ঢাকা,  রোববার
০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪

The Daily Messenger

আমাকে গুলি করেন বলে দুহাত তুলেছিল সাঈদ 

রংপুর ব্যুরো 

প্রকাশিত: ১১:৫৬, ১৭ জুলাই ২০২৪

আমাকে গুলি করেন বলে দুহাত তুলেছিল সাঈদ 

ছবি : মেসেঞ্জার

সোমবার (১৫ জুলাই) তখন বেলা পৌনে ২ টা। পুলিশ কোটা আন্দোলনকালীদের ছেত্রভঙ্গ করতে ছুড়ছে গুলি, টিয়ারশেল। আর ছাত্রলীগ হেলমেট পড়ে মুখে গামছা বেধে দেশয়ি অস্ত্র নিয়ে তাদের দিচ্ছে ধাওয়া।

এমন মুহুতেই রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ নং গেটের সামনে দাড়িয়ে আন্দোলনকারীদের নেতা আবু সাইদ পুলিশ এবং ছাত্রলীগকে উদ্দেশ্যে করে বলে আপনারা আমার ভাইবোনের উপর আর গুলি ছুড়বেন না। ওদের মারবেন না। এরপর দুই হাতে তুলে বলে আপনারা আমাকে গুলি করেন, তবুও ওদেরকে গুলি করবেন না। সাথে সাথে ১ নং গেট থেকে পুলিশ তার বুক বরাবর ৩ রাউন্ড ছররাগুলে ছুড়লে সামান্য দূরে গিয়ে একটু পরেই মাটিতে লুটিয়ে পড়ে সাঈদ।

শিক্ষার্থীরা তোকে দ্রুত রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালে ভর্তি করায়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় আবু সাঈদ। তিনি রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শেষ বর্ষের ছাত্র। তার বাড়ি রংপুরের পীরগঞ্জের জাফরপাড়ায়। পিতা মকবুল হোসেন আওয়ামীলীগের সক্রিয়কর্মী।

আগের রাতে নিজের ফেসবুকে স্ট্যাটাসে দিয়েছিলেন তাতে লেখা ছিল, যদি আজ শহীদ হয়, তাহলে আমার নিথর দেহটা রাজপথে ফেলে রাখবেন। ছাত্র সমাজ যখন মিছিল নিয়ে রুমে ফিরবে তখন আমাকেও বিজয়ী করে ঘরে ফিরবেন। একজন পরাজিতের লাশ কখনও তার মা বাবা গ্রহন করবে না। আদনান আবীর, সমন্বয়ক বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। 

বিকেলে প্রধান ফটকের সামনে নাম গোপন করার শর্তে সাঈদের এক বন্ধু জানান, ‘ সাঈদ খুব মেধাবী ছাত্র ছিল। বিভাগে সে ছিল সেরা। কোটা আন্দোলনের শুরু থেকেই সাঈদ ছিল সামনের সাড়িতে। এর আগেও ছাত্রলীগ তাকে কোটা আন্দোলন করার জন্য মেরেছিল। সব সময় জাতীয় পতাকা নিয়ে মিছিলের সামনে থাকতো। ছাত্রলীগ ওকে খুব টার্গেট করেছিল। ঘটনার সময় আমি ওখানে ছিলাম। পুলিশ যখন তাকে গুলি করে তখন ছাত্রলীগ নেতারা পাশে ছিলেন। এবং গুলি করতে বলেছিলেন। এসময় একজন পুলিশ গুলি করতে না চাইলে পাশে থাকা এক অফিসার বলছিলেন। আমি করতে বলছি গুলি কর। 

এ ঘটনায় পুরো নগরীতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। পীরগঞ্জে সাইদের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। 
 

মেসেঞ্জার/মান্নান/আজিজ

×
Nagad