ঢাকা,  রোববার
০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪

The Daily Messenger

বিলাইছড়িতে শিশু সদন থেকে পালিয়ে যাওয়া ৪ শিশু উদ্ধার

বিলাইছড়ি প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২০:১৬, ১৬ জুলাই ২০২৪

আপডেট: ২২:৩৮, ১৬ জুলাই ২০২৪

বিলাইছড়িতে শিশু সদন থেকে পালিয়ে যাওয়া ৪ শিশু উদ্ধার

ছবি : মেসেঞ্জার

বিলাইছড়ি বাজার সার্বজনীন বৌদ্ধ বিহার ও পালার লিংক সেন্টার শিশু সদন হতে পালিয়ে যাওয়া ৪ শিশুকে উদ্ধার করেছে বিলাইছড়ি থানা পুলিশ। মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) আনুমানিক ৭ টা ১৫ তে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ধুপ্যাচর এলাকা থেকে তাদেরকে উদ্ধার করে পুলিশ। পরে অভিভাবকদের হাতে পালিয়ে যাওয়া শিশুদের তুলে দেওয়া হয়।

উদ্ধার হওয়া শিশুরা হলেন, বিমল চাকমার ছেলে তপন চাকমা (১৬), বিনয় শংকর চাকমার ছেলে রিন্টু চাকমা (১২),  ধাবারাং চাকমার ছেলে রাজু চাকমা (১২)। তারা তিনজনই বরকল উপজেলার বাসিন্দা। এবং রিপন চাকমার ছেলে সুভূতি চাকমা (১২), সে জুরাছড়ি উপজেলার বাসিন্দা।

বিলাইছড়ি থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ আকতার হোসেন ৪ শিশু উদ্ধারের  সত্যতা নিশ্চিত  করেছেন। তিনি জানান, পালিয়ে যাওয়া ৪ শিশুকে অনেক খোজা খূজির পর না পাওয়ায় (১৫ জুলাই) পালবার লিংক সেন্টারের সভাপতি এই ৪ শিশু পালানোর বিষয়ে বিলাইছড়ি থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন।

যার জিডি নং ৫৬৮। এর প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার সকালে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তাদেরকে বিলাইছড়ি উপজেলার ধুপ্যাচর পাড়া থেকে বিলাইছড়ি থানা পুলিশ উদ্ধার করে। তিনি আরও জানান, শিশুদের দেয়া স্বীকারোক্তি অনুযায়ী তারা মা-বাবার কথা মনে পড়ায় এবং শিশু সদনে থাকতে ভালো নালাগায় স্বেচ্ছায় তারা বাড়িতে যাওয়ার উদ্দেশ্যে পালিয়ে যায়। পরে পথ চিনতে না পারায় তারা ধুপ্যাচরে এসে অবস্থান করে। 

বিলাইছড়ি বাজার সার্বজনীন কেন্দ্রীয় বৌদ্ধ বিহার এর অধ্যক্ষ ও পালবার লিংক সেন্টার শিশুসদনের সভাপতি দেবতিষ্য ভিক্ষু জানান, ১৫ জুলাই দিবাগত রাত আনুমানিক ৩ঃ০০ টার সময় নিজ ব্যবহৃত  কাপড়চোপড় ব্যাগ নিয়ে পাইপ লাগানোর জন্য ভাঙ্গা অংশ দিয়ে পালিয়ে যায়।

কারণ নিরাপত্তার স্বার্থে রাতে গেইটে তালা লাগানো থাকে। পালিয়ে যাওয়া ৪ শিশুর মধ্যে তপন চাকমা, রিন্টু চাকমা ও রাজু চাকমা তিনজনই শ্রমণ (বৌদ্ধ ভিক্ষুদের থেকে ছোটদের শ্রমণ বলা হয় তারাও ভিক্ষুদের মত রং বস্ত্র পরে) অবস্থায় ছিল। তারা বুদ্ধের বিনয় না মেনে নিজেরাই রং বস্ত্র খুলে পেন্ট পরিধান করেছে।

কি কারণে তারা নাবলে চলে গেছে সেটি তিনি বুঝতে পারছেননা। তিনি আরও জানান, বিলাইছড়ির পুলিশ তাদেরকে উদ্ধার করে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আমার উপস্থিতিতে অভিভাবকের হাতে তুলে দেয়। তিনি জানান, আমার একটাই দুঃখ লাগছে, সেটা হলো মূল ঘটনা না জেনে এবং আমার সাথে কথা নাবলে সোশাল মিডিয়ায় আমার নামে বিভিন্ন কিছু মন্তব্য করা হচ্ছে।

এমনকি শিশু পাচারকারী বলেও অনেকে মন্তব্য করছে। আমিতো একজন বৌদ্ধ ভিক্ষু, আমার ধর্মের বিনয় কখনো সেটা অনুমোদন করেনা। 

উদ্ধার হওয়া ৪ শিশু ও অভিভাবকদের সাথে সরাসরি কথা হলে তারা স্বেচ্ছায় পালিয়ে গেছে বলে দ্যা ডেইলি ম্যাসেনজার প্রতিনিধিকে জানান। তারা আরও জানান, যেহেতু তারা এখানে থাকতে চাচ্ছেনা, তাই ভান্তের সাথে কথা বলে তারা তাদেরকে বাড়িতে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানান। কারণ তাদের অমতে কোন সিদ্ধান্ত নিলে পরে কোন অঘটন ঘটবেনা সেটার কোন গ্যারান্টি নাই।

প্রসঙ্গত, পালবার লিংক সেন্টার শিশুসদনটি বিলাইছড়ি বাজার সার্বজনীন কেন্দ্রীয় বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ দেবতিষ্য ভিক্ষু ২০১৭ সালে প্রতিষ্ঠা করেন। এটি বিহারের সীমানায় অবস্থিত। তিনি প্রতিষ্ঠাতা এবং প্রতিষ্ঠানের সভাপতি। তিনি বিদেশী বিভিন্ন ডোনারের সহযোগীতায় এ্ই প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনা করেন।

পালানো ৪ শিশুসহ শিশুসদনটিতে মোট ৯০ জন ছাত্র রয়েছে। যারা বিলাইছড়ি ছাড়াও বিভিন্ন উপজেলার দূর্গম এলাকা থেকে এসে থাকছে। যাদেরকে তিনি বিনামূল্যে অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। এবং পড়তে চাইলে তিনি মাস্টার্স পর্য়ন্ত পড়ান।

মেসেঞ্জার/অসীম/তারেক

×
Nagad