ঢাকা,  রোববার
০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪

The Daily Messenger

কোটা আন্দোলনের নাশকতায় শিক্ষার্থীরা জড়িত নয়: ডিআইজি

সাভার প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২১:২৫, ২৫ জুলাই ২০২৪

কোটা আন্দোলনের নাশকতায় শিক্ষার্থীরা জড়িত নয়: ডিআইজি

ছবি : সংগৃহীত

সৈয়দ নুরুল ইসলাম বলেন, এই নৈরাজ্য পরিস্থিতি যারা সৃষ্টি করেছিল তাদের মধ্যে কেউ ছাত্র ছিলোনা। খবর পেয়েছি সরকারবিরোধী বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, বিশেষ করে দুটি রাজনৈতিক দল সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছিল। 

এছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে জেলা পুলিশের উদ্যোগে মহাসড়কে মানুষের চলাচল নির্বিঘ্ন করতে হকারদের উচ্ছেদ করা হয়েছিল। সেই হকাররাও এই নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করার জন্য জ্বালাও-পোড়াও কাজে অংশগ্রহণ করেছে।  

তিনি বলেন, প্রকৃত পক্ষে সেই ছাত্র আন্দোলন হাইজ্যাক করা হয়েছিল। যারা নাশকতাকারী, যারা রাষ্ট্রবিরোধী, যারা সরকার এবং রাষ্ট্রকে নিশ্চিহ্ন করতে চায়, রাষ্ট্রকে অচল করে দিতে চায় তারাই মূলত ছাত্র আন্দোলন হাইজ্যাক করেছিল। এই সম্মিলিত গোষ্ঠীর মূলত উদ্দেশ্য ছিল রাষ্ট্রকে অকার্যকর করা ও সরকারকে উচ্ছেদ করা। অর্থাৎ রাষ্ট্রদ্রোহিতার কাজটাই তারা করেছে। 

এর সঙ্গে কোটা সংস্কার আন্দোলনের কোনো সম্পর্ক নেই। কোটা সংস্কার আন্দোলনে অংশ নেওয়া ছাত্ররা এসব জ্বালাও-পোড়াও করেনি। বাংলাদেশের কোথাও তারা জ্বালাও-পোড়াও ও ভাঙচুরে অংশ নেয়নি।  

ডিআইজি বলেন, সাভারে যে নৈরাজ্য সৃষ্টি করা হয়েছিল, সেগুলো পরিদর্শন করতে আজ এখানে এসেছি। এখানে ২০টির ওপরে প্রতিষ্ঠান রয়েছে, বড় বড় প্রতিষ্ঠান রয়েছে যেগুলো তছনছ করা হয়েছে, ভাঙচুর করা হয়েছে। 

তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো প্রাণী সম্পদ অফিস। প্রাণী সম্পদ অফিস ভাঙচুর করে গাড়ি পোড়ানো হয়েছে, সড়কে অনেকগুলো গাড়ি পোড়ানো হয়েছে। পুলিশের যে স্থাপনা রয়েছে পুলিশ বক্স, ডিবি কার্যালয় তছনছ করা হয়েছে। ট্রাফিক পুলিশ বক্স একেবারে নিশ্চিহ্ন করা হয়েছে। এছাড়া সিটি সেন্টারসহ শপিংমল, দোকানপাট ভাঙচুর করা হয়েছে। তিনদিন ধরে এই নৈরাজ্য চালিয়েছে তারা।  

তিনি বলেন, ঢাকা মহানগর, নারায়ণগঞ্জ বিশেষ করে নরসিংদী জেলায় জেল লুট করা হয়েছে। ৮২৬ জন কয়েদিকে পালিয়ে যেতে বাধ্য করা হয়েছে। জেলখানাতে যেসব দুর্ধর্ষ আসামি ছিল যেমন একাধিক ডাকাতি মামলার আসামি, মার্ডার মামলার আসামি এবং ৯ জন জঙ্গিসহ দুর্ধর্ষ আসামিদের হাতে অস্ত্র তুলে দেওয়া হয়েছে। ৮ হাজার রাউন্ডের বেশি গুলি তাদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। 

তারা এই অস্ত্র গুলি পুলিশের বিপক্ষে দুই দিন ধরে ফায়ার করেছে। ওখানে

ঢাকা রেঞ্জের উপ-মহাপুলিশ পরিদর্শক (ডিআইজি) সৈয়দ নুরুল ইসলাম বলেছেন, কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে নাশকতার ঘটনায় কোনো শিক্ষার্থীর অংশ গ্রহণের অস্থিত্ব পাওয়া যায়নি। পরিকল্পিত ছক করে গুটি কয়েক জেলায় তাণ্ডব চালানো হয়েছে। আর তাণ্ডবকারীদের লক্ষ্য ছিল সরকারের পতন। 

বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) বিকালে কোটা সংস্কার ছাত্র আন্দোলনকে ঘিরে সহিংসতায় হওয়া ধংসযজ্ঞ পরিদর্শন শেষে সাভার মডেল থানায় এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

একটা এপিসি আছে, এপিসির কয়েকটি জায়গা ছিদ্র হয়েছে এই অস্ত্রের দ্বারা। সুতরাং, এই কার্যকলাপগুলো জেলখানায় হামলা চালিয়ে অস্ত্র লুট করে সেই অস্ত্র আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিরুদ্ধে ব্যবহার করা, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে জ্বালিয়ে দেওয়া ভাঙচুর করা এই কাজগুলো কখনো ছাত্রদের হতে পারে না।  

তিনি আরও বলেন, আমাদের কাছে ভিডিওচিত্র আছে যেখানে কোনো ছাত্রের অস্তিত্ব আমরা খুঁজে পাইনি। যাদেরকে দেখেছি তারা দুষ্কৃতকারী, তারা নৈরাজ্যকারী, রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে সরকারের বিরুদ্ধে তারা মূলত বিদ্রোহ ঘোষণা করেছিল এবং সরকার পতনের মধ্য দিয়ে তারা ফায়দা লুটতে চেয়েছিল। তারা এই কাজগুলো করেছে এর অংশ হিসেবে সাভার আমরা পরিদর্শন করলাম, সাভারে দেখলাম অনেক প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, অনেক লুটপাট হয়েছে। 

প্রাণী সম্পদ অফিসে আমরা দেখলাম, সব রুম তছনছ করা হয়েছে। এসিগুলো পর্যন্ত খুলে নিয়ে লুট করা হয়েছে। এমনকি টয়লেটের যে কমোড রয়েছে, সেই কমোড পর্যন্ত লুট করে নিয়ে গেছে। তার মানে এরসঙ্গে শুধু ভাঙচুরকারী না লুটেরাও অংশ নিয়েছিল। যাদের লুট করাও উদ্দেশ্য ছিল। বাংলাদেশ পুলিশ এদেশের মানুষের জানমাল রক্ষার্থে দাঁড়িয়েছে, সাধ্যমতো আইন প্রয়োগ করার চেষ্টা করেছে। ভবিষ্যতেও আইন প্রয়োগ করে যাবে। 

এসময় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ঢাকা জেলায় ১৯টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এসব মামলায় আড়াই শতাধিক আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে কোনো ধরনের হতাহতের তথ্য বর্তমানে পুলিশের কাছে নেই।  

সংবাদ সম্মেলনে এসময় উপস্থিত ছিলেন- ঢাকা রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি মারুফ হোসেন সরদার, অতিরিক্ত ডিআইজি মাশরুকুর রহমান খালেদ, ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার আসাদুজ্জামান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস্) আব্দুল্লাহিল কাফি, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সাভার সার্কেল) শাহিদুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিবি) মোবাশশিরা হাবিব খান, সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহজামান, ধামরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সিরাজুল ইসলাম, আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এএফএম সায়েদ, ঢাকা জেলা উত্তর গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ বিপ্লবসহ আরও অনেকে।

মেসেঞ্জার/মামুন/সৌরভ

×
Nagad