ঢাকা,  রোববার
০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪

The Daily Messenger

লালমনিরহাটে তিস্তার পানি বিপদসীমা ছুঁই ছুঁই, নিম্নাঞ্চল প্লাবিত

লালমনিরহাট প্রতিনিধি 

প্রকাশিত: ১৮:৩৫, ৬ জুলাই ২০২৪

আপডেট: ২১:১২, ৬ জুলাই ২০২৪

লালমনিরহাটে তিস্তার পানি বিপদসীমা ছুঁই ছুঁই, নিম্নাঞ্চল প্লাবিত

ছবি : মেসেঞ্জার

অতি বৃষ্টি ও উজানের ঢলের কারণে লালমনিরহাটের ডালিয়া ব্যারাজ পয়েন্টে তিস্তা নদীর পানি বিপদসীমা ছুঁই ছুঁই করছে। পানি বৃদ্ধির কারনে তিস্তা ও ধরলা নদীর তীরবর্তী এলাকার নিম্নাঞ্চল গুলোর ঘরবাড়ি ও রাস্তাঘাট গুলোয় পানি উঠতে শুরু করেছে।

কিছু কিছু নিচু এলাকায় হাটু ও কোমর পরিমান পানি উঠেছে। তলিয়ে গেছে রাস্তাঘাট, ফসলি জমি। হুমকির মুখে রয়েছে তিস্তার বাঁধ। এ অবস্থায় নদীপাড়ের মানুষ চরম ভোগান্তিতে পরেছেন।

পানি নিয়ন্ত্রণে ব্যারাজের ৪৪টি গেট খুলে দিয়েছে ব্যারাজ কর্তৃপক্ষ। এতে জেলার ৫ উপজেলায় পানি বন্দি হয়ে পরেছে সাড়ে ৪ হাজার পরিবার।

শনিবার (৬ জুলাই) সকাল ৯ টা ও বেলা ১২ টায় ডালিয়া ব্যারাজের পয়েন্টে তিস্তা নদীর পানিপ্রবাহ রেকর্ড করা হয়েছে ৫২ দশমিক ৫ সেন্টিমিটার, যা বিপদসীমার ১০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। (স্বাভাবিক ৫২ দশমিক ১৫ সেন্টিমিটার)।

অপর দিকে ধরলার শিমুলবাড়ী পয়েন্টে বিপদসীমার ১২ সে.মি নিচে প্রবাহ রেকর্ড করা হয়েছে। পাউবো বলছে, পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমা অতিক্রম করতে পারে। এতে স্বল্পমেয়াদী বন্যার আশঙ্কা করা হচ্ছে।

জানা গেছে, তিস্তা ও ধরলার নদীর পানি বিপদসীমা ছুঁই ছুই করছে। এতে লালমনিরহাটের পাঁচ উপজেলার নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল ও চরের বসতবাড়ি ও রাস্তা ঘাট পানি নিচে তলিয়ে গিয়ে ভোগান্তিতে পরেছে নদী পাড়ের মানুষ।

পাশাপাশি গবাদি পশু হাঁস মুরগি নিয়ে চরম বিপদে আছেন নদীপাড়ের বাসিন্দারা। তিস্তা নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় জেলার পাটগ্রামের দহগ্রাম, হাতীবান্ধার গড্ডিমারী, দোয়ানী, নিজ গড্ডিমারী, সানিয়াজান ইউনিয়নের নিজ শেখ সুন্দর, সিঙ্গীমারী ইউনিয়নের ধুবনী, সিন্দুর্না, চর সিন্দুর্না, পাটিকাপাড়া, ডাউয়াবাড়ী, কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী, শোলমারী, নোহালী, চর বৈরাতি, আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা, সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ, কালমাটি, রাজপুর, গোকুন্ডা ইউনিয়নের তিস্তা নদীর তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলে পানি প্রবেশ করায় আবারও বন্যার আশঙ্কা করা হচ্ছে।

ডাউয়াবাড়ী ইউনিয়নের উত্তর ডাউয়াবাড়ী এলাকার আব্বাস আলী বলেন, গত দুইদিন ধরে তিস্তার পানি বৃদ্ধি পেয়ে বসতবাড়িতে পানি উঠেছে। তলিয়ে গেছে রাস্তাঘাট। গবাদিপশু নিয়ে চরম বিপাকে আছি। চলাচল করতে খুবই সমস্যা হচ্ছে।

এ বিষয়ে ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৗশলী আসফাউদ্দৌলা বলেন, বৃষ্টি ও উজানের ঢলে আবারো তিস্তার পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে।

হাতীবান্ধা উপজেলার ডাউয়াবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মশিউর রহমান বলেন, তিস্তার পানি বৃদ্ধি পেয়ে আমার ইউনিয়নের ১,২,৩,৪ নং ওয়াডের প্রায় ৩হাজার পরিবারের বাড়িঘরে পানি উঠেছে। এছাড়াও ৫ ‍ও ৬ নং ওয়াডের কিছু কিছু এলাকায়ও পানি উঠেছে।

কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ফরহাদ হোসেন জানান, তিস্তার পানি হুহু করে বাড়ছে এতে আমার ইউনিয়নের নদীপাড়ের মানুষজনের বাড়িঘরে পানি উঠছে।আবার কোনকোন এলাকায় শুরু হয়েছে ভাঙ্গন।অনেকে বাড়িঘর সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।

হাতীবান্ধা উপজেলার গড্ডিমারী ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য জাকির হোসেন বলেন, গড্ডিমারিতে তিস্তা নদীর একটি বাঁধ ধসে যাচ্ছে। বিষয়টি পানি উন্নয়ন বোডকে জানিয়েছি। এ ইউনিয়নে প্রায় ২‘হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পরেছে।

লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সুনীল কুমার বলেন, তিস্তার পানি ২৪ ঘন্টায় বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমরা সার্বক্ষণিক খোঁজখবর রাখছি।

লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ উল্যাহ বলেন, তিস্তার পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে এটা আমরা জেনেছি। বর্তমানে বিপদসীমার ১০ সেন্টিমিটার নিচে রয়েছে।

মেসেঞ্জার/আনিছুর/আপেল

×
Nagad