ ও শিল্পের মাধ্যমে বিমূর্ত গল্প ফুটিয়ে তুলে আমাদের উপলব্ধির এক গভীর জগতে নিয়ে যাবে এই প্রদর্শনী।
মেসেঞ্জার/তুষার