ঢাকা,  সোমবার
০৮ জুলাই ২০২৪

The Daily Messenger

নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে রাতভর গোলাগুলি, দিশেহারা সীমান্তবাসী!

মাঈনুদ্দিন খালেদ, নাইক্ষ্যংছড়ি (বান্দরবান)

প্রকাশিত: ২২:৩৪, ৪ জুলাই ২০২৪

নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে রাতভর গোলাগুলি, দিশেহারা সীমান্তবাসী!

ছবি : মেসেঞ্জার

বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তের ওপারে সীমান্ত পিলার ৪৩ ৪৪ পিলারের মাঝামাঝি সবখানে রাতভর গোলাগুলি ঘটনা ঘটেছে এর আগে শনিবার থেকে প্রতিদিন রাতে দিনে ধরণের গোলার আওয়াজ শুনতে পেয়েছেন সীমান্তের এসব লোকজন।

বিষয়টি নিশ্চিত করেন, সীমান্ত পিলার ৪৪ নম্বরের এপারের বাসিন্দা বড়ছনখোলার ছৈয়াদ আলম, ৪৩ পিলারের কাছাকাছি চেরার মাঠের আবদুল গফুর, ৪৫ পিলারের পাশের গ্রামের বাসিন্দা জামছড়ির শফিক আহমদ ৪৪ পিলারের অদূরের নিকুছড়ির হাবিব মিয়া।

তারা জানান, গত সপ্তাহ ধরে সীমান্তের ১৫ কিলোমিটার এলাকায় গোলাগুলির ঘটনার কারণ খুঁজে পাচ্ছে না তারা। প্রতিপক্ষ নেই, তবু কেন গোলাগুলি হচ্ছে তাদের সীমান্ত এলাকায়? প্রশ্ন তাদের।

অপর একদল অভিজ্ঞ সীমান্তবাসী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, বিগত ২০২১ সালের আগে ক্যাম্প গুলো দখলে ছিল জান্তা সরকারের অধীনস্থ বিজিপির হাতে। এর কিছুদিন পর থেকে বিদ্রোহী আরকান আর্মির স্বশস্ত্র গোষ্ঠী মিয়ানমারের জান্তা নিয়ন্ত্রিত এসব সীমান্ত চৌকিগুলো নিজেদের নিয়ন্ত্রনে নিয়ে নেয়।

সর্বশেষ ২০২৩ সালের মাঝামাঝি এসে বিদ্রোহীরা সরকারি সীমান্তরক্ষীদের হটিয়ে চৌকিগুলো দখল নিয়ে এসবের আশপাশে অবস্থান নেয় বাঙ্কার তৈরী করে। যেন প্রতিপক্ষের বিমান হামলা বা অন্য যে কোন হামলা থেকে কৌশলে বাঁচা যায়।

তবে চলতি সনে বর্ষা মৌসূম শুরু হলে বিদ্রোহীরা বাঙ্কার ছেড়ে জান্তা বাহিনীর নিয়ন্ত্রন হারা সেই সীমান্ত চৌকিতে ঢুকে পড়ে।


পক্ষান্তরে সীমান্ত চৌকি হারানো জান্তার সীমান্তরক্ষীরা সে সময় পালিয়ে অর্ধশত কিলোমিটার দুরের মন্ডু জেলা শহরে সেনা ব্যাটালিয়নে অবস্থান নেয়। এখনও তারা সেখানে অবস্থান করছে।

তাদের মতে, সম্প্রতি সীমান্তে অপর বিদ্রোহী আরএসও (রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গনাইজেশন) শক্তি সঞ্চয় করে মিয়ানমারের সেই পুরোনো সীমান্ত চৌকি গুলো নিজেদের নিয়ন্ত্রনে নিতে মরিয়া হয়ে চেষ্ঠা চালাচ্ছে।

বিশেষ করে রাত হলে তারা হামলা চালাবে আতংকে পুর্ব থেকে দখলে থাকা বিদ্রোহী আরকান আর্মি রাত শুরু হলে গুলি ছুটতে থাকে একের পর এক। গত সপ্তাহ ধরে গুলি কান্ডে অতিষ্ঠ বাংলাদেশীরা।

তাদের মতে, সীমান্তে রাতে এভাবে গোলাগুলির ঘটনা আন্তর্জাতিক সীমান্ত আইনের চরম লঙ্ঘন। কেননা সীমান্তে বসবাসকারীদের মধ্যে শিশু, নারী, অসুস্থ্য লোকজন ছাড়াও নিরহ লোকজন রয়েছে। তারা গোলাগুলি কান্ডে ভয় পায় আতংকে থাকে।

তবে বিষয়ে স্থানীয় দায়িত্বশীল কোন ব্যক্তি বা সরকারি কোন প্রতিনিধি গণমাধ্যমের সাথে কথা বলেন না।

তাদের কয়েকজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রতিবেদককে জানান, সীমান্ত এলাকা যেহেতু বিদ্রোহীদের দখলে সেহেতু তারা এদের বিষয়ে কোন মন্তব্য করলে তাদের উর্ধ্ব মহলকে কফিয়ত দিতে হয়। তাই তারা গণমাধ্যমকে প্রতিক্রিয়া জানান না।

তবে তারা জানান, বাংলাদেশ সীমান্তে যেহেতু জনবসতি আছে, তাতে তাদের অধিকার নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে গণমাধ্যম না লিখলে মানবতা ভূলন্ঠিত হবে।

মেসেঞ্জার/আপেল