ঢাকা,  রোববার
০৬ অক্টোবর ২০২৪

The Daily Messenger

নাক কান গলা ডাক্তার করলেন সিজার

বিল্লাল হোসেন, যশোর প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২২:৩১, ৭ জুলাই ২০২৪

নাক কান গলা ডাক্তার করলেন সিজার

ছবি : সংগৃহীত

যশোরে নাক কলা বিভাগের ডা. শাহীন রেজার সিজারে প্রসূতি ডলি বেগমের (৩০) জীবন সঙ্কটাপন্ন হয়ে উঠেছে। এ ঘটনায় রোগীর স্বজনরা ক্ষতিপূরণ চাইলে তিনি তাদের হুমকিও দেন বলে অভিযোগ। ফলে তারা ক্ষুব্ধ হয়ে রোববার (৭ জুলাই) বিকেলে প্রসূতির স্বজনরা ডা. শাহীন রেজাকে দেশ ক্লিনিকের অপারেশন কক্ষে আটকে বিক্ষোভ করেন। খবর পেয়ে কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশ ওই চিকিৎসককে উদ্ধার করেন।

রোগীর স্বজন শহরের ঘোপ নওয়াপাড়া রোডের বাসিন্দা সাব্বির জানান, গত ২৯ মে তার ছোট খালা বাঘারপাড়া উপজেলার চাঁদপুর গ্রামের মঈনুল ইসলামের স্ত্রী ডলি বেগমকে দেশ ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়। এদিন বিকেলে তাকে সিজার করেন ডা. শাহীন রেজা। তিনদিন পর রোগীর ছাড়পত্র দিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দেন।

সাব্বির জানান, বাড়ি যাওয়ার পর থেকে রোগীর শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে। কিছু দিন পর বাড়ির লোকজন দেখতে পান প্রসূতি ডলির মূত্র নালী দিয়ে মল বের হচ্ছে।

রোগীর পরীক্ষা -নিরীক্ষা করার পর তারা  নিশ্চিত হন সিজারের সময় ডাক্তার রোগীর খাদ্য ও মূত্র নালী কেটে ফেলেন। কিন্তু জয়েন্ট করার সময়  খাদ্য ও মূত্র নালী এক সাথে সেলাই করা হয়েছে। যে কারণে রোগীর অবস্থা সঙ্কটাপন্ন হয়ে উঠেছে। বর্তমানে রোগী ডলি ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। পরে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন ডা. শাহীন রেজা গাইনী বিভাগের চিকিৎসক নন। তিনি যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের নাক কান গলা বিভাগের চিকিৎসক।

সাব্বির আরও জানান, রোববার বিকেলে তিনিসহ রোগীর আরও কয়েকজন স্বজন দেশ ক্লিনিকে গিয়ে ডা. শামীম রেজার কাছে ঘটনাটি বলেন। এসময় রোগীর চিকিৎসায় ক্ষতিপূরণ চাওয়া হয়। এতে তিনি ক্ষুব্ধ হন। তখন  রোগীর স্বজনরা উত্তেজিত হয়ে তাকে অপারেশন কক্ষে আটকে রেখে বিক্ষোভ করেন। এসময়  তারা বলেন নাক কান গলা বিভাগের চিকিৎসক রোগীদের সিজার করছেন কেনো বিচার চাই। একপ্রকার পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। পরে খবর পেয়ে থানা পুলিশ ওই চিকিৎসককে উদ্ধার করে নিয়ে যান।

কোতোয়ালি মডেল থানার এসআই জাহিদুল ইসলাম জানান, ডাক্তার শাহীন রেজাকে উদ্ধার করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত আছে। রোগীর লোকজন ওই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে অভিযোগ করলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এই বিষয়ে ডা. শাহীন রেজা জানান, আমি একজন এমবিবিএস চিকিৎসক। তাই তিনি রোগীর সিজার করেন। তার সিজারে যদি ডলি বেগম অসুস্থ হয় তাহলে  আমাকে দেখাতে পারতেন। তা না করে রোগীর স্বজন পরিচয়ে আমার কাছে চাঁদাবাজির চেষ্টা করা হয়েছে।

যশোরের ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. নাজমুস সাদিক রাসেল মুঠোফোনে জানান, নাক কান গলা বিভাগের ডা. শাহীন রেজার রোগীর সিজারের বিষয়ে কোন দক্ষতা আছে কিনা বা অপারেশন টিমে অজ্ঞানের চিকিৎসক ছিলো কিনাসেটা অবশ্যই খোঁজ নেয়া হবে। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সাথে আলাপ করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে।

মেসেঞ্জার/সজিব

×
Nagad