ছবি : মেসেঞ্জার
নাটোর জেলার সিংড়া উপজেলার চেয়ারম্যান পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় বিজয়ী দেলোয়ার হোসেনের হলফ নামায় জমির পরিমান বেশি দেখানোর অভিযোগ উঠেছে। জানা যায়, হলফ নামায় তিনি তার পৈত্রিক জমি ১০ একর দেখালেও ইউনিয়ন ভূমি অফিসের রেকর্ডে পাওয়া গেছে মাত্র ১ দশমিক ৩১৫ একর। ফলে হলফ নামায় তিনি প্রকৃত জমির চেয়ে প্রায় ১০ গুণ বেশি দেখিয়েছেন।
একই সাথে তার দাখিলকৃত হলফ নামার শিক্ষাগত যোগ্যতা কলামে স্বশিক্ষিত লিখলেও জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্যে তার শিক্ষাগত যোগ্যতা মাধ্যমিক বলে উল্লেখ করেছেন।
এদিকে, হলফ নামায় তথ্য গোপন ও দাখিলকৃত মনোনয়ন পত্রে অসঙ্গতি এবং ত্রুটিপূর্ণ থাকার পরেও বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত ঘোষণা করায় প্রকাশিত গেজেট ও শপথ বাতিলের জন্য আবেদন করেছেন স্থানীয় তিন নাগরিক।
তারা দাবী করেন, ৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রথম ধাপে ২ জন চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হিসেবে গত ১৭ই এপ্রিল দেলোয়ার হোসেন ও লুৎফুল হাবিবের মনোনয়ন পত্র বৈধভাবে মনোনিত করে প্রার্থীদের তালিকা প্রকাশ করেন জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও রির্টানিং অফিসার। কিন্তু দেলোয়ার হোসেন হলফনামায় যে স্বাক্ষর করেছেন ওই স্বাক্ষরের সাথে ভোটার আইডি কাডের্র স্বাক্ষরের কোন মিল নাই। তাই জেলা নির্বাচন ও রিটার্নিং অফিসার বরাবর গত ৫ই মে জমা দেয়া ওই আবেদনে তারা দেলোয়ার হোসেন এর মনোনয়ন পত্র অবৈধ ঘোষণা করে পুনঃতফসিলের দাবী করেছেন।
এর আগে গত ২২ এপ্রিল প্রধান নির্বাচন কমিশনার বরাবরও আবেদন করেছেন ওই তিনজন। আবেদনকারীদের দাবী,ওই আবেদন বিষয়ে গত ১২ মে জেলা রিটানিং কর্মকর্তার সাথে কথা বললেও তিনি কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করতে অপারগতা প্রকাশ করেন। এরপর দেলোয়ারকে সিংড়া উপজেলা চেয়ারম্যান হিসাবে গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে। তিনি শপথ গ্রহণ করে বর্তমানে দায়িত্বও পালন করছেন।
এ বিষয়ে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা শেখ আব্দুল লতিফ শেখের মোবাইল ফোনে বার বার কল করেও তিনি রিসিভ করেননি তিনি। এবিষয়ে জানতে চাইলে দেলোয়ার হোসেন তার বিরুদ্ধে আনিত সকল অভিযোগ অস্বীকার করলেও জমি বিষয়ে কোন মন্তব্য করতে চাননি।
এর আগে মনোনয়নপত্র জমা দিতে গিয়ে হামলা ও অপহরনের শিকার হলে আলোচিত হন দেলোয়ার পাশা। পরে দলের সিদ্ধান্ত ও নানামুখী চাপে আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের শ্যালক লুৎফুল হাবিব রুবেল মনোনয়ন প্রত্যাহার করলে একক প্রার্থী হিসাবে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন দেলোয়ার হোসেন পাশা।
এবিষয়ে জানতে চাইলে নাটোর কোর্টের সরকারী কৌশুলী(জিপি) এডভোকেট মালেক শেখ জানান,কোন প্রার্থী যদি হলফ নামায় প্রকৃত সম্পদের চেয়ে বেশি সম্পদ দেখায় তবে তা প্রশ্নের জন্ম দেয়। কেননা,সাধারণ মানুষের মাঝে এমন মনে হয় যে,নির্বাচিত হলে ওই অতিরিক্ত
জমি জমা দূর্নিতির মাধ্যমে অর্জন করবে এমন ইনটেনশন থেকেই ওই বেশি সম্পদ দেখানো হয়েছে কি-না?
এটি গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ ১৯৭২ (আরপিও) অনুযায়ী শুধু অপরাধই নয় বরং তা তদন্তের দাবী রাখে। তদন্তে অভিযোগ সত্য প্রমানীত হলে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধির পদও বাতিল হবে।
মেসেঞ্জার/আরিফুল/আজিজ