ঢাকা,  রোববার
০৬ অক্টোবর ২০২৪

The Daily Messenger

রাজশাহীতে অনুমোদনহীন ডায়াগনস্টিক সেন্টার দিচ্ছে রোগ নির্ণয় সনদ

স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী

প্রকাশিত: ২২:১২, ৭ জুলাই ২০২৪

রাজশাহীতে অনুমোদনহীন ডায়াগনস্টিক সেন্টার দিচ্ছে রোগ নির্ণয় সনদ

ছবি : সংগৃহীত

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের ৪২ নম্বর ওয়ার্ডে ব্রাদার মিজানুর রহমানের পরিচালনায় অনুমোদন বিহীন ডায়াগনস্টিক সেন্টার রোগীদের ভুয়া রোগনির্ণয় সনদ দিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। কোনো বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, টেকনিশিয়ান ও আধুনিক যন্ত্রপাতি না থাকলেও বিশেষজ্ঞ সেজে কর্মচারীরাই এসব সনদে স্বাক্ষর করছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত ২৮ জুন সন্ধ্যায় আনসার সদস্যরা রামেক হাসপাতালের ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে থেকে নিউ রাজশাহী স্কয়ার ডায়াগনস্টিক কনসালটেশন সেন্টারের তিন নারী দালালকে আটক করেন। পরে তাদের মুচলেকা দিয়ে ছাড়িয়ে নেন ব্রাদার মিজানুর রহমান। এনিয়ে রামেক হাসপাতালের স্টাফদের মাঝে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়।

নামপ্রকাশ অনিচ্ছুক রামেক হাসপাতালের ব্রাদার ও কর্মচারীরা জানান, মিজানুর রহমান দীর্ঘ দিন ধরে এখানে চাকরি করছেন। আবার নিউ রাজশাহী ডায়াগনস্টিক সেন্টারে পরিচালক হিসেবে ব্যবসাও করছেন। এছাড়া হাসপাতালে চাকরির সুযোগে স্থানীয় দালালদের সাথে ‘সখ্যতা’ও গড়ে তুলেছেন। দালালরা তার ডায়াগনস্টিক সেন্টারে পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য রোগী নিচ্ছে। 

জালিয়াতির মাধ্যমে ভুয়া পরীক্ষা-নিরীক্ষা সনদ দিয়ে রোগীদের স্বাস্থ্য ঝুঁকি সৃষ্টি এবং পরিচালক হিসেবে মিজানুর রহমান আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন। সূত্র জানায়, গত ২৮ জুন রামেক হাসপাতালের ১৫ নং ওয়ার্ডের বয়স্ক রোগী আয়েশা বেগমের ইলেক্ট্রোলাইট ও সিভিসি পরীক্ষার পরামর্শ দেন চিকিৎসক। তার নমুনা মিজানুর রহমানের ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নিয়ে ১ ঘণ্টার মধ্যে দু’টি পরীক্ষার রিপোর্ট দেয় তারা। ঐ রোগীর রিপোর্টে রামেকের বায়োকেমিস্ট্রির অবসরপ্রাপ্ত সহকারী অধ্যাপক ডা. ইরফান রেজার নামে স্বাক্ষর রয়েছে। তবে ডা. ইরফান রেজা জানান, ২৮ জুন তিনি ঐ ডায়াগনস্টিক সেন্টারেই যাননি। সনদে ব্যবহৃত তার স্বাক্ষর ভুয়া বলেও দাবি করেন তিনি।

জানা গেছে, ঐ ডায়াগনস্টিক সেন্টারের চেয়ারম্যান অভিযুক্ত ব্রাদার মিজানুর রহমানের বাবা জয়নাল হোসেন। তিনি পেশায় মুয়াজ্জিন, বগুড়ার মাগুরা গ্রামে তিনি কৃষি কাজও করেন। তিনি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে না আসলেও চেয়ারম্যান হিসেবে তার নাম রয়েছে। ব্রাদার মিজানুর রহমান নিজেই ডায়াগনস্টিক সেন্টার পরিচালনা করেন বলে জানা গেছে। তবে অভিযুক্ত ব্রাদার মিজানুর রহমান দাবি করেন, ইতোমধ্যে তিনি ঐ ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে পদত্যাগ করেছেন। সরকারি চাকরি করে কিভাবে ডায়াগনস্টিক সেন্টার চালান? জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি আগে বুঝতে পারিনি। ভুল বুঝতে পেরে পদত্যাগ করেছি।

রামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম আহাম্মদ জানান, হাসপাতালের ব্রাদার মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে বেশ কিছু অভিযোগ সম্পর্কে ইতোমধ্যে অবগত হয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। রাজশাহী বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক আনোয়ারুল কবির জানান, নিউ স্কয়ার রাজশাহী ডায়াগনস্টিক সেন্টারের অনুমোদন নেই। তবে তারা অনুমোদনের জন্য আবেদন করেছে। অনৈতিক কার্যক্রম চালিয়ে থাকলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মেসেঞ্জার/সজিব

×
Nagad