ছবি : মেসেঞ্জার
প্রধানমন্ত্রী বলার পর বগুড়া পৌর মেয়র ও জেলা বিএনপির সভাপতি রেজাউল করিম বাদশার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে রোববার রাতে। এর আগে পুলিশ বাদী হয়ে ৯টি মামলা বিএনপি ও জামায়াত শিবিরের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের করলেও সভাপতির নাম ছিল না।
কোটা সংস্কার আন্দোলনের নামে বগুড়ায় ৪ দিনের বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি অফিসে ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ ও নাশকতার ঘটনায় বুধবার পর্যন্ত মোট ১২টি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
সবশেষ বগুড়া জেলা পোস্ট অফিসে ১৬ জুলাই ভাংচুরের ঘটনায় মঙ্গলবার রাতে পোস্টমাস্টার আলআমিন বাদী হয়ে ৫’শ জন অজ্ঞাত আসামি করে বগুড়া সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছে। মোট দায়েরকৃত ১২টি মামলায় ৭৭৬ জনকে আসামি করা হয়েছে। এ পর্যন্ত জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলী আজগর তালুকদার হেনা সহ ৯৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
জানা যায়, কোটা সংস্কার আন্দোলনের নামে বগুড়ায় গত ১৬ জুলাই প্রথম সহিংসতার ঘটনা ঘটে। ওইদিন আওয়ামী লীগ অফিস, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, পুলিশ বক্স, টাউন ক্লাব, আওয়ামী লীগ নেতা রনির অফিস ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। এছাড়াও ওইদিন জেলা পোস্ট অফিসের জানালার গ্লাস ভাংচুর করে।
এরপর ১৮ জুলাই থেকে ২০ জুলাই পর্যন্ত হামলা, ভাংচুর, অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ২১ জুলাই রোববার দুপুর পর্যন্ত ৯ টি মামলা দায়ের করা হয়েছিল। এসব মামলায় আসামি করা হয়েছে বিএনপি জামাত-শিবিরের নেতাকর্মীদের।
কিন্তু এসব মামলায় জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হেনা ও সাবেক সভাপতি ভিপি সাইফুল ইসলামকে আসামি করা হলেও বতমান জেলা কমিটির সভাপতি ও পৌর মেয়র রেজাউল করিম বাদশাকে আসামি করা হয়নি।
রোববার বিকেলে ঢাকায় প্রধানমন্ত্রী ব্যবসায়ী নেতাদের সভায় বক্তব্য বলেন, বগুড়ায় পৌর মেয়র বাদশা ও বিএনপির সম্পাদক হেনার নেতৃত্বে জেলা আওয়ামী লীগ অফিসসহ বিভিন্ন অফিসে নাশকতা চালানো হয়েছে।
এই বক্তব্যর পর রোববার রাতে জেলা আওয়ামী লীগের উপ দপ্তর-সম্পাদক খালেজুজ্জামান রাজা বাদী হয়ে জেলা বিএনপির সভাপতি ও পৌর মেয়র রেজাউল করিম বাদশাকে প্রধান আসামি করে বগুড়া সদর থানায় মামলা দায়ের করে। এরপর গত দুই দিনে আরও দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। বুধবার পর্যন্ত বগুড়ায় সহিংসতার ঘটনায় মোট ১২ টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। মোট গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৯৫ জন।
সোমবার রাতে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলী আজগর তালুকদার হেনাকে গ্রেপ্তার করে মঙ্গলবার বিকেলে আদালতে হাজির করা হয়। আদালতের বিচারক হেনা জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নিদের্শ দেন।
বগুড়া সদর থানার পরিদর্শক তদন্ত শাহীনুজ্জামান জানান, বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগ অফিসে হামলা ভাংচুর, আগুন দেয়া, পুলিশ ক্যাম্পে আগুন, সদর ভূমি অফিসে হামলা, বগুড়া রেলওয়ে স্টেশনে হামলা সহ বিভিন্ন সরকারী প্রতিষ্ঠানে হামলার ঘটনায় মঙ্গলবার পর্যন্ত সদরে ১২টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এসব মামলায় মোট ৭৭৬ জনকে আসামি করা হয়েছে।
আসামির মধ্যে রয়েছেন, জেলা বিএনপির সভাপতি এবং পৌর মেয়র রেজাউল করিম বাদশা, সাবেক সভাপতি ভিপি সাইফুল ইসলাম, শহর জামায়াতের আমীর আবিদুর রহমান সোহেল, সেক্রেটারি আব্দুল মালেক। তাই গ্রেপ্তার এড়াতে অনেকেই বাসা ছেড়েছেন বলে জানা গেছে।
রেজাউল করিম বাদশায় আগের ৯টি মামলায় আসামি না করার ব্যাপারে বলেন, আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে নাশকতার ঘটনায় মামলা হবে। সেই মামলায় তাকে আসামি করা হবে বলে আওয়ামী লীগ নেতারা জানিয়েছিলেন। সেজন্য আগের ৯টি মামলায় তাকে আসামি করা হয়নি।
আগের ৯ টি মামলায় জেলা বিএনপির সম্পাদক সম্পৃক্ততা থাকার কারণে তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। কিন্তু ওই মামলায় জেলা বিএনপির সভাপতি রেজাউল করিম বাদশার সম্পৃক্ততা কেন নেই এমন প্রশ্নের উত্তরের ফোন কেটে দেন।
মেসেঞ্জার/আলমগীর/আপেল