ঢাকা,  বৃহস্পতিবার
২৬ ডিসেম্বর ২০২৪

The Daily Messenger

শিক্ষার্থীকে গুলি করা শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা, পিস্তলটি অবৈধ

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১০:৩২, ৫ মার্চ ২০২৪

শিক্ষার্থীকে গুলি করা শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা, পিস্তলটি অবৈধ

ছবি : মেসেঞ্জার

সিরাজগঞ্জের শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীকে গুলি করার ঘটনায় সেই অভিযুক্ত  ডা. রায়হান শরীফের বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টার মামলা দায়ের হয়েছে। এছাড়া উদ্ধার হওয়া পিস্তলটি অবৈধ বলে জানিয়েছে পুলিশ। 

মঙ্গলবার ( ৫ মার্চ) সকালে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সিরাজুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত বলেন, সোমবার রাতে ডা. রায়হান শরীরকে আটক করে মেডিকেল কলেজ থেকে থানায় আনে পুলিশ। তার বিরুদ্ধে অবৈধ অস্ত্র রাখার দায়ে অস্ত্র আইনে আরেকটি মামলা হবে বলে তিনি জানান। 

এরআগে, সোমবার (৪ মার্চ) রাত সাড়ে ১২ টার দিকে ভুক্তভোগীর বাবা মো. আব্দুল্লাহ আল আমিন বাদী হয়ে সদর থানায় মামলাটি দায়ের করেছে।

মামলায় বাদী উল্লেখ করেন, আমার ছেলে আরাফাত আমিন তমাল (২২), শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ, সিরাজগঞ্জ'এ ২০২১-২০২২ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি হইয়া বর্তমানে ৩য় বর্ষে অধ্যায়নরত আছে। অন্য ৩য় বর্ষের আইটেম পরীক্ষা শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ এর একাডেমী ভবনের ৪র্থ তলায় ডা. সামাউন নূর এর কক্ষে অনুষ্ঠিত হচ্ছিল। 

এসময়, ছেলের বন্ধু আক্তারুজ্জামান বিকালে ফোন করে জানায়,  আপনি দ্রুত সিরাজগঞ্জ চলে আসেন। আপনার ছেলে আরাফাত আমিন তমাল হাসপাতালে ভর্তি আছে। আমি তাৎক্ষনিক ভাবে বগুড়া থেকে সিরাজগঞ্জ আসি। দেখি আমার ছেলে হাসপাতালের সার্জারী বিভাগে সংকটাপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। ঘটনার বিষয়ে জানতে ছেলের সহপাঠীরা জানায়, উপরোক্ত আসামী কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগের লেকচারার। তিনি সর্বদাই শিক্ষকদের সাথে খারাপ আচরণ করেন। তিনি সব সময় ব্যাগে অস্ত্র ও ছোরা নিয়ে ক্লাসে এসে অস্ত্র টেবিলের উপর রেখে ক্লাসে লেকচার দেয়। 

ছাত্র-ছাত্রীরা আগ্নেঅস্ত্র নিয়ে ক্লাসে না আসতে বললে তিনি তাদেরকে ভয়ভীতি ও গুলি করে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। আজ পরীক্ষা চলাকালিন সময়ে উপরোক্ত আসামী হঠাৎ উত্তেজিত হয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের অহেতুক বকাবকি করেন। বকাবকির এক পর্যায়ে তার ব্যাগ থেকে একটি পিস্তল বের করে আমার ছেলেকে হত্যা করার উদ্দেশ্যে গুলি করলে উক্ত গুলিটি আমার ছেলের ডান পায়ের উরুর উপরের অংশ লেগে গুরুতর রক্তাক্ত জখম করে। 

তিনি মামিলায় আরও উল্লেখ করেন, আমার ছেলের চিকিৎসারে জরুরী বিভাগে নিয়ে যেতে চাইলে উপরোক্ত আসামী অস্ত্র উঁচু করে সবাইকে ভয় দেখিয়ে বলে যে, তোরা যদি ওকে চিকিৎসার জন্য জরুরী বিভাগে নিয়ে যাস তাহলে তোদের সবাইকে গুলি করে মেরে ফেলব। তাৎক্ষনিকভাবে পরীক্ষা চলাকালিন সময়ে আমার ছেলের বন্ধুরা জাতীয় জরুরী সেবা ৯৯৯ ফোন দিলে সিরাজগঞ্জ থানার পুলিশ, ডিবি ঘটনাস্থলে এসে উপরোক্ত আসামীকে ও অম্লসন্ত্র সহ থানায় নিয়ে যায়।

সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর বাবা বাদী হয়ে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন। আসামিকে এই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। উদ্ধার হওয়া আগ্নেয়াস্ত্রটি অবৈধ। ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে এই মামলা ছাড়াও অস্ত্র আইনে আরেকটি মামলা দায়ের হবে। 

তিনি আরও জানান, এঘটনায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। কমিটিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন ) অধ্যাপক ডা. বায়জীদ খুরশীদ রিয়াজকে আহ্বায়ক করা হয়েছে। তদন্ত কমিটি আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে বিস্তারিত তদন্তপূর্বক দাখিল করবে। 

প্রসঙ্গত, সোমবার (৪ মার্চ) বিকেলে সিরাজগঞ্জের শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী আরাফাত আমিন তমালকে গুলি করেন কলেজের শিক্ষক ডা. রায়হান শরীফ। এ ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষকের বিচার চেয়ে বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থীরা। এরপর সন্ধ্যায় তাকে আটক করে থানায় নেয় পুলিশ। এসময় তার কাছ থেকে একটি পিস্তল উদ্ধার করা হয়। অভিযুক্ত ডা. রায়হান শরীফ কলেজের কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগের শিক্ষক। 

মেসেঞ্জার/ফারদিন