ঢাকা,  রোববার
০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪

The Daily Messenger

ইউপি সদস্যের নামে মামলা, ঘটনা সম্পর্কে জানে না সাক্ষীরা

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৫:৫৪, ১৫ জুলাই ২০২৪

আপডেট: ১৬:০৩, ১৫ জুলাই ২০২৪

ইউপি সদস্যের নামে মামলা, ঘটনা সম্পর্কে জানে না সাক্ষীরা

ছবি : মেসেঞ্জার

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার এক ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে পাঁচ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা ছিনতাই ও নারী নির্যাতন সহ বিভিন্ন অভিযোগ করা হয়েছে ঠাকুরগাঁও জেলা আদালত। সেই অভিযোগে যাদেরকে সাক্ষী করা হয় সেই সাক্ষীরাই জানে না ঘটনা কি ঘটেছিল। তাদেরকে যে সাক্ষী করা হয়েছে সেটাও জানে না।

এমন চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছে শনিবার (২২ জুন) ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার গড়েয়া ইউনিয়নের মিলনপুর গ্রামে। পরে এই বিষয়ে এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয় যে মামলার সাক্ষীরা মামলা সম্পর্কে কিছুই জানে না।

জেলা আদালতে দেওয়া অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, মোঃ আব্দুর রব সহ বেশ কয়েকজন মিলনপুর গ্রামের রাম কুমারের বাড়ি থেকে পাঁচ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা লুটপাট করে এবং বাসায় থাকা নারীদের নির্যাতন করে। এ ঘটনায় ৬/৭ জনকে সাক্ষী করে রামকুমারে একটি অভিযোগ দায়ের করেন।

সেই অভিযোগে যাদেরকে সাক্ষী করা হয় সাক্ষীরা নিজেরাই জানে না মামলা কি বিষয়ে। তাদেরকে যে সাক্ষী করা হয়েছে এই সম্পর্কেও তারা অবগত নন। এখন সাক্ষীরা নিজেই বিব্রতকর অবস্থায় রয়েছে। মামলার সাক্ষী থেকে তারা এখন নিজেরাই অব্যাহতি চায়।

এ বিষয়ে সাক্ষী মোঃ আব্দুল মোতালেব বলেন, আমি ঘটনা সম্পর্কে কিছুই জানিনা। আমার নাম কে বা কাহারা দিয়েছে সেটা আমি জানিনা। ঘটনার সময় ওই স্থানে আমি ছিলাম না এবং মামলা যে হয়েছে সেটাও আমি এখন পর্যন্ত জানিনা।

ওই মামলার আরেক সাক্ষী মোঃ গিয়াস উদ্দিন বলেন, শেষ বয়সে আসে মিথ্যা কথা বলবো নাকি। মামলা হয়েছে সেটা আমি জানিনা। মামলার ঘটনার সময় ঘটনাস্থলে আমি ছিলাম না এবং টাকা নিয়েছে কিনা সেই সম্পর্কে আমি কিছুই জানিনা। আমার নামে মিথ্যা বলা হয়েছে। আমার নাম দিয়েছে তাকে গিয়ে বলেন সে কই থেকে আমার নাম পেল।

মামলার সাক্ষী মিরাজ আলী বলেন, ঘটনা যেদিন ঘটে সেদিন আমি খোঁচাবারি বাজারে ছিলাম। ঘটনার স্থানেই তো আমি ছিলাম না তাহলে মামলা সাক্ষী হলাম কিভাবে। ঘটনার সময় যেহেতু আমি খোঁচাবাড়িতে ছিলাম সেহেতু ঐ মামলা সম্পর্কে আমি কিছুই জানি না।

ঠাকুরগাঁও গড়েয়া ইউনিয়নের মিলনপুর গ্রামের ইউপি সদস্য মোঃ আব্দুর রব বলেন, রামকুমার এলাকায় সব সময় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে থাকে। আমি সহ কয়েকজনের নামে যে মিথ্যা অভিযোগ দেওয়া হয়েছে কোর্টে সেটা এলাকার সবাই জানে।

তিনি আরও বলেন, আমার বাড়িতে এমন কোন ঘটনাই ঘটেনি। তার বাড়িতে মূলত জমি জায়গা নিয়ে একটি সমস্যা হয়েছিল। সেই সমস্যার জন্য এলাকার গণ্যমান্য লোকজন সহ আমরা সেখানে বসে সমাধান করে দিয়েছি। এই সমাধান হয়তো তার মন মত হয়নি সেইজন্য আমাদেরকে ফাঁসানোর উদ্দেশ্যেই সে এই মিথ্যা মামলা করেছে।

মিথ্যা মামলা দিয়ে আমাদেরকে হয়রানি করা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, এটার সঠিক তদন্ত করে যেন বিচার করা হয়, এটাই আমার প্রত্যাশা। আপনারা এখানে এসে দেখেছেন যে সাক্ষীরা নিজেরাই জানে না আসল ঘটনা কি।

মামলার বাদি রামকুমারকে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, সাক্ষীরা ভয়ে মিথ্যা কথা বলতেছে। তারা বিষয় গুলো জানে কিন্তু এখন স্বীকার করতেছে না।

এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁও সদর সদর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফিরোজ ওয়াহিত বলেন, মামলাটি বর্তমানে কোর্টে রয়েছে। এটা নিয়ে তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে বলা যাবে ঘটনা কি ঘটেছিল।

ঠাকুরগাঁও জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এ্যাড. জয়নাল আবেদীন বলেন, সাক্ষীরা যদি ঘটনা না জানেন তাহলে মামলাটি মিথ্যা। সে ক্ষেত্রে যিনি বাদী তার বিরুদ্ধে ২/১১ অর্থ্যাৎ সে পরিমাণ শাস্তির বিধান।

মেসেঞ্জার/আলমগীর/আপেল

×
Nagad