ঢাকা,  রোববার
০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪

The Daily Messenger

আরডিএ অফিসে প্ল্যান পাসে ঘুষ, ছদ্মবেশে দুদকের অভিযান

রাজশাহী প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২১:৪৬, ৮ জুলাই ২০২৪

আপডেট: ২১:৫১, ৮ জুলাই ২০২৪

আরডিএ অফিসে প্ল্যান পাসে ঘুষ, ছদ্মবেশে দুদকের অভিযান

ছবি : মেসেঞ্জার

রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (আরডিএ) কতিপয় কর্মকর্তার বিরুদ্ধে সাত তলা ভবনের প্ল্যান পাসের জন্য এক লাখ ও ১০ তলা ভবনের জন্য ২ লাখ টাকা ঘুষ নির্ধারণ করে দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। উল্লিখিত অংকের টাকা না দিলে প্ল্যান পাস হয় না। এই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে রবিবার (৭ জুলাই) দুদকের রাজশাহী সমন্বিত জেলা কার্যালয় পরিচয় গোপন করে সেবাগ্রহীতা সেজে অফিসে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

দুদক সূত্র জানায়, রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের কতিপয় কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ভবন নির্মাণের প্ল্যান অনুমোদনের জন্য ঘুষ দাবি করার অভিযোগের প্রেক্ষিতে এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালনা করা হয়। টিম ছদ্মবেশে আরডিএ ভবনে সেবাগ্রহণ করতে আসা সেবাগ্রহীতার সঙ্গে কথা বলে জানতে পেরেছে অফিসে প্রতিটি প্ল্যান ও নকশা অনুমোদন করার জন্য ঘুষ প্রদান করতে হয়।

টিম অভিযোগের বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে ও অফিসের সার্বিক কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করে। প্রাথমিক পর্যালোচনায় অভিযোগের সত্যতা রয়েছে বলে টিমের কাছে প্রতীয়মান হয়। অভিযানকালে সংগৃহীত রেকর্ডপত্র পর্যালোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কমিশন বরাবর পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।

অভিযোগ রয়েছে, রাজশাহী মহানগরীর দেবিশিংপাড়া এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা এরশাদ আলীর বাড়ির পাশেই বহুতল ভবন নির্মাণ করছেন গোলাম আজম। আরডিএ অনুমোদিত নকশার বাইরে ঐ ভবন নির্মাণ করা হয়। এ কারণে আরডিএতে অভিযোগ করে এরশাদ আলীর পরিবার। অভিযোগ তদন্ত করে অনিয়মের সত্যতা পেয়ে নির্মাণকাজ বন্ধ রাখার পাশাপাশি ভবনটির চারদিকের প্ল্যানবহির্ভূত বর্ধিত অংশ ভেঙে ফেলতে চিঠি দেয় আরডিএ। কিন্তু ওই নির্দেশনা আমলে নেননি গোলাম আজম।

একইভাবে আরেকটি পরিকল্পনাবহির্ভূত বহুতল ভবন নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে নগরীর রানীবাজার টাইলসপট্টি এলাকার একটি ড্রেন দখল করে। ঐ ভবনের মালিক পাভেল, তার মা ও বোন। অভিযোগ পেয়ে আরডিএ ভবনটির মালিককে নির্মাণকাজ বন্ধের পাশাপাশি কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়। 
এদিকে বিল্ডিং কোড অমান্য করে মহানগরীর লক্ষ্মীপুরে জিপিও পোস্ট অফিসের উত্তরে একটি বহুতল ভবন নির্মাণকাজ শুরু হয় তিন বছর আগে। 

একপর্যায়ে ভবনটির দক্ষিণের বাড়িতে ফাটল দেখা দেওয়ায় ভুক্তভোগী আরডিএতে অভিযোগ দেন। কিন্তু একাধিকবার কারণ দর্শাতে বলার পরও এর নির্মাণকাজ বন্ধ করতে পারেনি আরডিএ। ২০২৩ সালের শেষের দিকে ভবনটির নির্মাণকাজ শেষ হয়। ভবনটি একটি হাসপাতাল ভাড়া নিয়েছে।

এ বিষয়ে দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আকতারুল ইসলাম বলেন, দুদক এনফোর্সমেন্ট ইউনিট রবিবার ৭টি অভিযোগের বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। তার মধ্যে আরডিএ অফিসে অভিযান পরিচালনা করা হয়।

অভিযোগ রয়েছে, ভবনের প্ল্যানের অনুমোদনের জন্য আরডিএর নির্ধারিত ফির চাইতে অতিরিক্ত অর্থ দিয়ে থাকেন। নকশা প্রস্তুতকারীদের মাধ্যমে এই অর্থের লেনদেন হয়। আরডিএর অথরাইজড ও এস্টেট শাখার কতিপয় কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে ঘুষ না দিলে ফাইল নড়ে না। সাততলা ভবনের প্ল্যান পাসের জন্য এক লাখ ও ১০ তলা ভবনের জন্য দুই লাখ টাকা নির্ধারিত করে দেওয়া হয়। এই টাকা না দিলে প্ল্যান পাস হয় না।

মেসেঞ্জার/আনিসুজ্জামান/তারেক

×
Nagad