ছবি : মেসেঞ্জার
কুষ্টিয়ায় কোটা সংস্কার আন্দোলন নিয়ে শহরব্যাপী ছিল দিনভর আন্দোলনকারী-ছাত্রলীগে উত্তেজনা। বেলা শেষে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ভাঙচুর ও জ্বালিয়ে দেয়া হয় অন্তত ৮টি মোটরসাইকেল।
বুধবার (১৭ জুলাই) সন্ধ্যায় শহরের মজমপুর গেটে দৌলতদিয়া-রাজশাহীগামী যাত্রীবাহী সাটেল ট্রেন থামিয়ে তাতে হামলা চালানো হয়। গোটা শহর যেন রণক্ষেত্রে পরিনত হয়। সন্ধ্যায় সারাদিন শান্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের অ্যাকশনে যেতে দেখা যায় কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের ওপর।
এর আগে বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে কুষ্টিয়া শহরের মজমপুর রেলগেটে জড়ো হন কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীরা। কুষ্টিয়া শহরের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা এতে অংশ নেন। তাদের প্রতিহত করতে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরাও জড়ো হতে থাকে কুষ্টিয়া পৌরসভার বিজয় উল্লাস চত্বরে। উত্তপ্ত পরিস্থিতি দেখা দিলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের শক্ত অবস্থানে যায়। এরপর বিকেল ৪টার দিকে কোটা সংস্কার আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে চৌড়হাস অভিমুখে রওনা হন।
এ সময় কয়েক দফা তাদের ওপর হামলার চেষ্টা চালায় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। বিকেল ৫টার কিছু সময় পর আন্দোলনকারীরা চৌড়হাস মোড়ে সড়ক বন্ধ করে অবস্থান নেয়। ঠিক এমন সময় চৌড়হাস ফুলতলার মোড়ে মোটরসাইকেলযোগে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা চালানোর চেষ্টা করে। আন্দোলনকারীরা ছাত্রলীগ কর্মীদের ধাওয়া দিলে তারা মোটরসাইকেল ফেলে পালিয়ে যায় তারা। পরে আন্দোলনকারীরা ৮টি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেয়।
সন্ধ্যার কিছু সময় আগে বিক্ষোভ মিছিল সহকারে পুনরায় মজমপুর রেলগেটে জড়োহন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। রেলগেট বন্ধ করে সেখান অবস্থান নেন তারা। এসময় রাজবাড়ি জেলার গোয়ালন্দ থেকে রাজশাহীগামী যাত্রীবাহী সাটেল ট্রেন আটকে ব্যাপক ভাঙচুর চালানো হয় এবং পাথর নিক্ষেপ করা হয়। এ সময় কামরায় প্রবেশ করে যাত্রীদের মারধরও করা হয়। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে হামলাকারীদের ওপর লাঠিচার্য করে পুলিশ। পুলিশের ওপরও ইটপাটকেল ও পাথর নিক্ষেপ আন্দোলনকারীরা।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত জাহিদ হোসেন জানান, আমরা অটোরিকশায় চৌড়হাসের দিকে যাচ্ছিলাম। এ সময় ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা আমাদের ওভারটেক করে চলে যায়। কিছুক্ষণ পরই দেখি তারা পিছু হটছে। এরপর ঘটনাস্থলে এসে দেখলাম সড়কে পড়ে থাকা মোটরসাইকেলে আগুন জ্বলছে।
আন্দোলনকারীদের একজন তাসিম খান জানান, আমরা শান্তিপূর্ণভাবে কোটা সংস্কার আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছিলাম। আমাদের ওপর ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা দফায় দফায় হামলা চালানোর চেষ্টা করে।
সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পলাশ কান্তি নাথ জানান, বিকেল সাড়ে ৩টা থেকে ৫টা পর্যন্ত আন্দোলন শান্তিপূর্ণই ছিল। কিন্তু বিকেল ৫টার পর হঠাৎ অস্থির হয়ে ওঠে। ছাত্রলীগের কয়েকজন কর্মী মোটরসাইকেলযোগে আন্দোলনকারীদের কাছাকাছি পৌঁছালে আন্দোলনকারীরা তাদের ধাওয়া করে। এ সময় তাদের ফেলে যাওয়া ৮টি মোটরসাইকেল ভাঙচুর ও জ্বালিয়ে দেয়। সন্ধ্যায় মজমপুর রেলগেটে আন্দোলনকারীরা যাত্রীবাহী ট্রেন থামিয়ে তাতে হামলা চালায় এবং অগ্নিসংযোগের চেষ্টা করে। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে।
মেসেঞ্জার/রাজু /আজিজ