ঢাকা,  রোববার
০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪

The Daily Messenger

ফুলছড়িতে তথ্য গোপন করে শিক্ষক বদলীর বিষয়ে তদন্ত সম্পন্ন

ফুলছড়ি (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২২:৫৭, ১০ জুলাই ২০২৪

ফুলছড়িতে তথ্য গোপন করে শিক্ষক বদলীর বিষয়ে তদন্ত সম্পন্ন

ছবি : সংগৃহীত

গাইবান্ধার ফুলছড়িতে তথ্য গোপন করে অনলাইনে বদলী হওয়া শিক্ষকদের বদলীর আদেশ বাতিল এর সঙ্গে জড়িত শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগের তদন্ত সম্পন্ন হয়েছে।

বুধবার (১০ জুলাই) সকালে লিখিত অভিযোগের সরেজমিনে তদন্ত করেন প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক (তদন্ত শৃংখলা) আব্দুর রাজ্জাক।

তদন্ত শেষে তিনি বলেন, ‘লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে সরেজমিনে তদন্তে এসেছিলাম। সংশ্লিষ্ট প্রত্যেকের লিখিত জবানবন্দি নিয়েছি। অভিযোগের সত্যতা পেলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

তথ্য গোপন করে বদলী হওয়া শিক্ষকদের বদলীর আদেশ বাতিল অভিযুক্ত শিক্ষা কর্মকর্তাদ্বয়ের অনিয়মের প্রতিকার চেয়ে প্রথমে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার বরাবরে লিখিত অভিযোগ করেন, এরেন্ডাবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহ সুলতান সিরাজী কাউয়াবাঁধা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শামস আল ওয়াহেদ মাছুম।

জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা অভিযোগের সঠিক তদন্ত না করায় ক্ষুব্ধ প্রধান শিক্ষকদ্বয় সম্প্রতি প্রাথমিক শিক্ষা অধিপ্তরের মহাপরিচালকের বরাবরে লিখিত অভিযোগ করেন।

অভিযোগে তারা উল্লেখ করেন, জিগাবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কর্মরত প্রধান শিক্ষক ফরিদা আকতার এর স্থায়ী ঠিকানা জিগাবাড়ী। তার বাড়ি হতে কর্মরত বিদ্যালয়ের দূরুত্ব মাত্র কিলোমিটার।

সম্প্রতি তিনি গাইবান্ধা শহরে অবস্থান করার কারণে তথ্য গোপন করে অনলাইন বদলীর আবেদনে তার স্থায়ী ঠিকানা হতে কর্মরত বিদ্যালয়ের দূরত্ব দেখিয়েছেন ৩০ কিলোমিটার। বদলীর নীতিমালায় দূরত্বের একটা স্কোর থাকায় ফরিদা আকতার সহজেই তার আবেদনকৃত হোসেনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বদলী হতে পেরেছেন।

একইভাবে তথ্য গোপন করে হেলেঞ্চা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শহীদ সোহরাওয়ার্দী তার স্থায়ী ঠিকানা গুনভরি হতে কিলোমিটারের দূরত্বের স্থলে ৩০ কিলোমিটার দেখিয়ে কাঠুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বদলী কাবিলপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শিরিন আকতার স্থায়ী ঠিকানা বুড়াইল হতে কিলোমিটারের দূরত্বের স্থলে ৩০ কিলোমিটার দেখিয়ে উড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বদলী হয়েছেন।

নিয়মানুযায়ী অনলাইনে শিক্ষকদের বদলীর আবেদনের পর সরেজমিন তদন্ত করে আবেদনগুলো সুপারিশ অগ্রায়ন করবেন সংশ্লিষ্ট সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা।

অভিযোগকারী ক্ষুব্ধ শিক্ষকদের দাবী, দায়িত্বপ্রাপ্ত সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা বেলাল হোসেন তথ্য গোপন করে আবেদনকারী শিক্ষকদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে কোন প্রকার যাচাই-বাছাই না করেই আবেদনগুলো সুপারিশ অগ্রায়ন করেন।

কর্মকর্তাদের সুপারিশ অগ্রায়নের কারণেই বেশি স্কোর পেয়ে মিথ্যা তথ্য প্রদানকারী অভিযুক্ত শিক্ষকরা তাদের পছন্দের বিদ্যালয়ে অনলাইনে বদলী হয়েছেন।

অভিযোগকারী প্রধান শিক্ষক শাহ সুলতান সিরাজী বলেন, ‘আমরা অনলাইনে বদলীর আবেদনের পর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা বেলাল হোসেন সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম আবেদনগুলো সুপারিশ অগ্রায়নের জন্য মোটা অংকের টাকা দাবী করেন। আমরা টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করায় আমাদের দূরত্ব কম দেখিয়ে মিথ্যা তথ্য প্রদানকারীদের কাছ থেকে সুবিধা নিয়ে তাদের বেশি দূরত্ব দেখিয়েছেন। বদলীর ক্ষেত্রে যেহেতু দূরত্বে বিষয়টি অনেক গুরুত্বপূর্ণ তাই আমরা বদলী হতে পারিনি।

তিনি বলেন, শুধু প্রধান শিক্ষকদের নয়, সহকারী শিক্ষকদের বদলীর ক্ষেত্রেও স্থায়ী ঠিকানা হতে কর্মরত বিদ্যালয়ের দূরত্ব অস্বাভাবিক বেশি দেখিয়ে বদলী বাণিজ্য করেছেন শিক্ষা কর্মকর্তাদ্বয়। যাহা তদন্তে প্রমাণিত হবে।
সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘ক্ষুব্ধ যেকেউ অভিযোগ করতেই পারে। বদলীর বিষয়টি সম্পূর্ণ উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার নিয়ন্ত্রণে থাকে। তাছাড়া টাকা লেনদেনের বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

ফুলছড়ি উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বেলাল হোসেন বলেন, ‘দূরত্বের বিষয়ে অভিযোগ পাওয়ার আগেই আমি আবেদনগুলো অগ্রায়ন করে দিয়েছিলাম। পরবর্তীতে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে বিষয়টি জানিয়েছি কিন্তু ততক্ষণে সেখান থেকেও অগ্রায়ন করা হয়েছে। যেহেতু বিষয়টি তদন্ত করছেন, তাই বিষয়ে আমি মন্তব্য করতে পারবো না।

মেসেঞ্জার/শাকিল/আপেল

×
Nagad