ছবি : মেসেঞ্জার
কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে বউকে নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে দ্বিতীয় স্বামীর ঘুসির আঘাতে প্রথম স্বামী ও সাবেক ইউপি সদস্য আনারুল ইসলাম আনাকে (৫০) হত্যার অভিযোগ উঠেছে।রোববার (১৪ জুলাই) রাত ১১ টার দিকে উপজেলার কয়া ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বানিয়াপাড়া গ্রামে মারপিটের ঘটনা ঘটে।
কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার (১৫ জুলাই) দুপুরে তার মৃত্যু হয়েছে।
নিহত আনারুল ইসলাম আনা কয়া ইউনিয়নের বানিয়াপাড়া গ্রামের মৃত নওশের আলীর ছেলে। তিনি কয়া ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য ছিলেন। অভিযুক্ত শাহীন একই এলাকার লুৎফর আলীর ছেলে।
নিহতের পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রায় দুই বছর আগে সাবেক ইউপি সদস্য আনারুলের স্ত্রী পাপিয়া খাতুন তার পরকীয়া প্রেমিক শাহিনের সাথে পালিয়ে বিয়ে করেন। আনারুলের সাথে শাহীনের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। তাদের বাড়ি একই এলাকায়।
ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকায় আনারুলের বাড়িতে নিয়মিত যাতায়াত করতেন শাহিন। আনারুলের স্ত্রী পাপিয়ার সাথে শাহিনের পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। পরে পালিয়ে বিয়ে করে তারা। সেই থেকে ইউপি সদস্যের সাথে শাহিনের দ্বন্দ্ব শুরু হয়।
তারা জানান, পূর্ব বিরোধের জের ধরে রোববার রাতে বানিয়াপাড়া সরকারি মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে পাকা রাস্তার উপর শাহিন, শাহিনের চাচা মুক্তার হোসেন, মারুফ, মোস্তাকিন, তজিম উদ্দিন ও আবু বক্কর পরিকল্পিতভাবে আনারুলের সাথে বাকবিতন্ডায় লিপ্ত হয়।
এক পর্যায়ে শাহিন ও তার লোকজন আনারলকে কিল ঘুসি মেরে গুরুতর আহত করে। আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার (১৫ জুলাই) তার মৃত্যু হয়।
স্থানীয় ৫ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ছানোয়ার হোসেন বলেন, আনারুলের বন্ধু মানুষ ছিল শাহীন। ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকাই এবং একই এলাকায় দুজনের বাড়ি হওয়ায় শাহীন প্রায়ই আনারুলের বাড়ি যেতেন। এক পর্যায়ে আনারুলের স্ত্রী পাপিয়ার সাথে শাহিনের পরকীয়া সম্পর্ক হয়। প্রায় দুই বছর আগে তারা পালিয়ে বিয়ে করেন।
এরপর থেকে তাদের দুজনের মধ্যে দ্বন্দ্ব শুরু হয়। সেই দ্বন্দ্বের জেরে শাহীন ও তার লোকজন গতকাল রাত ১১টার দিকে আনারুলকে মারপিট করে গুরুতর আহত করে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার দুপুরে মারা গেছে।
নিহতের পরিবারের সদস্যরা বলেন, বউ নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে শাহিন, শাহিনের চাচা মুক্তার হোসেন, মারুফ, মোস্তাকিন, তজিম উদ্দিন ও আবু বক্কর পরিকল্পিতভাবে আনারুলকে হত্যা করেছে। আমরা হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।
এ বিষয়ে কথা বলার জন্য অভিযুক্তদের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তাদের পাওয়া যায়নি।
কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আকিবুল ইসলাম জানান, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় কয়রা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক ওয়ার্ড সদস্য মারা গেছেন। মরদেহ ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। অপ্রীতিকর যে কোনো ঘটনা প্রতিরোধে পুলিশ কাজ করছে। অপরাধীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মেসেঞ্জার/রাজু/আপেল