ছবি : সংগৃহীত
নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার টেপাখড়িবাড়ী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যদের বিরুদ্ধে ভিজিএফের চাল বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। তাঁরা দুস্থদের মধ্যে ভিজিএফ কার্ডের মাস্টার রোল তৈরি না করে নিজেদের তৈরি মনগড়া কাগজে নাম লিখে চাল বিতরণ করছিলেন। শেষ পর্যায়ে কার্ডধারীদের ২৫০ টাকা করে দিয়ে বিদায় দিয়েছেন চেয়ারম্যান।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, গরীব অসহায় ও দুস্থদের কার্ড চেয়ারম্যানের ভাই, নিজস্ব বাহিনীসহ এলাকার প্রভাবশালীদের হাতে হাতে ভিজিএফের কার্ড। ফলে বঞ্চিত হচ্ছে প্রকৃতপক্ষ গরিব অসহায় ও দুস্থ পরিবার।
অনিয়মের ঘটনাকে কেন্দ্র করে কয়েক দফা আন্দোলন এবং বিতরণ বন্ধ করে দেয় স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। অপরদিকে চাল বিতরণ কেন্দ্র করে ইউনিয়ন পরিষদের সিসিটিভি বন্ধ করে রাখেন অভিযুক্ত ওই চেয়ারম্যান। বিকলে পাঁচটার দিকে ইউনিয়নরে ১,২,৪,৫ নম্বর ওয়ার্ডে একাধিক কার্ডধারী চাল না পেয়ে খালি হাতে ফিরে যেতে দেখা যায়।
উপজেলা পিআইও অফিস সুত্রে জানা গেছে, পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে সরকারিভাবে টেপাখড়িবাড়ি ইউনিয়নে দুই হাজার ৬০০টি দুস্থ গোষ্ঠীর সহায়তা কর্মসূচির (ভিজিএফ) কার্ডের বিপরীতে ২ দশমিক ৬০ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। কার্ড প্রতি করে চাল বরাদ্দ রয়েছে। আজ বুধবার সকাল নয়টায় এই বিতরণ শুরু হয়।
টেপাখড়িবাড়ী ইউনিয়নের গাইডবাঁধ পাড়া নিবাসী রাবিয়া বেগম বলেন, আমার স্বামী অসুস্থ হয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিছানায় পরে আছেন। আমার বাড়ির তিনটা আইডি কার্ড নিয়েছে। আমাকে একটা কার্ডও দেয়নি। পাশের বাড়িতে ২টা কার্ড দিয়েছে। তার তো ৫-৬ বিঘা জমি রয়েছে। তারা যদি পায় আমি পাব না কেন?
একই ওয়ার্ডের ষাটোর্ধ বষয়ী এক নারী জানান, আমি বিধবা মানুষ কাজ কাম করতে পারিনা। আমাকে কেমন একটা কার্ড না দেয় চেয়ারম্যান মেম্বার। তাহলে কে কার্ড পাবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক টেপাখড়িবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদ বাজার এলাকা একব্যক্তি জানান, শেষের দিকে চর খড়িবাড়ীর মানুষ কার্ডে মাল না পেয়ে ফেরত যায়। পরে ডেকে এনে ১০০-১৫০ টাকা করে প্রদান করেন চেয়ারম্যান।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ইউপি সদস্য বলেন, বেশকিছু কার্ড ছিল কিন্তু চাল শেষ হওয়ায় আমরা চাল দিতে পারিনি। তাই ২৫০ টাকা করে দিয়েছি।
ঘটনার সত্যতা জানতে টেপাখড়িবাড়ী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম সাহিনকে মুঠোফোনে বলেন, আমি একটা মিটিং এ আছি একটু পরে ফোন দিচ্ছি। এর ৩০ মিনিট একাধিকবার ফোনে দিলে ফোন রিসিভ করেননি তিনি।
এ বিষয়ে ডিমলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে ছালমা জানান, আমি ফোন দিয়ে বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে বিস্তারিত জানাচ্ছি।
নীলফামারী জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ও স্থানীয় সরকারের উপ-পরিচালক সাইদুল ইসলাম জানান, চালের বিনিময়ে টাকা দিতেন কেন? টাকা দেওয়ার কোনো বিধান নেই। প্রয়োজনে পরবর্তীতে চাল সংগ্রহ করে দিবেন। আর কার্ড যত চালও ততগুলো দেওয়া হয়। বিষয়টি জেনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
মেসেঞ্জার/আপেল