ঢাকা,  রোববার
০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪

The Daily Messenger

টাঙ্গাইলে

পিয়নের বিরুদ্ধে প্রকল্পের কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি 

প্রকাশিত: ১০:৫০, ১৭ জুলাই ২০২৪

পিয়নের বিরুদ্ধে প্রকল্পের কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

ছবি : মেসেঞ্জার

টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলা পরিষদের অফিস সহায়ক (পিয়ন) মো. কামরুলের বিরুদ্ধে চেয়ারম্যানের সাক্ষর জাল করে বিভিন্ন প্রকল্প এবং উন্নয়নমূলক কাজের তিন কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগের প্রতিকার চেয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) প্রধান কার্যালয়ে আবেদন করেছেন উপজেলার সচেতন নাগরিক সমাজ।

অনুসন্ধানে জানা যায়, অফিস সহায়ক কামরুল তার সহদর ভাই লুৎফর রহমান কালু, উজ্জল এবং তার মায়ের নামে একাধিক ব্যাংকে প্রায় ৪০ লাখ টাকা জমা রেখেছে। পরবর্তীতে টাকা গুলো উত্তোলন করেছে বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়। এলাকাবাসীরা জানান, তিনি কাগমারী পাড়া গ্রামে কামরুল, তার ভাই এবং তার মায়ের নামে অন্য মানুষের কাছ থেকে ২০ লক্ষ ৫০ হাজার টাকার জমি বন্দকী নিয়েছেন।

এদের মধ্যে দিলরুবা ইয়াসমিন সালমা, আক্তার, গুডু আজিজ শেক সহ আরো অনেকের কাছ থেকে জমি বন্দকী নিয়েছেন। বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় ও অনলাইনে নিউজ প্রকাশ হওয়ায় তাদের একাউন্ট থেকে টাকা উত্তোলন করে তার শুশুর বাড়িতে রেখেছে। আরও জানা যায় টাকা গুলো শুশুর বাড়িতে কোথায় রেখেছে এবং সুধে কোথায় কোথায় ব্যাবহার হচ্ছে এ বিষয়ে অনুসন্ধান চলছে যা পরবর্তীতে প্রকাশ করা হবে।

কামরুরলর নামে উপজেলার সচেতন নাগরিকবৃন্দ দুর্নীতি দমন কমিশন বরাবরে আবেদন করেন এবং আবেদন পত্রে উল্লেখ করা হয়, মো. কামরুল ইসলাম চেয়ারম্যানের স্বাক্ষর জাল করে বিভিন্ন প্রকল্প এবং উন্নয়ন মূলক কাজ থেকে ৩ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। অভিযোগপত্র থেকে জানা যায়, ভূঞাপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোছাঃ নার্গিস বেগম এর অফিস সহায়ক মো. কামরুল ইসলাম গরিব ঘরের সন্তান তার এক ভাই চায়ের দোকান করেন। উপজেলা পরিষদের চেযারম্যান আব্দুল হালিমের মৃত্যুর পর তার স্ত্রী মোছাঃ নার্গিস বেগম উপজেলা পরিষদের চেয়াম্যান পদে দায়িত্ব গ্রহন করেন।

তিনি নতুন চেয়ারম্যান হওয়ায় কিছু বুঝতে না পারার সুযোগে উপজেলার বিভিন্ন প্রকল্প, বিভিন্ন উন্নয়ন মূলক প্রকল্প শুধু মাত্র কাগজ কলমে দেখিয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান মোছাঃ নার্গিস বেগমের স্বাক্ষর জাল করে ৩ কোটি টাকা হাতিয়ে নেয় অফিস সহায়ক মো. কামরুল। এ বিষয়ে চেয়াম্যানকে অবগত করলে তিনি চুপ থাকেন। অভিযোগপত্র থেকে আরো জানা যায়, অফিস সহায়ক কামরুল ঢাকা মোহাম্মদপুরে ২১০০ স্কয়ার ফিটের একটি ফ্ল্যাট কিনেছে। যার মূল্য ১ কোটি ২০ লক্ষ টাকা। গাজীপুর উপজেলা শ্রীপুরের মাধখোলা শিল্প এলাকায় ৬ শতাংশ জমি কিনেছে। যার মূল্য ৭০ লক্ষ টাকা। ১০ লক্ষ টাকা অফিস সহায়ক কামরুলের বিভিন্ন একাউন্টে জমা রয়েছে।

এ বিষয়টি সাবেক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অবিহত হলে তিনি উপজেলার চেয়ারম্যানের সাথে আলোচনা করেন। তিনি বলেন অফিস সহায়ক কামরুলকে বদলী করা উচিত। উপজেলা চেয়ারম্যান তার বদলীর বিরোধিতা করেন।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত অফিস সহায়ক কামরুল ইসলাম জানান, আমার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ মিথ্যা ও ষড়যন্ত্র। এব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মামুনূর রশিদ বলেন, অভিযোগটি দুর্নীতি দমন কমিশনে দেয়া হয়েছে। আমি একটি অনুলিপি পেয়েছি। দুর্নীতি দমন কমিশন নিজেরা পদক্ষেপ নিতে পারে অথবা আমাকে দায়িত্ব দিলে আমি পদক্ষেপ গ্রহণ করবো।

এ বিষয়ে বক্তব্য নিতে মো. কামরুলের মোবাইল ফোনে বার বার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেন নি এবং ক্ষুদেবার্তা পাঠিয়েও কোন জবাব পাওয়া যায়নি।

ভূঞাপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মামুনুর রশিদ জানান, অভিযোগটি দুর্নীতি দমন কমিশনে দেওয়া হয়েছে- তাকে শুধু অনুলিপি দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন(দুদক) নিজেরা ব্যবস্থা নিতে পারে বা তাকে দায়িত্ব দিতে পারে। তাকে দায়িত্ব দিলে তিনি যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।

ভূঞাপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোছা. নার্গিস বেগম জানান, অফিস সহায়ক মো. কামরুলের বিরুদ্ধে দুদকে অভিযোগের বিষয়ে তিনি জেনেছেন। এ বিষয়ে দুদক তদন্ত করছে- তদন্তে দোষী প্রমাণিত হলে তিনি শাস্তি পাবেন।

তার সাক্ষর জ্বাল বা নকল করার বিষয়ে তিনি জানান, তিনি এখনও জানেন না কোন কোন জায়গায় সাক্ষর দেওয়া হয়েছে- সাক্ষর দেখে তিনি বলতে পারবেন সাক্ষরগুলো তার কি-না।

মেসেঞ্জার/শফিকুজ্জামান/আজিজ

×
Nagad