ঢাকা,  বুধবার
৩০ অক্টোবর ২০২৪

The Daily Messenger

জলাবদ্ধতা নিরসনে নেই উদ্যোগ

বগুড়ায় কাউন্সিলরের বাড়ির রাস্তা ঢালাই, পানিতে ভাসে জনগণ

বগুড়া ব্যুরো

প্রকাশিত: ১৯:০০, ১৮ জুলাই ২০২৪

বগুড়ায় কাউন্সিলরের বাড়ির রাস্তা ঢালাই, পানিতে ভাসে জনগণ

ছবি : মেসেঞ্জার

বগুড়ার নন্দীগ্রামে পৌরসভার প্রায় আড়াই লাখ টাকা ব্যয়ে কাউন্সিলরের বাড়ির দরজা পর্যন্ত রাস্তার উন্নয়ন হয়েছে। তিনি রাস্তার ওপর একটি ম্যানহোল করেছেন। কিন্তু পাশেই ক্ষনকের বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতায় দুর্ভোগে থাকেন ২০ টি পরিবারের মানুষ। ভারি বৃষ্টিতে পানি ওঠে বসতবাড়িতে।

স্থানীয়রা বলছেন, কাউন্সিলর নিজের উন্নয়ন করেছেন। তিনি থাকেন উচুঁতে আর জনগণ ভাসে পানিতে। জলাবদ্ধতা নিরসনে উদ্যোগ নেয়নি কেউ।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, নন্দীগ্রাম পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডের ওমরপুর মাদ্রাসা মসজিদ সংলগ্ন পূর্বপাড়ার মুখে চান মিয়ার বাড়ির সামনের ইট সোলিং রাস্তা পানিতে ডুবে আছে। পাশেই ওয়ার্ড কাউন্সিলর আকরাম হোসেনের বাড়ির রাস্তার উন্নয়ন করা হলেও সেখানে আর কোনো বসতবাড়ি নেই। শুধুমাত্র কাউন্সিলরের বাড়ি পর্যন্ত ঢালাই করা রাস্তাটি জনগণের উপকারে আসেনি।

নিজের বাড়ির জন্য নির্মাণ করা ঢালাই রাস্তার ওপর ম্যানহোল আর লোহার খুঁটি দিয়েছেন কাউন্সিলর। অথচ তার বাড়ির পাশেই ২০ পরিবারের চলাচলের একমাত্র রাস্তাটি বৃষ্টি হলেই ডুবে যায়। ময়লা-আবর্জনায় একাকার পানি বের হওয়ার মতো সেখানে ড্রেনেজ ব্যবস্থাও নেই। ফলে দুর্ভোগের পাশাপাশি ময়লাযুক্ত কালো পানিতে ডেঙ্গুর বংশ বিস্তারসহ বিভিন্ন রোগের প্রাদুর্ভাবের শঙ্কায় আছেন স্থানীয়রা।

ওমরপুর মাদ্রাসা মসজিদ সংলগ্ন পূর্বপাড়ার বাসিন্দা চান মিয়া হাফিজুর রহমান বলেন, মাটির রাস্তা গতবছর ইট সোলিং হয়েছে। আগে বৃষ্টির পানি পাশের পুকুরে নামতো। রাস্তায় ইট সোলিং করার পর পুকুরে পানি যাওয়ার পথ বন্ধ হয়ে যায়। ড্রেনেজ ব্যবস্থা থাকলে জলাবদ্ধতা থাকতো না।

জানা গেছে, চলতি ২০২৪ সালের শুরুতে নন্দীগ্রাম পৌরসভার এনপি/এডিপি অর্থায়নে লাখ ৩৯ হাজার ৬৩০ টাকা ব্যয়ে পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আকরাম হোসেনের বাড়ির দরজা পর্যন্ত আরসিসি রাস্তা নির্মাণ করা হয়।

অন্যদিকে ২০২৩ সালে এনপি/এডিপি অর্থায়নে ৯৮ হাজার ২৫৮ টাকা ব্যয়ে মাদ্রাসা মসজিদ সংলগ্ন পূর্বপাড়ার পুকুরপাড় পর্যন্ত রাস্তার ইট সোলিং করে।

পৌরসভার নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ শাহীন মাহমুদ জানান, সঠিক নিয়মেই রাস্তার উন্নয়ন হয়েছে। রাস্তা এখন সরকারের। কাউন্সিলর নিজের বাড়ির ম্যানহোল এবং লোহার খুঁটি রাস্তার ওপর রাখতে পারেন না।

নন্দীগ্রাম পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আকরাম হোসেন বলেন, আমার বাড়ির রাস্তার ম্যানহোলটি পৌরসভার মেয়রের কথায় হয়েছে। পূর্বপাড়ার চান মিয়ার বাড়ির সামনে দিয়ে যাওয়া ওই রাস্তাটি বিশেষ বরাদ্দের টাকা পেলে উচুঁ করা হবে। তবে জলাবদ্ধতা নিরসনে উদ্যোগ আছে কিনা, প্রশ্নে কোনো জবাব দেননি কাউন্সিলর।

পৌরসভার মেয়র মো. আনিছুর রহমান বলেন, কাউন্সিলরের বাড়ির ম্যানহোল আগে থেকেই ছিল। রাস্তার ওপর খুঁটি দিয়ে থাকলে সরেজমিনে গিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ব্যাপক বৃষ্টির পানিতে কয়েকটি পরিবারের ইট সোলিং রাস্তায় জলাবদ্ধতা হয়েছে। পানি নামার জায়গা কেউ দিতে চায় না। গতবছর পুকুরে পানি নামা নিয়ে ঝামেলা হলে পুলিশের সহযোগিতায় জলাবদ্ধতা নিরসনের ব্যবস্থা করেছি।

মেসেঞ্জার/আলমগীর/আপেল