ছবি : মেসেঞ্জার
কোনটি দেখতে অবিকল আপেল। আবার কোনটি দেখতে পদ্মার ভাজা ইলিশের ডিমওয়ালা পেটির মত। তবে এসবগুলোই ড্রাই মিষ্টি। নিজ খামারের দুধ দিয়ে এইরকম ১৫ ধরনের বাহারি মিষ্টি তৈরি করে মাসে পঞ্চাশ লাখ টাকার মিষ্টি বিক্রি করেন গিয়াস উদ্দিন।
নিজ খামারের গাভি থেকে দুধ দুইয়ে ভ্যানগাড়ীতে করে নেওয়া হয় কারখানায়। সেখানে পৌছানোর পর ড্রাম থেকে দুধ বড় কড়াইয়ে ঢালা হয়। এরপর সেই দুধ দীর্ঘ সময় জালিয়ে ঘন ক্ষীরে পরিণত করা হয়।
সেই ক্ষীর কড়াই থেকে পাত্রে ঢেলে নাড়তে নাড়তে শক্ত হয়ে আসলে কারিগরের হাতের কর্মযজ্ঞে তৈরি হয় ইলিশ পেটি, আপেল মিষ্টি, ক্ষীর কাটারী, ক্ষীর কদম, কাটারী ভোগ, প্যারা সন্দেশ, কেক সন্দেস, থ্রী সন্দেস, কালার কেক, ছানার মোরাব্বা, বনফুল, ল্যাংচা, মালাইচপ, স্পেশাল চমচম, রসমালাই, ক্রীম জাম, ইরানী ভোগ সহ ১৫ পদের মিষ্টি।
এর মধ্যে ক্রেতাদের চাহিদার শীর্ষে ইলিশ পেটি, আপেল মিষ্টি ও ক্ষীর কাটারি। সবগুলো মিষ্টির দুই পিচ করে কম্বো প্যাকেজ আকারেও বিক্রি হয় এই দোকানের মিষ্টি।
এই মজাদার মিষ্টি তৈরিতে প্রথমে নেওয়া হয় দুধ। সেই দুধ জালিয়ে ঘন ক্ষীরসায় পরিণত করা হয়। এরপর সেই ক্ষীরসা কড়াই থেকে পাত্রে ঢেলে পরিমাণ মত ঘি ও চিনি দিয়ে নেড়ে শক্ত করে কারিগরের হাতের চাপে দেওয়া হয় ইলিশের পেটির আকার।
এরপর সুতোর চাপে পিচ পিচ করে কেটে তৈরি করা হয় ইলিশ পেটি। স্বাদে ভিন্নতা থাকায় খুব অল্প সময়েই জনপ্রিয়তা পেয়েছে বিশেষ আকারের এ মিষ্টি। আর এই মিষ্টি খেতে প্রতিদিন দুরদুরান্ত থেকে ছুটে আসছে ভোজন রসিকরা।
গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার হোগলাকান্দি গ্রামের বাসিন্দা গিয়াস উদ্দিন। ব্যাংকের চাকরি ছেড়ে এসে শুরু করেন গরুর খামার। তিন বছর আগে নিজের খামারের দুধ দিয়ে শুরু করেন মিষ্টান্ন তৈরি। নিজ এলাকার বাজরে খুলেন অগ্র সুইটস ভিলেজ নামে একটি প্রতিষ্ঠান। সম্প্রতি সেই প্রতিষ্ঠানে ভিন্ন আকারের এই ধরনের মিষ্টি তৈরি করে এলাকায় সাড়া ফেলেছেন গিয়াস উদ্দিন।
অন্যন্য মিষ্টির তুলনায় এই মিষ্টিগুলো সংরক্ষণ করে রাখা যায় বেশিদিন। অন্য মিষ্টির তুলনায় এই ইলিশ পেটি মিষ্টির সৌন্দর্য ও স্বাদে ভিন্নতা থাকায় প্রতিদিনই বাড়ছে এ মিষ্টির চাহিদা। দিনে প্রায় মণ খানেক ইলিশ পেটি মিষ্টি তৈরি করে এই দোকানে।
এলাকার যেকোনো উৎসব, অনুষ্ঠান কিংবা অতিথি আপ্যায়নে প্রধান অনুষঙ্গ এই ইলিশ পেটি মিষ্টি। তবে বর্তমানে অনলাইনের সুবাদে জেলার গন্ডি পেরিয়ে এ মিষ্টি পৌঁছে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন স্থানে। শুধুমাত্র অনলাইনে প্রতিদিন বিক্রি হচ্ছে লাখ টাকার মিষ্টি। অনলাইন ও দোকান মিলিয়ে প্রতিদিন বিক্রি হয় দেড় লাখ থেকে একলাখ আশি হাজার টাকার মিষ্টি।
অগ্র সুইটস ভিলেজের সত্বাধিকারী গিয়াস উদ্দিন জানান, এই মিষ্টির স্বাদ ও মিষ্টির গুনগত মান ভালো হওয়ায় জেলার চাহিদা মিটিয়ে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন স্থানে। আগামীতে দেশ ছাড়িয়ে বিদেশেও রপ্তানি করার ইচ্ছা রয়েছে বলে জানান গিয়াস উদ্দিন।
মেসেঞ্জার/অভি/আপেল