ঢাকা,  রোববার
০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪

The Daily Messenger

জমে উঠেছে দেশের সবচেয়ে বড় লিচুর বাজার, সরবরাহ কম থাকায় দাম বেশি

কুরবান আলী, দিনাজপুর

প্রকাশিত: ১৮:৩০, ৬ জুন ২০২৪

জমে উঠেছে দেশের সবচেয়ে বড় লিচুর বাজার, সরবরাহ কম থাকায় দাম বেশি

ছবি : মেসেঞ্জার

লিচুর জেলা হিসেবে পরিচিত দিনাজপুরে জমে উঠেছে দেশের সবচেয়ে বড় লিচুর বাজার। এরই মধ্যে বাজারে এসেছে মাদ্রাজি, বেদানা, বোম্বাই চায়না-থ্রি জাতের লিচু। শুরুতে ভালো দাম পেয়ে খুশি চাষীরা। তবে ক্রেতাদের মাঝে দেখা দিয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। চলতি বছর জেলায় থেকে ৫’শ কোটি টাকার লিচু বিক্রির আশা সংশ্লিষ্টদের।

ইতিমধ্যে দিনাজপুর সুস্বাদু লিচুর জন্যও বেশ খ্যাতি অর্জন করেছে। বোম্বাই, মাদ্রাজি, চায়না-থ্রি, বেদেনা, কাঠালিসহ বিভিন্ন জাতের সুস্বাদু লিচুর সুনাম দেশের গন্ডি পেরিয়ে বিদেশে ছড়িয়ে পড়েছে। এর মধ্যে শহরের কালিতলা এলাকায় দেশের সবচেয়ে বড় লিচুর বাজার জমে উঠেছে।

ভোর থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত সরব থাকছে এই বাজার। প্রতিটি দোকানে সবুজ পাতা বিছিয়ে তার ওপর লিচু সাজিয়ে রাখা হয়েছে। ক্রেতাদের আকৃষ্ট করতে হাঁকডাক দিচ্ছেন বিক্রেতারা। তীব্র দাবদাহ ঝড়ের কারণে লিচুর ক্ষতি হওয়ায় বাজারে সরবরাহ কম। সে কারণে গত বছরের তুলনায় এ বছর লিচুর দাম বেড়েছে।

বাজার সূত্রে জানা গেছে, গত বছর মাদ্রাজি লিচু ১৬০০ থেকে ২২০০ টাকা প্রতি হাজার বিক্রি হলেও এবছর ৩০০০ থেকে ৩৫০০ টাকা, বোম্বাই লিচু ২০০০ থেকে হাজার ৪০০ টাকা প্রতি হাজার লিচু বিক্রি হলেও চলতি বছর ৩০০০ থেকে ৩৮০০ টাকা, বেদেনা লিচু গত বছর ৫৫০০ থেকে ৬৫০০ টাকা বিক্রি হলেও চলতি বছর ৭৫০০ থেকে ৯৫০০ টাকা, চায়না থ্রি জাতের লিচু প্রতি হাজারে গত বছর ৬০০০ থেকে ৭৫০০ টাকা বিক্রি হলেও চলতি বছর ৮০০০ থেকে ১১০০০ টাকা এবং কাঠালি জাতের লিচু গত বছর প্রতি হাজারে ৬৫০০ থেকে ৮৫০০ টাকা বিক্রি হলেও চলতি বছর ৯০০০ থেকে ১১০০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

গত বছর লিচুর দাম কম থাকায় ক্ষতির সম্মুখিন হয়েছিল লিচু চাষীরা। তবে এ বছর ফলন কম হলেও দাম বেশি হওয়ায় খুশি তারা। লিচু চাষী আকবর আলী বলেন, গত বছর লিচুর ফলন ভালো হয়েছিল। কিন্তু বাজারে দাম পাওয়া যায়নি। ফলে গত বছর আমাদের ক্ষতি হয়েছে।

চলতি বছর প্রথম দিকে দাবদাহের কারণে লিচুর মুকুল ঝড়ে গেছে, পরে আবার ঝড়ের কারণে লিচুর ক্ষতি হয়েছে। কিন্তু বাজারে লিচুর দাম ভালো পাওয়া যাচ্ছে। এই কারণে ফলন কম হলেও দাম বেশি থাকায় লাভবান হয়েছি।

চাহিদার তুলনায় বাজারে লিচু সরবরাহ কম হওয়ায় দাম বেশি বলে জানান ব্যবসায়ীরা। লিচু ব্যবসায়ি মেহেরুল ইসলাম আঙ্গুর বলেন, এবছর লিচুর ফলন কম হয়েছে। কারণে বাজারে লিচুর চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম। এজন্য বাজারে লিচুর দাম বেশি। আর বেশি দিন বাজারে লিচু পাওয়া যাবে না।

লিচুর দাম বেশি হওয়ায় ক্রেতাদের মাঝে দেখা দিয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। কমদামের আশায় দোকানে দোকানে ঘুরছেন ক্রেতারা।

লিচু ক্রেতা শামসুল ইসলাম বলেন, গত বছর ঢাকায় কম দামে লিচু পেয়েছি। কিন্তু এবছর তো বাজারে লিচুতে হাত দেয়া যায় না। মাদ্রাজি জাতের লিচু তো বাজারে খোঁজ করেও পাওয়া যাচ্ছে না। এখন দোকানে দোকানে ঘুরতেছি, যে দোকানে কম দামে পাব সেখান থেকে লিচু কিনবো। আত্মীয়-স্বজনদের লিচু পাঠাতে হয়, উপায়ও নাই।

দিনাজপুর হর্টিকালচার সেন্টারের উপ-পরিচালক . এজামুল হক বলেন, চলতি বছর জেলায় হাজার হেক্টর জমি থেকে প্রায় ৪০ হাজার মেট্রিক টন লিচুর ফলন হয়। তবে দাবদাহের কারণে কিছু লিচু ফেটে গেছিল। পাশাপাশি ঝড়ের কারণে কিছু লিচুর ক্ষতি হয়েছে। এই কারণে বাজারে লিচু সরবরাহ কম হয়েছে।

দিনাজপুরের প্রতিদিন ১৫ থেকে ২০ কোটি টাকার লিচু কেনা-বেচা হয় এই বাজারে। চলতি বছর জেলায় থেকে ৫‘শ কোটি টাকার লিচু বিক্রি হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

মেসেঞ্জার/আপেল

×
Nagad