ছবি : মেসেঞ্জার
নাটোরের উপজেলার চাঁচকৈড় কাঁচারিপাড়া জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা মোতালেব হোসেনকে নানা আয়োজনের মধ্যদিয়ে বিদায় সংবর্ধনা জানানো হয়েছে। ৩৫ বছর ইমামতি করার পর মুসল্লিদের এমন ভালবাসায় মুগ্ধ হয়ে কেঁদে ফেলেন ইমাম মোতালেব হোসেন। গুরুদাসপুরে ইমামের এমন রাজকীয় বিদায় এই প্রথম বলে জানান স্থানীয়রা।
জানা গেছে, শুক্রবার (১২ জুলাই) পৌরসভার কাঁচারিপাড়া মহল্লায় সকাল থেকেই ইমামকে বিদায় দেওয়ার নানা আয়োজনে ব্যস্ত থাকে এলাকাবাসী। সাজানো হয় ঘোড়ার গাড়ি। আয়োজন করা হয় প্রায় এক হাজার মুসল্লির খাবারের।
দুপুরে জুম্মার নামাজের পর জামে মসজিদের ৭২ বছর বয়সী ইমামকে হাত ধরে ঘোড়ার গাড়িতে তুলেন এলাকাবাসী। গাড়িতে উঠার পূর্বে শেষবারের মতো উপস্থিত মুসল্লি ও এলাকাবাসীর কাছে নিজের ভুলত্রুটি ক্ষমা চান তিনি। ঘোড়ার গাড়ির সামনে-পেছনে প্রায় দুই শতাধিক মোটরসাইকেল বহর নিয়ে ১০ কিলোমিটার অদূরে চলনালি গ্রামে ইমামের বাড়িতে তাকে নিয়ে যান এলাকাবাসী।
জুম্মার নামাজ পর মসজিদের বিদায়ী ইমাম মোতালেব হোসেনের হাতে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে নগদ এক লাখ টাকা তুলে দেন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও গুরুদাসপুর পৌর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি আলহাজ্ব শামসুল হক শেখ।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন, আসিফ আব্দুল্লাহ বিন কুদ্দুস শোভন, শাহজাহান আলী শেখ, আমিরুল ইসলাম সাগর, ইউসুফ আলী, আব্দুল আলীম ফকির, আব্দুল্লাহ শেখ, মতিউর রহমান শেখ প্রমুখ।
ইমাম মাওলানা মোতালেব হোসেন বলেন, ‘১৯৮৯ সালে এ মসজিদে ইমাম হিসাবে যোগদান করি। ৩৫ বছর যাবত ইমামতি করার সময় এই মহল্লার সকল মুসল্লি পরিবারের ভালোবাসা পেয়েছি। বিদায় বেলাতেও আমাকে এত ভালোবাসা ও সম্মান দেওয়ায় আমি সত্যিই মুগ্ধ হয়েছি। এমন আয়োজন প্রতিটি মসজিদে, প্রতিটি ইমামের জন্য করা হোক।’
মসজিদ কমিটির কোষাধ্যক্ষ আলমগীর শেখ জানান, গুরুদাসপুরে ইমামের এমন রাজকীয় বিদায় সংবর্ধনা এই প্রথম। এর আগে কখনও উপজেলায় এমনভাবে কোন ইমামকে বিদায় দেওয়া হয়নি। যে মানুষটা বিগত ৩৫ বছর ধরে নামাজ-কালাম ও দ্বীনের জ্ঞান দিয়ে এসেছেন, তার বিদায় বেলা স্মরণীয় করে রাখতে আমরা চেষ্টা করেছি। প্রতিটি মসজিদে এমন আয়োজনের আহ্বান জানাই।‘
মসজিদ কমিটির সভাপতি আমজাদ হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক বরকত আলী বলেন, ‘ইমাম সমাজের নেতা। সেই ইমামদের প্রাপ্য সম্মান কোথাও তেমনভাবে দেওয়া হয় না। এলাকাবাসীর উদ্যোগে তাদের অক্লান্ত পরিশ্রমে ইমামকে যে আয়োজনের মধ্য দিয়ে বিদায় দিয়েছেন তা স্মরণীয় হয়ে থাকবে। এমন উদ্যোগ প্রতিটি এলাকার মুসল্লিরা গ্রহণ করুক।’
মেসেঞ্জার/আরিফ/আপেল