ঢাকা,  রোববার
০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪

The Daily Messenger

হাতিয়ায় ইউএনও’র বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগে বন্ধ ফুটবল টুর্নামেন্ট

হাতিয়া (নোয়াখালী) প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৭:৩২, ১৩ জুলাই ২০২৪

আপডেট: ১৮:৩৮, ১৩ জুলাই ২০২৪

হাতিয়ায় ইউএনও’র বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগে বন্ধ ফুটবল টুর্নামেন্ট

ছবি: মেসেঞ্জার

অনিয়ম, অবস্থাপনায় বন্ধ হয়ে গেল নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জাতীয় গোল্ডকাপ ফুটবল টূর্ণামেন্ট ২০২৪। উক্ত খেলা বন্ধ হওয়ার কারণ হিসেবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার স্বেচ্ছাচারিতাকে দায় করছেন অনেকে।

পূর্ব নির্ধারিত সময় অনুযায়ী শনিবার (১৩ জুলাই) সকালে দ্বীপ সরকারি কলেজ মাঠে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জাতীয় গোল্ডকাপ ফুটবল টূর্ণামেন্ট (অনূধ্ব-১৭) টূর্ণামেন্টের উদ্বোধন হওয়ার সকল প্রস্তুতি থাকা সত্বেও খেলার সাথে জড়িত অনেকে মাঠে অনুপস্থিত থাকায় ভেস্তে যায় উদ্বোধনের সকল আয়োজন।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের মাঠে নির্ধারিত মঞ্চে অনেক সময় ধরে অপেক্ষা করছেন। এসময় তাদের পাশে রেফারিদের জন্য তৈরি করা বক্সে অপেক্ষা করেন কয়েকজন রেফারিও। কিন্তু উদ্বোধনী ম্যাচের দুটি দলের কোন দলই মাঠে উপস্থিত না হওয়ায় খেলা শুরু করা যায়নি। উদ্বোধনী ম্যাচে হাতিয়া পৌরসভা একাদশ ও বুড়িরচর ইউনিয়ন একাদশ অংশগ্রহন করার কথা ছিল।

মাঠে উপস্থিত না হওয়ার বিষয়ে হাতিয়া পৌর মেয়র কে এম ওবায়েদ উল্যা বলেন,  এই টূর্ণামেন্টের প্রথম থেকে অব্যাস্থপনা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। খেলার পরিচালনার দায়িত্ব থাকার কথা ক্রীড়া সংস্থার হাতে। কিন্তু দেখা যায় বিভিন্ন বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের লোকজন সবকিছু দেখবাল করছেন। যা আমার কাছে তেমন একটা ভালো মনে হয়নি। এছাড়া খেলা পরিচালনার জন্য টাকা চেয়ে নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে বার বার ফোন দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু এই খেলাটি পরিচালনার জন্য সরকারি ভাবে বরাদ্ধ রয়েছে।

উদ্বোধনী ম্যাচে অংশ না নেওয়া বুড়িরচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফখরুল ইসলাম বলেন, খেলা পরিচালনায় যে অর্থ ব্যায় হবে তা উপজেলা পরিষদ সমন্বয় সভায় আলোচনা করার কথা। কিন্তু চেয়ারম্যানদের সাথে আলোচনা না করে  খেলা শুরু হওয়ার আগেই  ইউএনও অফিস থেকে বার বার ফোন দেওয়া হচ্ছে টাকার জন্য। আমরা স্ব স্ব ইউনিয়নের দলের জন্য ব্যায় করবো। আবার ইউএনও অফিসেও টাকা দিতে হবে যা অত্যন্ত অমানবিক। এজন্য আমি খেলায় অংশগ্রহন না করার সিদ্বান্ত নিয়েছি।

উপজেলা ভিত্তিক এই ট’র্ণামেন্টে  প্রতিটি ইউনিয়ন থেকে একটি করে ১১টি, পৌরসভার একটি সহ ১২টি দল অংশগ্রহন করার কথা ছিল। উদ্বোধনী ম্যাচকে কেন্দ্র করে দ্বীপ সরকারি কলেজ মাঠে বিশাল প্যান্ডেল তৈরি করা হয়। রেপারি, খেলোয়াড় এবং অতিথিদের জন্য ও তৈরি করা হয় ভিন্ন ভিন্ন মঞ্চ। উদ্বোধনী ম্যাচের আয়োজন হিসাবে বর্ণিল ভাবে সাজানো হয় মঞ্চ। মাঠের উত্তর পাশে বিশাল সাউন্ডবক্স দিয়ে করা হয় ধারাভাস্যের ব্যবস্থা।  কিন্ত  সকল আয়োজন ব্যস্তে যায় দু দলের খেলোয়াড়রা মাঠে না আসায়।

এদিকে হাতিয়া ক্রীড়া সংস্থার সাধারন সম্পাদক ও টুর্নামেন্ট পরিচালনা কমিঠির সদস্য সচিব আইয়ুব উল্লাহ বলেন,  জাতির জনকের নামে দেওয়া টুর্নামেন্টে স্বচ্ছ করার প্রয়োজন ছিল। টুর্নামেন্ট পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব পদাধিকার বলে আমি। কিন্তু খেলা পরিচালনায় করা ব্যায়ে কোথাও আমার সম্পৃক্ততা রাখা হয়নি। এমনকি খেলা পরিচালনার জন্য চেয়ারম্যানদের কাছ থেকে যে অর্থ নেওয়া হচ্ছে তাতেও আমার সম্মতি নেওয়া হয়নি। এতে পুরো বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা স্বেচ্ছাচারিতার পরিচয় দিয়েছেন। এজন্য আমি নিজেও এই খেলায় সম্পৃক্ত না থাকার বিষয়ে মতামত দিয়ে এসেছি।

এদিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শুভাশীষ চাকমা ১২ জুলাই প্রশিক্ষনের জন্য ভারত যাওয়ার উদ্দেশ্যে হাতিয়া ত্যাগ করেন। ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তার দায়িত্বে আছেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) মিল্টন চাকমা। সকালে খেলা বন্ধ হওয়ার বিষয়ে কথা বলতে নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে গিয়ে দেখা যায় মিল্টন চাকমা খেলার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে যাওয়ার জন্য অপেক্ষা করছেন।  

এই বিষয়ে তিনি জানান, খেলা বন্ধ হওয়ায় আমি অনেকটা বিব্রত। আমি যোগদান করেছি তিনদিন আগে। এখনো অনেক কিছু বুঝে উঠতে পারিনি। তবে খেলা বন্ধ হওয়ার বিষয়ে নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে হোয়াটসএ্যপে যোগাযোগ করা হয়েছে তিনি কোন নির্দেশনা এখনো দেননি। চেয়ারম্যানদের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার বিষয়ে আমি কিছুই জানিনা। তবে

সেখানে উপস্থিত নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের একাউনটেন্ট ক্লার্ক নজরুল ইসলাম শাহিন জানান, ইউএনও স্যারের নির্দেশে চেয়ারম্যানদের কাছে খেলা পরিচালনার জন্য টাকা চাওয়া হয়েছে তা সত্য। তবে কেউ দিতে না চাইলে তাতেও আপত্তি নেই।

মেসেঞ্জার/জিল্লুর/সৌরভ

×
Nagad