
ছবি: সংগৃহীত
মাতৃভাষা বাংলার মর্যাদা সমুন্নত রাখতে ভাষা শহীদদের সর্বোচ্চ আত্মত্যাগের স্মরণে শ্রদ্ধা নিবেদন করছে জাতি। শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) সারা বিশ্বে ‘অমর একুশে’, শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত হচ্ছে। ১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর ইউনেস্কো একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।
রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন ও প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে মহান ভাষা আন্দোলনের বীর শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন।
বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) রাত ১১টা ৫৯ মিনিটে রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন শহীদ মিনারে আসেন এবং ঘড়ির কাঁটা ০০:০১ ছুঁতেই পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
প্রধান উপদেষ্টার উপ প্রেসসচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার জানান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়াজ আহমেদ খানসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তারা রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন ও শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
প্রথম প্রহরে ঢাকায় নিযুক্ত বিদেশি কূটনীতিকরাও শহীদ মিনার শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। পুলিশের মহাপরিদর্শক, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী ২১ ফেব্রুয়ারি প্রথম প্রহরে শহীদ মিনারে ভাষা শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এছাড়া বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে।
দিবসটি উপলক্ষে এক বাণীতে ড. ইউনূস বলেছেন, শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে আমি বাংলাসহ বিশ্বের সকল ভাষাভাষীর প্রতি শ্রদ্ধা জানাই। ২০০০ সাল থেকে বাংলাদেশ ও ইউনেস্কো যৌথভাবে দিবসটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করে আসছে। টেকসই উন্নয়নের জন্য ভাষাকে গুরুত্ব দিনন, কারণ এ বছরের ইউনেস্কোর বিষয়বস্তু যৌক্তিক।’
তিনি আরও বলেন, ‘তথ্যপ্রযুক্তিতে বাংলা ভাষার ব্যবহার নিশ্চিত করতেও কাজ করা হচ্ছে। ব্রেইল বইসহ বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর মাতৃভাষায় পাঠ্যপুস্তক বিনামূল্যে বিতরণ করা হচ্ছে।’
ড. ইউনূস বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রবৃদ্ধি ও সমৃদ্ধির জন্য অপরিহার্য জাতি ও ভাষার মর্যাদা রক্ষায় ধারাবাহিকভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
'আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি' গাইতে গাইতে খালি পায়ে হেঁটে ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে সর্বস্তরের মানুষ। বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি আদায়ের জন্য জীবন উৎসর্গকারী ভাষা আন্দোলনের বীরদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন তারা।
১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন পাকিস্তান সরকার বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করতে অস্বীকার করে। উর্দুকে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা করার ঘোষণা দিলে প্রতিবাদে ঢাকার রাজপথে নেমে আসে ছাত্র-জনতা।
১৯৫২ সালের এই দিনে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে মিছিল বের করলে সালাম, বরকত, রফিক, জব্বারসহ বাংলার কয়েকজন বীর সন্তান পুলিশের গুলিতে শহীদ হন।
দিবসটি উপলক্ষে বাংলাদেশ বেতার, বাংলাদেশ টেলিভিশনসহ বিভিন্ন বেসরকারি রেডিও ও টিভি চ্যানেল এ উপলক্ষে বিশেষ অনুষ্ঠানমালা প্রচার করছে। একুশে ফেব্রুয়ারিকে সামনে রেখে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নেওয়া হয়েছে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
মেসেঞ্জার/জেআরটি