ঢাকা,  রোববার
০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪

The Daily Messenger

হবিগঞ্জে খোয়াই নদের কমলেও পানি বাড়ছে কালনী-কুশিয়ারায়

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২২:০১, ১৯ জুন ২০২৪

হবিগঞ্জে খোয়াই নদের কমলেও পানি বাড়ছে কালনী-কুশিয়ারায়

ছবি : মেসেঞ্জার

হবিগঞ্জের খোয়াই নদের বাঁধের পৃথক দুই স্থান দিয়ে তীব্র বেগে পানি নামছে নিম্নাঞ্চলে। ফলে খোয়াই নদের পানি কমতে শুরু করেছে। বুধবার (১৯ জুন) সন্ধ্যা ৭টার শেষ খবরে পাউবো খোয়াই নদীর পানি কমার তথ্য জানিয়েছে। তবে জেলার অপর প্রধান নদী কালনী-কুশিয়ারা নদীতে পানি বাড়ছে। বর্তমানে আজমিরীগঞ্জ পয়েন্টে কালনী-কুশিয়ারা বিপৎসীমার ৪৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

পাউবো জানায়- শহরের মাছুলিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ৫৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এর আগে ৩টায় দেয়া তথ্যমতে এই পয়েন্টে বিপৎসীমার ৮৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। একইসাথে বাল্লা পয়েন্টে বর্তমানে বিপৎসীমার ৫০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এর আগে বিপৎসীমার ৯০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। 

মঙ্গলবার (১৮ জুন) ভোর থেকে হওয়ায় টানা বৃষ্টিপাত ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে হবিগঞ্জের খোয়াইসহ সকল নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পায়। খোয়াই নদের সকল পয়েন্টে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় হবিগঞ্জ শহরসহ বিভিন্ন এলাকার লোকজন বাঁধ ভাঙার আতংকে পড়েন।

বুধবার (১৯ জুন) বেলা ১টার হবিগঞ্জ সদর উপজেলার রিচি ইউনিয়নের জালালাবাদ গ্রামের দিকে একটি অস্থায়ী বাঁধ ভেঙে পড়ে নিম্নাঞ্চলে পানি নামতে থাকে। এছাড়াও সদর উপজেলার লোকড়া ইউনিয়নের কাশীপুর-দৌলতপুর এলাকায় খোয়াই নদের আরেকটি বাঁধ দিয়ে বিপুল পরিমাণ পানি নিম্নাঞ্চলে প্রবেশ করতে থাকে। এতে খোয়াই নদীর পানি কমতে শুরু করে। 

রিচি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রহিম জানান- এই দুটি বাঁধ দিয়ে তীব্র বেগে পানি প্রবেশ করে রিচি ইউনিয়নের সবকটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে আউশ ধানের বীজতলা ও মৎস্য খামারের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। 

ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রহিম বলেন- (২৮ মে) থেকে জালালাবাদ ও দৌলতপুরের বাঁধ দিয়ে নদীর পানি ঢুকছিল। বিষয়টি নিয়ে পানি উন্নয়নে বোর্ডের কাছে বাঁধ নির্মাণের জন্য আবেদন করি। তবে শহরের দিকে খোয়াই নদের বাঁধ ভাঙলে ব্যাপক ক্ষতি হবে এবং এইমূহুর্তে টেকসই হবে না বলেই হয়ত পাউবো সংস্কার কাজ করেনি।

পানি উন্নয়ন বোর্ড হবিগঞ্জ কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী শামীম হাসনাইন মাহমুদ বলেন- টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পানির তোড়ে জেলার সবকটি নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। শহরের পাশ দিয়ে বয়ে চলা খোয়াই নদের পানিও বেড়েছে। তবে বিকেলের দিকে পানি কমতে শুরু করেছে। জালালাবাদ এলাকায় একটি অস্থায়ী বাঁধ রয়েছে। সেটি ভেঙে হাওরের দিকে খোয়াই নদের পানি ছড়িয়ে যাচ্ছে। ফলে শহরবাসীকে আতংকিত হওয়ার মত অবস্থা তৈরি হয়নি। 

বুধবার (১৯ জুন) সন্ধ্যা ৬টায় হবিগঞ্জের সর্বশেষ নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি ও বৃষ্টিপাতের পরিমাণ নিয়ে পাউবো জানায়- খোয়াই নদের চুনারুঘাট বাল্লা পয়েন্টে বিপৎসীমার ৫০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। যা বেলা ৩টায় বিপৎসীমার ৯০ সেন্টিমিটার দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। শায়েস্তাগঞ্জ পয়েন্টে বিপৎসীমার ৫২ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

এর আগে এই পয়েন্টে বিপৎসীমার ৯ সেন্টিমিটারের নিচে ছিল। হবিগঞ্জ শহরের মাছুলিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ৫৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বেলা ৩টায় এই পয়েন্টে ৮৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। 

খোয়াই নদের পানি কমলেও কুশিয়ারা নদী শেরপুর পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ২১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বেলা ৩টায় বিপৎসীমার ২০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। এই নদীর বানিয়াচং উপজেলার মার্কুুলি পয়েন্টে ৩২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

এর আগে বিপৎসীমার ৩০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। কালনী-কুশিয়ারা নদীর সন্ধ্যায় ৬টায় আজমিরীগঞ্জ পয়েন্টে বিপৎসীমার ৪৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। যা বেলা ৩টায় বিপৎসীমার ৪০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।

মেসেঞ্জার/পাবেল/তারেক

×
Nagad