ছবি : সংগৃহীত
দীর্ঘদিন ধরে ১৪ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে চাকরি করে আসছিলেন। সম্প্রতি বিষয়টি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নজরে এলে তাদের চাকরিচ্যুতির নির্দেশ দেয় মন্ত্রণালয়। একই সাথে অবৈধভাবে নেয়া বেতন বাবদ ৯৭ লাখ টাকা ফেরত দিতে বলা হয়েছে।
মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ সহকারী সচিব (অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা শাখা) মো. সেলিম শিকদার স্বাক্ষরিত এক আদেশে বিষয়টি জানা যায়।
পিরোজপুর জেলার ১৪ শিক্ষকরা হলো - সদর উপজেলার হুলারহাট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক (কম্পিউটার) নাসিমা আক্তারকে ৭ লাখ ৩৭ হাজার টাকা, রাজারকাঠি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক (শরীর চর্চা) মো. মাসউদ আহসানকে ৫ লাখ ২০ হাজার টাকা, শতদশকাঠি সতীলক্ষ্মী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক (কম্পিউটার) লিটন রায়কে ১৪ লাখ ৪৮ হাজার টাকা, বাবলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক (কম্পিউটার) বিপুল কুমার রায়কে ৩ লাখ ৯৩ হাজার টাকা, সিকদার মল্লিক মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক (কম্পিউটার) শিউলি রানী হালদারকে ৯ লাখ ৬৩ হাজার টাকা, মঠবাড়িয়া উপজেলার ডা. রুস্তম আলী ফরাজি কলেজের প্রভাষক (কম্পিউটার) মাসুমা পারভীনকে ১৩ লাখ ৫৯ হাজার টাকা, ভগীরথপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক (কম্পিউটার) সাজেদা পারভীন তুলিকে ৬ লাখ ৭৪ হাজার টাকা, তুষখালী ইউনিয়ন তোফেল আকন মেম. মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক (কম্পিউটার) মো. মাসুদ রানাকে ৮ লাখ ৬২ হাজার টাকা, ভান্ডারিয়া উপজেলার ধাওয়া রাজপাশা আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক (হিন্দুধর্ম) সীমা রানীকে ৬ লাখ ৫২ হাজার টাকা, নেছারাবাদ উপজেলার সেহাংগল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক (কম্পিউটার) সুচিত্রা কুমার হালদারকে ৩ লাখ ৫৯ হাজার টাকা, নাজিরপুর উপজেলার চাঁদকাঠি আদর্শ বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক (সমাজ বিজ্ঞান) প্রিয়াংকা হালদারকে ১১ লাখ ৪ হাজার টাকা, বৈঠাকাটা কলেজের প্রভাষক (বাংলা) মোছা. কহেতুবকে ১ লাখ ৩৫ হাজার ৭৫০ টাকা, নাওটানা বিএম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক (কৃষি) মনি মন্ডলকে ৫ লাখ ২৫ হাজার টাকা সরকারি কোষাগারে ফেরত দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
আর জাল সনদধারী নন এমপিও শিক্ষক হলেন পশ্চিম সোহাগদল শহীদ স্মৃতি বি এম কলেজের প্রভাষক (ইতিহাস) শরিফা ইয়াসমিন।
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তর (ডিআইএ) যাচাই বাছাই করে সারাদেশে ৬৭৮ জন শিক্ষক কর্মচারীর জাল সনদ শনাক্ত করেন। ওই জাল সনদধারী শিক্ষক কর্মচারীদের তালিকার মধ্যে পিরোজপুর জেলার ১৪ জন শিক্ষকের নাম রয়েছে। জেলার ১৪ জন জাল সনদধারী শিক্ষক শনাক্ত হয়েছেন তাদের মধ্যে ১ জন বাদে সবাই এমপিওভুক্ত। তারা নিয়মিত সরকারি বেতন তুলছেন। জাল সনদে এমপিওভুক্ত ১৩ শিক্ষক বেতন বাবদ সরকারি তহবিল থেকে মোট ৯৭ লাখ ৩৮ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেছেন। এসব জাল সনদধারী শিক্ষকদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে তাদের এমপিও বন্ধ করা এবং অবৈধভাবে এমপিও বাবদ ভোগ করা সরকারি টাকা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে ফেরত নেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
এছাড়া যারা অবসরে গেছেন তাদের অবসরের সুবিধা প্রাপ্তি বাতিল করা ও যারা স্বেচ্ছায় অবসর নিয়েছেন তাদের টাকা অধ্যক্ষ / প্রধান শিক্ষকের মাধ্যমে আদায় করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। জাল সনদধারী শিক্ষকদের বিরুদ্ধে মামলাও করতেও বলা হয়েছে প্রতিষ্ঠান প্রধানদের। জাল সনদধারী শিক্ষক নিয়োগের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিতে অধিদপ্তরকে বলেছে মন্ত্রণালয়। তবে, এ বিষয় নিয়ে অভিযুক্ত ১৪ শিক্ষকের কেউ কথা বলতে রাজি হন নি।
পিরোজপুর জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ ইদ্রিস আলী জানান, জাল সনদধারী শিক্ষকদের বিরুদ্ধে কাগজপত্র পাওয়ার পর মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
টিডিএম/এএম