ঢাকা,  শুক্রবার
২৭ ডিসেম্বর ২০২৪

The Daily Messenger

টিকটকে প্রেম পরে বিয়ে

স্ত্রীর মর্যাদার দাবিতে শরীয়তপুরে কক্সবাজারের তরুণী

জাজিরা প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৫:২৮, ২২ ডিসেম্বর ২০২৩

স্ত্রীর মর্যাদার দাবিতে শরীয়তপুরে কক্সবাজারের তরুণী

ছবি : মেসেঞ্জার

শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার পশ্চিম নাওডোবায় স্ত্রীর মর্যাদার দাবীতে কক্সবাজারের এক তরুণী অনশন করছেন।

বুধবার (২০ ডিসেম্বর) দুপুরে উপজেলার পশ্চিম নাওডোবা ইউনিয়নের আবেদ আলী মুন্সি কান্দি গ্রামের জাহাঙ্গীর ফকিরের ছেলে সজিব ফকিরের (২৮) স্ত্রী দাবী করে অনশন করেন তিনি।

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, ভুক্তভোগী তরুণী এবং জাজিরার সজিব ফকির দুজনেই সৌদী প্রবাসী ছিলেন। ভিডিও শেয়ারিং প্লাটফর্ম টিকটকের মাধ্যমে সজিব ফকিরের সাথে প্রায় আড়াই বছর আগে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে তরুণীর। এক বছর দুইমাস আগে সৌদিতে থাকা অবস্থায় তারা এক হুজুরের মাধ্যমে বিয়ে করেন। এরপর দুজনে একসাথেই ছিলেন সৌদি আরবে।

সৌদিতে থাকা অবস্থায় তাদের মাঝে একাধিকবার শারীরিক সম্পর্ক হয়। এক পর্যায়ে মেয়েটি প্রেগন্যান্ট হলে বন্ধুর মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে ঔষুধ নিয়ে চারমাসের বাচ্চাকে নষ্ট করে ফেলে সজিব ফকির। একপর্যায়ে তারা সিদ্ধান্ত নেয় এভাবে আর থাকা যাবে না তাই আমেনা বেগম গত মাসে বাংলাদেশে এসে ঢাকায় কাজীর মাধ্যমে দুজনে কাবিন করেন।

ভুক্তভোগী তরুণী বলেন, দেশে আসার পর থেকেই সজিব ফকির আমার সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়। আমাদের গোপন মুহুর্তের ছবি ভিডিও বিভিন্ন সোশ্যাল প্লাটফর্মে ভাইরাল করে দেয়। আমাকে প্রতিনিয়ত হুমকি প্রদান করে যে এতদিন আমি তোমাকে শুধু ইউজ করেছি। আমাদের মাঝে সবই ছিলো টাইম পাস।

তরুণী বলেন, আমি কোনো উপায়ন্তর না পেয়ে সজিবের বাড়িতে চলে আসি। এই বাড়িতে আসার পরে সজিবের মা এবং বোনেরা আমাকে ব্যাপক মারধর করে। আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি বাঁচলে স্ত্রীর মর্যাদা নিয়ে এই বাড়িতে বাঁচব আর নয়তো বিষ পান করে আমি আত্মহত্যা করবো।

স্থানীয় সেচ্ছাসেবক লীগ নেতা ঠান্ডু ফকিরদ্যা ডেইলি মেসেঞ্জার’কে  বলেন, সজিব ফকিরের সাথে তার প্রেম এবং বিয়ে নিয়ে সে যা কিছু বলেছে, তা যদি সত্যি হয়ে থাকে তাহলে তাকে আমরা সজিব ফকিরের বউ হিসেবে গ্রহণ করে ঘরে তুলে নিবো।

ইউপি সদস্য জুলফিকার আলীদ্যা ডেইলি মেসেঞ্জার’ কে বলেন, কক্সবাজার থেকে স্ত্রীর দাবীতে আমাদের এলাকায় এক তরুণী এসেছে শুনে আমি ঘটনাস্থলে যাই। মেয়েটি এখানে আসার পর তার কোন কথা না শুনেই সজিবের মা-বোন মিলে তাকে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করার পাশাপাশি বেশ কয়েকবার মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে বলেও অভিযোগ করেছে মেয়েটি।

পশ্চিম নাওডোবা ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ আলমগীর হোসেন ঢালী বলেন, আমি ঘটনাটি শুনে ইউপি সদস্যকে ঘটনাস্থলে পাঠিয়েছি এবং ঘটনা যদি সত্যি হয়ে থাকে তাহলে আমরা আইনগত ভাবে ব্যবস্থা গ্রহন করবো।

বিষয়টি নিয়ে জাজিরা পদ্মাসেতু দক্ষিণ থানার অফিসার ইনচার্জ শেখ শরীফুল আলমদ্যা ডেইলি মেসেঞ্জার’কে বলেন, উক্ত ঘটনা সম্পর্কে আমরা অবগত হয়েছি। যদি মেয়েটি থানায় অভিযোগ করে তাহলে আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা নিব। আপাতত মেয়েটির সেফটি এবং আত্মহত্যা করবে এমন কথা বলায় আমরা সেটা আমলে নিয়ে আইনগতভাবে তাকে কোর্টে প্রেরণ করেছি। মাননীয় কোর্ট যেই আদেশ দিবেন আমরা সেভাবেই ব্যবস্থা গ্রহন করবো।

জাজিরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাদিয়া ইসলাম লুনা বলেন, তরুণীর অনশনের বিষয়টি পুলিশ কেইস। আমি স্থানীয় চেয়ারম্যানের সাথে কথা বলে লোক পাঠিয়েছি এবং বিষয়টি দ্রুত সমাধানের নির্দেশ দিয়েছি।

মেসেঞ্জার/ইমরান/আপেল