ঢাকা,  রোববার
০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪

The Daily Messenger

সাত দিনের সন্তানকে ১০ তলা থেকে ফেলে দেন তৃষা

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ০৮:১৬, ১৯ জুন ২০২৪

সাত দিনের সন্তানকে ১০ তলা থেকে ফেলে দেন তৃষা

ছবি: মেসেঞ্জার

কিশোরগঞ্জের ভৈরবে নিজের সাতদিনের নবজাতককে দশ তলা বিল্ডিং এর উপর থেকে নীচে ফেলে হত্যা করেছেন তৃষা আক্তার (২৪) নামে এক নারী।

মঙ্গলবার (১৮ জুন) সারাদিন জিজ্ঞাসাবাদের পর সন্ধ্যায় ভৈরব থানা পুলিশ এবং তার স্বামীর কাছে প্রাথমিকভাবে স্বীকার করেছেন ওই নারী।

নিহত সাতদিন বয়সী নবজাতক শিশুটির নাম তাসনিদ উসমান। তার বাবা ডা. উসমান গণি। তিনি ভৈরবের একটি বেসরকারী হাসপাতালের মালিক ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক।

মঙ্গলবার শহরের কমলপুর নিউ টাউন ফুল মিয়া সিটি এলাকায় একটি দশ তলা ভবনের পাশের একটি ঝোপ থেকে শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

পরে, বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নবজাতকের বাবা ওসমান গণি, মা তৃষা, তৃষার বান্ধবী সুমাইয়া এবং দুই কাজের মেয়ে শিলা মিমকে আটক করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।

তৃষা আক্তার প্রাথমিকভাবে নবজাতককে বিল্ডিং এর উপর থেকে ফেলে দেওয়ার কথা স্বীকার করার পর তার স্বামী ডা. উসমান গণি বাদি হয়ে তৃষাকে একমাত্র আসামী করে ভৈরব থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় তৃষা আক্তারকে বুধবার (১৯ জুন) আদালতে প্রেরন করা হবে। আদালতে তৃষা আক্তার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিবেন বলে পুলিশকে জানিয়েছেন।

ভৈবর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সফিকুল ইসলাম জানান, "ঈদের দিন শেষে রাতে নবজাতককে নিয়ে নিজের রুমে ঘুমিয়ে ছিলেন মা তৃষা আক্তার। তার স্বামী ডা. উসমান গণি ঘুমিয়ে ছিলেন আরেক রুমে। ঘরে শিলা মিম নামের দুই গৃহপরিচারিকা এবং তৃষার বান্ধবী সুমাইয়া ছিলেন। রাত পৌনে ৪টার দিকে হটাৎ তৃষার চিৎকারে প্রতিবেশীরাসহ বাসার সবাই জেগে ওঠেন। তিনি জানান, তার বাচ্চাটি পাওয়া যাচ্ছে না। পরে সবাই খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। পরে, সকাল নয়টার দিকে গৃহপরিচারিকার মাধ্যমে জানতে পারেন শিশুটি বাড়ির পাশে একটি ঝোপে মৃত অবস্থায় পড়ে আছে। পরে পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ এসে মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। এসময় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুই গৃহপরিচারিকা, নবজাতকের মা, তার বন্ধবী বাবা ডা. উসমান গণিকে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে মা তৃষা আক্তারকে আটক করে বাকিদের ছেড়ে দেওয়া হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তৃষা নিজেই তার নবজাতক শিশুটিকে ভবন থেকে ফেলে দিয়ে হত্যা করেছেন বলে পুলিশ তার স্বামীর কাছে স্বীকার করেন।"

ওসি আরও জানান, "নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে তৃষা আক্তার নয়তলার বেলকনির জানালা দিয়ে নিজের শিশুকে ছুড়ে ফেলে হত্যা করেন। প্রাথমিক স্বীকারোক্তিকে এমন কথা বলেছেন তৃষা।"

ওসি বলেন, নিহত শিশুটির মাথায় শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ কিশোরগঞ্জ মর্গে পাঠানো হয়েছে।

স্বজনরা জানান, ডা. উসমান গণির দ্বিতীয় স্ত্রী তৃষা আক্তার। তিনি কুলিয়ারচর উপজেলা নোয়াগাঁও এলাকার এনায়েত উল্লাহর মেয়ে। তাদের পরিবারে বোরাক নামের দেড় বছরের একটি ছেলেসন্তান রয়েছে। সাতদিন আগে ডা. উসমান গণির মাধ্যমে সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে নবজাতকটির জন্ম হয়।

বাসায় থাকা তৃষার বান্ধবী সুমাইয়া বলেন, তৃষার বাবা-মা পরিবারের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ ছিল না। তাই বেশিরভাগ সময় ডিপ্রেশনে থাকতেন তৃষা আক্তার।

মেসেঞ্জার/সাজু /ফামিমা

×
Nagad