ঢাকা,  রোববার
০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪

The Daily Messenger

মৃত্যুঝুঁকি নিয়ে ২৫৪টি ঝুঁকিপূর্ণ ব্রিজ দিয়ে বরগুনার মানুষের চলাচল

বরগুনা প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১১:২৬, ২৬ জুলাই ২০২৪

মৃত্যুঝুঁকি নিয়ে ২৫৪টি ঝুঁকিপূর্ণ ব্রিজ দিয়ে বরগুনার মানুষের চলাচল

ছবিঃ মেসেঞ্জার

রক্ষণাবেক্ষণ ও সংস্কারের অভাবে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় থাকা বরগুনার জেলার বিভিন্ন এলাকায় নির্মিত ২৫৪ টি লোহার সেতু ব্যবহার করে মৃত্যুঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে লাখো মানুষ ও ভারি যানবাহন। এরমধ্যে কয়েকটি সেতু ভেঙে নদী ও খালে পড়ে আছে। ফলে এসব এলাকা দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন কয়েক লাখ মানুষ।

ঝুকিপূর্ণ এই ২৫৪ টি ব্রিজের মধ্যে বরগুনা সদর উপজেলায় ৭০টি, আমতলী উপজেলায় ৯৮টি, তালতলী উপজেলায় ২৯টি, বেতাগী উপজেলায় ১৬টি,বামনা উপজেলায় ২৫টি, এবং পাথরঘাটা উপজেলায় ১৬টি সেতু রয়েছে।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) বরগুনা জেলা কার্যালয়ের সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯৭-৯৮ অর্থবছরে এবং পরবর্তীতে ২০০৯-১০ অর্থবছরে এলজিইডির আওতায় ‘হালকা যান চলাচল প্রকল্প’-এরঅধীন কয়েক শ লোহার সেতু নির্মাণ করা হয়।

লোহার স্ট্রাকচারের উপর কংক্রিট ঢালাই দিয়ে মানুষ ও রিকশা, মোটরসাইকেলের মতো হালকা যানবাহন চলাচলের উপযোগীকরে তৈরি করা হয়েছিলো এই আয়রন ফুট ব্রিজগুলো। তবে দেশের ক্রমবর্ধমান উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় বরগুনা জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের গ্রামীণ সড়কগুলো পাকা এবং প্রশস্ত হওয়ায় বেড়ে যায় বিভিন্ন যানবাহনের চলাচল।

উপরন্তু,ঘূর্ণিঝড় সিডর, আইলা, মহাসেন, বুলবুলসহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগেও সেতুগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এই পুরনো ক্ষতিগ্রস্ত ব্রিজগুলো ব্যবহার করে চলাচল করতে থাকে ইট বোঝাই টাফি, গাছ বোঝাই মিনি ট্রাক, মাইক্রো,এমনকি রোগীবহনকারী অ্যাম্বুলেন্সও।

এসব কারণে ব্রিজগুলোর অবস্থা আরও খারাপ হতে থাকে। সম্প্রতি বরগুনার আমতলীতে এরকম একটি ব্রিজ ভেঙে পড়ে ৯ জনের মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। যে ঘটনায় সারা দেশজুড়ে নেমে আসে শোকের ছায়া। ফলে টনক নড়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের। এরপরই শনাক্ত করা হয়েছে জেলার বিভিন্ন ঝুঁকিপূর্ণ সেতু।

এ প্রসঙ্গে বরগুনা পৌরসভার মেয়র অ্যাডভোকেট মো.কামরুল আহসান মহারাজ বলেন, বরগুনা পৌরসভায় ১৩টি ব্রিজ আছে। সবকটিই ঝুঁকিপূর্ণ। তবে ৮টি ব্রিজের অবস্থা এতটাই খারাপ যেকোনো মুহূর্র্তে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। বিশেষ করে বরগুনা পৌর শহরের একটি গুরুত্বপূর্ণ ব্রিজ হলো এসিল্যান্ড ব্রিজ।

দুবছর পূর্বে ভারানি খালটি খনন করায় ব্রিজটির যথেষ্ঠ ক্ষতি হয়। পিলারের পাশ থেকে মাটি সরে যাওয়ায় পাড় ধসে যায়। পাশাপাশি ঘূর্ণিঝড় রেমালে ব্রিজের পূর্ব প্রান্ত দেবে যাওয়ায় ব্রিজটি মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে আছে। ব্রিজটি পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেলে বরগুনার মানুষের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হবে।

ব্রিজগুলো দ্রুত নতুন করে নির্মাণ করা হলে বরগুনার মানুষ স্বস্তি পাবে। বরগুনা এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মো: মেহেদী হাসান খান বলেন, আমি দায়িত্ব নেয়ার পর বরগুনা সবকটি উপজেলা থেকে তথ্য নিয়েছি। বরগুনা জেলায় ২৫৪টি আয়রন ব্রিজ ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় পড়ে আছে। তবে এরমধ্যে জরুরীভিত্তিতে প্রতিস্থাপন করা প্রয়োজন এমন ব্রিজের সংখ্যা ১১৮টি। ইতোমধ্যে প্রকল্প তৈরি করে প্রধান প্রকৌশলী বরাবরে পাঠানো হয়েছে। অর্থ বরাদ্দ হলে দ্রুত ব্রিজ নির্মাণের কাজ শুরু করা যাবে।

মেসেঞ্জার/কেশব/তারেক

×
Nagad