ঢাকা,  রোববার
০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪

The Daily Messenger

বাঁশখালীতে গণধর্ষণের শিকার স্কুল ছাত্রী

বাঁশখালী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৪:৪০, ২৬ জুলাই ২০২৪

বাঁশখালীতে গণধর্ষণের শিকার স্কুল ছাত্রী

ছবিঃ সংগৃহীত

চট্টগ্রামের বাঁশখালী সমুদ্র সৈকতের কাথরিয়া ইউনিয়নের হালিয়াপাড়া পয়েন্টে গণধর্ষণের শিকার নবম শ্রেণির এক ছাত্রীর পরিবারকে ধর্ষকরা ১৫দিন ধরে নানামুখি ভয়ভীতি দেখিয়ে থানায় যেতে দেয়নি। উল্টো ধর্ষকরা বিধবার একমাত্র মেয়ে ওই ধর্ষিতাকে জন্ম নিয়ন্ত্রণ ট্যাবলেট (ইমকন-১) কিনে দিয়ে তা খেতে বাধ্য করেছে। 

ধর্ষিতার বিধবা মা বলেন, ‘৪ জন ধর্ষক স্থানীয় বাহারছড়া ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যানের ভাই ও আত্মীয় হওয়ায় নানামুখী ভয় দেখাচ্ছে। থানা পুলিশকে জানালে স্ব-পরিবারে হত্যা করবে বলে হুমকি দিচ্ছে। তাই ভয়ে ধর্ষকদের এনে দেয়া জন্ম নিয়ন্ত্রণ ট্যাবলেট খাইয়ে মেয়ের ইজ্জত বাঁচানোর চেষ্টা করছি। তাছাড়া থানায় গিয়ে অভিযোগ করার সামর্থ্যও আমাদের নেই।’

স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শী ও সরেজমিন তদন্ত করে জানা গেছে, বাহারছড়া ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের মেম্বার ও প্যানেল চেয়ারম্যান কাজী মো. ইউসুফ। তিনি ক্ষমতা বলে তার ছোট ভাই কাজী মো. শহিদুল ইসলাম (২২) কে আদম শুমারির দায়িত্ব দেন। আদম শুমারির দায়িত্ব পেয়ে একই ওয়ার্ডের ইলশা গ্রামের জনৈক বিধবার একমাত্র মেয়ে বাহারছড়া-রত্নপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রীর সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলেন।

(১১ জুলাই) বিকালে ওই সম্পর্কের জের ধরে ডেকে ধর্ষিতাকে কাথরিয়া ইউনিয়নের হালিয়াপাড়া অংশে বঙ্গোপসাগরের ঝাউবাগানে নিয়ে যায়। পাশে রয়েছে তৌহিদ (৩০) নামের এক যুবকের মাছের খামার। তিনি কাজী মো. শহিদুল ইসলামের বন্ধুও।

কাজী শহিদুলের ডাকে পর পর ওখানে চলে আসে তার অপর দুই বন্ধু মো. আজম (২৫) ও জোবাইর (২৩)। সবাই খোশগল্প করতে করতে পালাক্রমে ওই ছাত্রীকে বিকাল থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত ধর্ষণ করে। কাপড়-চোপড়ও ছিঁড়ে ফেলে। এই খবর এলাকায় প্রচার হলে প্রভাবশালীরা কৌশলে ঘটনাটি ধামাচাপা দিয়ে দেয়।

স্থানীয়দের অভিযোগ, ধর্ষিতাকে ধর্ষকরা জন্ম নিয়ন্ত্রণ ট্যাবলেট কিনে দিয়েছে এবং ঘরে সাংবাদিক সাজিয়ে কিছু লোক এনে হুমকি দিয়েছে থানায় গেলে মেয়েটির ক্ষতি হবে। ধর্ষকদের ক্ষতি হবে না। ঘটনাটি পুলিশ ও কাউকে না জানানোর জন্য বার বার হুমকি দেয়া হয়।

বাহারছড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রেজাউল করিম প্রকাশ ইউনুছ মুন্সী বলেন, ধর্ষণের ঘটনাটি আমি এলাকাবাসীর কাছ থেকে শুনেছি। ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। কিন্তু ধর্ষিতার পরিবারের পক্ষে কোন অভিযোগ আমাকে কেউ করেনি।

৪ জন ধর্ষকের মধ্যে একজনের বড় ভাই বাহারছড়া ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান কাজী মো. ইউসুফ বলেন,  ‘ঘটনাটি ঘটেছে ১০ তারিখে। এতদিন পর ২৩ তারিখে এসে কেন আপনাদেরকে বলতেছে? আমার ছোট ভাই মো. শহিদুল ইসলাম জড়িত নয়।

ধর্ষণের ঘটনা ঘটিয়েছে অন্য ৩ জন যুবক। ওইটা আমার ভাই মীমাংসা করে দিয়েছে। ধর্ষিতার পরিবার থেকে কেউ অভিযোগ দেয়নি, কিছু মানুষ মীমাংসিত ঘটনা আবার কাঁচা করছে।’

বাঁশখালী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সুধাংশু শেখর হালদার বলেন, ‘ঘটনাটি সম্পর্কে আমি অবগত ছিলাম না। আমি এক্ষুণি খোঁজ নিচ্ছি।’

মেসেঞ্জার/বেলাল/তারেক

×
Nagad