ঢাকা,  শনিবার
০৫ অক্টোবর ২০২৪

The Daily Messenger

কোষ্টগার্ডের মারধরে আহত সরকারি চাকরিজীবীসহ ৫ জন

পটুয়াখালী প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৩:৩২, ৬ জুলাই ২০২৪

কোষ্টগার্ডের মারধরে আহত সরকারি চাকরিজীবীসহ ৫ জন

ছবি : সংগৃহীত

পটুয়াখালীতে কোস্টগার্ডের টহল দলের অতর্কিত হামলায় সরকারি চাকরিজীবী সহ ৫ জন আহতের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় সড়ক ও জনপদ বিভাগের ফেরি চালক ও খেয়া ঘাটের মাঝি আহত হয়। বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) দিবগত রাত ৪টার দিকে পটুয়াখালী-মির্জাগঞ্জ ফেরীঘাটে এঘটনা ঘটে।

আহতদের মধ্য খেয়াঘাটের মাঝি আব্বাস হাওলাদার (২৬) ও হিরন শিকদার (৩০) পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারী বিভাগে ভর্তি রয়েছে। অপর আহত পায়রাকঞ্জু ফেরীঘাটের ফেরী চালক স্বপন মিস্ত্রী (৫৫) ও সওজের (অবঃ) কর্মচারী ফজলুর রহমান (৬০) কোষ্টগার্ডের হুমকী-ধামকীতে প্রাইভেট চিকিৎসা নিয়েছে। এছাড়াও সোলেমান নামে এক মানসিক ভারসাম্যহীনকেও পেটান তারা। মারধরের পরে তাদের মারধর করা হয়নি মর্মে ভিডিও স্বীকারোক্তি নেয় কোস্টগার্ড।

পায়রাকুঞ্জ ফেরীঘাটের খেয়ার মাঝি আব্বাস হাওলাদার জানান-“৪ জুলাই দিবাগত রাত আনুমানিক ৪টার দিকে কোষ্টগার্ড এর টহল দল তাকে ঘুম থেকে জাগিয়ে হাতকড়া লাগিয়ে এলোপাতারি পেটানো শুরু করে। এরপর ঘাটে পরিত্যক্ত ফেরীতে ঘুমন্ত ইজাদারের কর্মী হিরন শিকদারকে ডেকে এলোপাতারী পেটান তারা”।

পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হিরন শিকদার বলেন-“ওই রাতে কোষ্টগার্ড  ঘুম থেকে জাগিয়ে হাতকড়া লাগিয়ে শরীরের স্পর্শকাতর অঙ্গসহ নানা স্থানে এলোপাতারি পিটিয়ে রক্তমূখ জখম করেন। এরপর ফোন করে পটুয়াখালীর ঘাটে ফেরী আসতে বলেন। আমি তখন ফেরী চালককে কল করে পটুয়াখালীর ঘাটে আসতে বলি”। পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজের সার্জারী বিভাগে ভর্তি আব্বাস ও হিরনের শরীর এবং স্পর্শকাতর অঙ্গে রক্তমুখ একাধিক আঘাতের চিহ্ন দেখা গেছে। পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালের ডাক্তার জহিরুল ইসলামের বরাতে হিরন বলেন-তার বাম কানে মারাত্মক রক্তক্ষরন হয়েছে এবং আঘাতপ্রাপ্ত কান থেকে কোন শব্দ শুনছেন না তিনি।

ফেরী বিভাগের (অবঃ) কর্মচারী ফজলুর রহমান বলেন-ওই রাতে পটুয়াখালী প্রান্ত থেকে একটি গাড়ী পারাপার করে মির্জগঞ্জ প্রান্তের ঘাটে অবস্থান করছিলেন। ভোর রাতে ফেরী ইজাদারের কর্মী হিরন কল দিয়ে পটুয়াখালীর ঘাটে যেতে বলে। ফেরী নিয়ে ঘাটে পৌছানো মাত্রই “হাতকড়া লাগিয়ে টাকা খেয়ে রাতে গাড়ী পারাপারের অভিযোগে এলোপাতারি পেটানো শুরু করে কোষ্টগার্ড। এরপর তাদের কাছে কোষ্টগার্ড জানতে চান“তোদের কি আমরা পেটাইছি,এতে তারা হ্যাঁ বললে পূনরায় পেটানো শুরু করে থানায় নিয়ে চালান দেয়ার হুমকী দেন কোষ্টগার্ড। পরবর্তীতে পেটানো হয়নি বলে ভিডিও স্বীকারোক্তি নেয়া হয় তাদের কাছ থেকে। এছাড়াও ওই রাতে পরিত্যক্ত ফেরীতে ঘুমন্ত সোলেমান নামে মানসিক ভারসাম্যহীনকে এলোপাতারি পেটান তারা।

পায়রাকুঞ্জ ফেরীঘাটে ইজাদার মিঠুসহ পায়রাকুঞ্জ ফেরী ঘাটের ব্যবসায়ীরা বলেন-কোষ্টগার্ড বিনা কারনে খেয়াঘাটের মাঝি,ফেরী লোকজন এবং একটি পাগলকে অমানবিক ভাবে পেটান। বিষয়টি মিডিয়ার দেখার প্রয়োজন।

এসব ঘটনা জানতে পটুয়াখালী কোষ্টগার্ড ষ্টেশন কমান্ডারের নাম্বারে একাধিকবার কল করে জড়িত কোষ্টগার্ড সদস্যদের নাম ও পরিচয় জানতে চাইলে তিনি কোন তথ্য দেয় নি। তিনি বিষয়টি অবগঅমানবিক স্বীকার করে সমাধান এবং ভুক্তভোগীদের চিকিৎসা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে আশ্বাস্ত করেন। তবে কোষ্টগার্ডের এই দুই কর্মকর্তা গনমাধ্যমে নাম বলতে অনিচ্ছুক।

মেসেঞ্জার/মানিক/আজিজ

×
Nagad