ঢাকা,  শুক্রবার
১৮ অক্টোবর ২০২৪

The Daily Messenger

মসজিদের ইমামের উপর নির্যাতনের প্রতিবাদে বিক্ষোভ

নীলফামারী প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১১:৪২, ২২ জুন ২০২৪

মসজিদের ইমামের উপর নির্যাতনের প্রতিবাদে বিক্ষোভ

ছবি : মেসেঞ্জার

নীলফামারীর সৈয়দপুরে মসজিদের ইমাম ও খতিব মাওলানা সাখাওয়াত হোসেনের উপর নৃশংস প্রাণঘাতী নির্যাতনের ঘটনায় বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শুক্রবার (২১ জুন) বাদ মাগরিব উপজেলার কাশিরাম বেলপুকুর ইউনিয়নের হাজারীহাট বাজারে এর আয়োজন করা হয়। হাজারীহাট জামে মসজিদের কমিটি ও মুসল্লীদের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত এই কর্মসূচীতে কাশিরাম বেলপুকুর ও খাতামধুপুর ইউনিয়নের হাজার হাজার মানুষ অংশ গ্রহণ করে।

মসজিদ থেকে মিছিল বের হয়ে বাজারের প্রতিটি সড়ক প্রদক্ষিণ করে এবং প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে বক্তব্য রাখেন, মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও হাজারীহাট স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ লুৎফর রহমান চৌধুরী, জাতীয় পার্টির নেতা ফেরাজ উদ্দিন। সভাপতিত্ব করেন মুজাহিদ কমিটির সভাপতি আব্দুল মান্নান।

বক্তারা বলেন, হাজারীহাট বাজারের জামে মসজিদের ইমাম ও খতিব হিসেবে দীর্ঘ ৪৬ বছর ধরে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন মাওলানা সাখাওয়াত হোসেন। এর আগে তাঁর দাদা মসজিদ প্রতিষ্ঠা কালীন ১৯০৯ সাল থেকে এবং পরে বাবা একইভাবে ইমামতি ও খতিবগীরী করেছেন। বাবা দাদার স্মৃতি ও ঐতিহ্য রক্ষায় এই দুর্মূল্যের দিনেও মাত্র সাড়ে ৪ হাজার টাকায় মাওলানা সাখাওয়াত হোসেন খেদমত করে চলেছেন। আমাদের প্রতি তাঁর অগাধ ভালবাসার কারণেই এই বয়সেও এতটা ত্যাগ।

এমন একজন বয়স্ক, বুজুর্গ ও আল্লাহ ভীরু মানুষের উপর চরম নৃশংস নির্যাতন চালিয়েছে তার প্রতিবেশী ও ভাতিজা দুলাল হোসেন (আর্মি দুলাল)। লাঠি সোটা নিয়ে অতর্কিত হামলা করে রাস্তায় ফেলে ইমাম সাহেব কে সাপ মারার মত করে বেদম মারপিট করেছে ওই নরপশু। আঘাতের কারণে তাঁর সারা শরীর কালো হয়ে গেছে। পায়ের চামড়া কেটে যাওয়ায় সেলাই দিতে হয়েছে। হাড় ভেঙে গেছে। এমনকি পাষন্ড দুলাল ইমামের গালে জুতা দিয়ে অবিরাম আঘাত করেছে। এখন তিনি রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যু শয্যায় কাতরাচ্ছেন।

এই ধরনের অমানুষ কে আর কোন ভাবেই ছাড় দেয়া যাবেনা। ইতোপূর্বেও সে এমন ন্যাক্কারজনক অপকর্ম করেছে। নিজে মেরে সংবাদ সম্মেলন করে মিথ্যে অপবাদ দিয়েছে। ইমামের ছেলে থাই জুয়ার (লটারী) সাথে জড়িত অভিযোগে একঘরে করে সমাজচ্যুত করার অপচেষ্টা চালিয়েছে। এমনকি নারীর শ্লীলতাহানির মামলা দিয়ে মসজিদ থেকে তাড়ানোর পায়তারাও করেছিল। নানা ভাবে হয়রানী করেও প্রশাসনের কাছে মিথ্যে ধরা পড়ায় হেরে গেছে। তারপরও তার অপতৎপরতা থামে নাই। প্রতিবারই অর্থের জোরে সে পার পেয়েছে।

কিন্তু এবার আর নয়। ওই বেইমান, অমানুষের জঘন্য কর্মকাণ্ড এখানেই শেষ করতে হবে। প্রশাসন যদি অপারগ হয় তাহলে হাজারীহাটের আপামর জনগণকে সাথে নিয়ে এলাকাবাসীই এর শায়েস্তা করবে ইনশাআল্লাহ। কারণ দুলাল আর্মি শুধু ইমাম সাহেব কে অপমান ও অত্যাচার করেনি। বরং প্রতিটি ধর্মপ্রাণ মুসলমানের উপর অমানবিক আক্রমণ করেছে। এর বিচার হতেই হবে। মিছিল ও সমাবেশ থেকে অনতিবিলম্বে দুলালসহ তার পরিবার নির্যাতনকারী অন্যদের গ্রেফতারের দাবি জানানো হয় প্রশাসনের প্রতি।

উল্লেখ্য, ইমাম মাওলানা সাখাওয়াত হোসেনের সাথে জমি নিয়ে দীর্ঘদিন থেকে বিরোধ চলে আসছে দুলাল আর্মির (সাবেক সেনা সদস্য)। দুলাল জোর করে তার বাড়ির বাথরুমের পানি ও ল্যাট্রিনের ময়লা নিষ্কাশনের জন্য ড্রেন ইমাম সাহেবের বাড়ির ভিতর দিয়ে নিয়ে যেতে চায়। এতে সম্মত না হওয়ায় ষড়যন্ত্র মুলক ভাবে পায়ে পারা দিয়ে ঝগড়া বাধিয়ে হয়রানি করছে।

এমনকি একের পর এক মিথ্যে মামলায় জড়িয়েছে। এক পর্যায়ে মারধর করে বাড়ি ছাড়া করে জোরপূর্বক ড্রেন নির্মাণের উদ্যোগও নেয়। কিন্তু তাতে বাধা দেয়ায় গত বৃহস্পতিবার উপজেলার খাতামধুপুর ইউনিয়নের ডাঙাপাড়ায় বাড়ি থেকে বের হওয়ার পরই রাস্তার উপর ইমামকে মানবেতর ভাবে নির্যাতন করেছে দুলাল সহ তার পরিবারের লোকজন। শুধু মাত্র অর্থের দাপটে তারা এধরণের বেআইনী কার্যকলাপ ঘটিয়ে চলেছে বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর। 

মেসেঞ্জার/রিপন/আজিজ