ঢাকা,  শুক্রবার
১৮ অক্টোবর ২০২৪

The Daily Messenger

গাজীপুরে সহিংসতার ঘটনায় ৭০ কোটি টাকার ক্ষতি

গাজীপুর প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৪:৩০, ২৭ জুলাই ২০২৪

গাজীপুরে সহিংসতার ঘটনায় ৭০ কোটি টাকার ক্ষতি

ছবি : মেসেঞ্জার

কোটা বিরোধী আন্দোলনের সুযোগে গাজীপুর মহানগরীর সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও স্থাপনায় হামলা, ভাংচুর, অগ্নি সংযোগ ও লুটপাটের ঘটনায় ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে। হামলার শিকার প্রতিষ্ঠানের মধ্যে বিদ্যুত কেন্দ্র, সিটি করপোরেশনের ভবন, সড়ক ভবন, থানা ও পুলিশ বক্স রয়েছে। বাদ যায়নি বেসরকারী শিল্প প্রতিষ্ঠানও। এসব প্রতিষ্ঠানে এখনো ধ্বংসজজ্ঞের ক্ষতচিহ্ন রয়েছে। সংশ্লিষ্টদের হিসাবে ক্ষয়-ক্ষতির পরিমাণ ৭০ কোটি টাকা। 

সারাদেশে কারফিউ জারির প্রথমদিন গত শনিবার (২০ জুলাই) সকাল নয়টার থেকে বেলা দুইটা পর্যন্ত সময়ের মধ্যে গাজীপুর মহানগরীর বিভিন্ন সরকারী ও বেসরকারি স্থাপনায় হামলা, ভাংচুর, লুট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনাগুলো ঘটে। 

গাজীপুরের জেলা প্রশাসক আবুল ফাতে মোহাম্মদ সফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, আমরা হামলার শিকার সরকারি ও বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে ও সরেজমিনে পরিদরর্শন করে ক্ষতিগ্রস্থ প্রতিষ্ঠানের তালিকা ও ক্ষয়-ক্ষতি নিরুপণ করেছি। প্রাথমিকভাবে এ ক্ষতির পরিমাণ প্রায় অর্ধ শতকোটি টাকা। তবে, ক্ষয়-ক্ষতির পরিমাণ আরো বাড়তে পারে। 

অন্যদিকে, দেশের প্রথম মেঘা প্রকল্প বাস র‌্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) কর্তৃপক্ষের দাবী, রাজধানীর বিমান বন্দর থেকে গাজীপুরের চান্দনা চৌরাস্তা পর্যন্ত অংশে শুধু বিআরটি প্রকল্পেই ৫০-৬০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। আর গাজীপুর অংশে ক্ষতির পরিমাণ ২০ কোটি টাকা। 

গাজীপুর মহানগরীর বিভিন্ন এলাকায় সরেজমিনে ঘুরে ও সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জানা যায়, কোটা বিরোধী আন্দোলন শেষ হলেও এখনো বিরতী দিয়ে ফিরে আসছে কার্ফিউ। নগরবাসী জীবন জীবিকার টানে ধীরে ধীরে ঘরের বাইরে আসতে শুরু করেছেন। মহানগরীর বিভিন্ন শিল্প কল কারখানায় কাজে যোগ দিয়েছেন শ্রমিকরা। মহাসড়কের বাড়ছে স্থানীয় ও আন্ত:জেলা যানবাহনের দাপট। পরিস্থিতি অনেকটাই স্বাভাবিক হলেও দুস্কৃতিকারীদের সৃষ্ট ক্ষত এখনো পুরোপুরি সাড়েনি। এসব ক্ষত সারিয়ে তুলতে আরো সময় ও কোটি কোটি টাকার প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
 
সরেজমিনে দেখা গেছে, মহাসড়ক ও বিভিন্ন গলিপথে অসংখ্য ইটের টুকরা। কোথাও পুড়া টায়ার ও অন্যান্য বস্তু মহাসড়ক পরিস্কার করে এক জায়ড়ায় জড়ো রাখা হয়েছে। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ভবনের সমস্ত জানালার গ্লাস ভাঙ্গা, কোথাও আগুনের পুড়ে কালো হয়ে আছে ভবনের দেয়াল। নীচে পড়ে আছে ছাই, ভাঙ্গা গ্লাস ও আসবাবপত্রের ভাঙ্গাচুড়া অংশ। নগ্ন ভবনের সামনে কঙ্কালের মতো দাড়িয়ে আছে পুড়ে যাওয়া মোটর সাইকেল, জীপ গাড়ি, ময়লার গাড়ী, কাভার্ডভ্যানসহ বিভিন্ন যানবাহন। 

গাজীপুর জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, গত বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) থেকে টানা কয়েকদিন ধরে চলা কোটা বিরোধী আন্দোলনের আড়ালে দেশের অন্যান্য স্থানের ন্যায় গাজীপুরেও নাশকতার ঘটনা ঘটেছে। নাশকতাকারীরা গাজীপুর মহানগরীর টঙ্গী শিল্পাঞ্চল থেকে শুরু করে ব্যস্ততম চান্দনা চৌরাস্তা পর্যন্ত এলাকায় ঢাকা-ময়মসিংহ মহাসড়কের দুই পাশে সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন স্থাপনায় হামলা, ভাংচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করে। 

সূত্রের দেয়া তথ্য মতে, শনিবার সকাল ১০টার দিকে দুস্কৃতিকারীরা মহানগরীর টঙ্গী শিল্পাঞ্চলে ঢাকা ইলেকট্রনিক সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেডের (ডেসকো) বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগের  বিদ্যুত উপ-কেন্দ্রে হামলা করে অফিস ভবন, ১০টি কম্পিউটার, ৭টি প্রিন্টার, এসি কমপ্রেসারসহ বিভিন্ন আসবাবপত্র ও সামগ্রী ব্যাপক ভাংচুর করে। লুটে নেয়া হয় কম্পিউটার, সাব-স্টেশনের বৈদ্যুতিক তার, বৈদ্যুতিক যন্ত্রণাংশ, অফিসে কর্মকর্তা ও কর্মচারিদের মোবাইল ফোন, টাকা। মারধরে আহত হন প্রতিষ্ঠানটির উপ সহকারী প্রকোশলী আবু রায়হান ও নিরাপত্তাকর্মী ইমরান। পরে তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়। তারা পরে সেখানে অগ্নি সংযোগ করে। এছাড়াও সেবাকেন্দ্রের ৩টি কম্পিউটার ভাংচুর করে। এসময় তারা সাতটি মোটর সাইকেলে আগুন দিলে পুড়ে যায়। এতে উপ-কেন্দ্রের তিন কোটি টাকার ক্ষয় ক্ষতি হয়েছে।
 
এ বিষয়ে ডেসকোর বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগের কার্যালয়ের উপ বিভাগিয় প্রকৌশলী মো: শাকিল খান জানান, আন্দোলনকারীরা আমাদের কার্যালয়টি ভেঙ্গে মালামাল লুট করে। আমাদের দুইজনকে পিটিয়ে আহত করেছে। এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ ঘটনায় ডেসকোর প্রশাসনিক কর্মকর্তা ওসমান গনি বাদী হয়ে গত সোমবার ৫০০জন অজ্ঞাত ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন।

সূত্র আরো জানায়, শনিবার দুপুরে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের টঙ্গী আঞ্চলিক কার্যালয়ে হামলা চালায় দুস্কৃতিকারীরা। তারা কার্যালয়ের মূল ফটকের ভিতরে প্রবেশ করে বিভিন্ন কক্ষে ব্যপক ভাংজুর করে। পরে তারা কার্যালয়ের ভিতরে পার্ক করে রাখা ৩২টি সারিবদ্ধ গাড়িতে প্রথমে ভাংচুর চালায় ও পরে আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে ১টি পাজেরো জীপ, ডাবল কেবিন পিকআপ ৫টি, জীপ গাড়ি ১টি, বিভিন্ন ধরণের ড্রাম ট্রাক ৮টি, কম্পেক্টর ১টি, ময়লা পরিষ্কারের কাজে ব্যবহৃত হুইল লোডার ১টি, ভ্রাম্যমাণ আদালতের গাড়ি ১টি, টেম্পো ১টিসহ ১৯টি গাড়ী সম্পূর্ণ পুড়ে যায়। এছাড়াও ময়লার গাড়ী ৬টি,বিদ্যুতের কাজে ব্যবহৃত হাইড্রোলিক বিম লিফটার ২টি,রোলার ১টি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাদের তান্ডবে পুরো কার্যালয় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। ঘটনার ৮ দিন পরও কার্যালয়টির সামনে পড়ে আছে ধ্বংসাবশেষ। এ ঘটনায় অন্তত ২০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। 

এ বিষয়ে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এ এস এম শফিউল আজম  বলেন,নাশকতায় আমাদের প্রায় ২০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ ঘটনায় সিটি কর্পোরেশন টঙ্গীর অফিস সহকারী আব্দুল বাতেন বাদী করে টঙ্গী পশ্চিম থানায় অজ্ঞাত পাঁচশত জন ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এসব ক্ষতি কাটাতে আমাদের কোটি কোটি টাকা ও সময় লাগবে। বর্তমানে কর্মকর্তাদের চলাফেরা ও ময়লা পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার কাজে ব্যাঘাত ঘটছে।

জানা যায়, একই দিনে বেলা একটার দিকে মহানগরীর টঙ্গীর স্কুইব রোডে বেসরকারি ঔষধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান বেক্সিমকো ফার্মাসিটিক্যাল লিমিটেড কারখানায় ভাংচুর চালায় দুস্কৃতিকারীরা। তারা কারখানাটির পাঁচ নাম্বার গেট ভেঙ্গে কারখানায় প্রবেশ করে ভেতরে ভাংচুর চালায়। এ সময় মানবসম্পদ বিভাগের কর্মকর্তা আব্দুর রহিমসহ চারজন নিরাপত্তাকর্মী আহত হন। এ সময় তারা ৬টি সিসি ক্যামেরা, কারখানার পাকিং জোনে থাকা ৬টি কাভার্ড ভ্যান, ২টি মাইক্রোবাস ও ভবনে ব্যাপক ভাংচুর করে। পরে তারা অগ্নি সংযোগ করলে মুল্যবান আসবাব পত্র ও ৪টি গাড়ি পুড়ে যায়। এতে প্রায় এক কোটি টাকার ক্ষতি সাধিত হয়েছে। 

এ বিষয়ে কারখানার মানবসম্পদ বিভাগের কর্মকর্তা আব্দুর রহিম জানান, কারখানায় প্রায় এক কোটি টাকার ক্ষতি করা হয়েছে। এ বিষয়ে বেক্সিমকো ফার্মার প্রধান নিরাপত্তাকর্মী আ. রহিম বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ৪৫০জন ব্যক্তিকে আসামী করে টঙ্গী পশ্চিম থানায় মামলা দায়ের করেছেন।

শনিবার বেলা দেড়টার দিকে হামলাকারীলা টঙ্গী সরকারি কলেজের ছাত্র সংসদ, রোভার ডেন, লাইব্রেরী, ছাত্রীদের কমন রুন, নিরাপত্তা প্রহরীদের দুটি কক্ষ ভাংচুর ও কলেজের একটি টেলিভিশন,বৈদ্যুতিক পাখা ও একটি কম্পিউটার ভাংচুর করে। এতে প্রায় ৪ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। 

এ বিষয়ে টঙ্গী সরকারী কলেজের অধ্যক্ষ রফিকুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় কলেজের হিসাব রক্ষক রোকন উদ্দিন বাদী হয়ে টঙ্গী পশ্চিম থানায় সাধারণ ডায়েরী করেছেন। কলেজের অধ্যাপক নূরুন নবী আলমকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে।

টঙ্গী পৌর অডিটোরিয়ামে ভেতরে থাকা গাজীপুর শিল্প পুলিশের অস্থায়ী কার্যালয়ে ভাংচুর ও আগুন দেয় সন্ত্রাসীরা। এতে প্রায় দশ লাখ টাকার ক্ষতিসাধন হয়েছে। 

এ বিষয়ে গাজীপুর শিল্প পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার মো: মোশারফ হোসেন বলেন, কার্যালয়ে আসবাবপত্র ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ৮শজন অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করা হয়।

জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক ঘেষে রয়েছে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের কার্যালয়। দুস্কৃতিকারীরা কার্যালয়ের ভেতরে ঢুকে মুল ভবনের সমস্ত জানালার গ্লাস ভাংচুর করেছে। সামেন দাড়িয়ে থাকা ২টি ১টি নতুন ট্রাকে অগ্নি সংযোগ করলে এগুলো পুড়ে যায়। এছাড়াও ৪টি নতুন ট্রাক,১০টনি সয়েল কম্পেক্টর ১টি, হাইড্রোলিক হ্যামার ১টি, বিআরটি প্রজেক্টের অফিস গেইট ও ভবনসহ অন্যান্য মালামাল ভাংচুর করে। এতে প্রায় ৩ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। 

এ বিষয়ে গাজীপুর সড়ক বিভাগের নির্বাহী কর্মকর্তা খন্দকার মো: শরিফুল আলম বলেন, নাশকতার ঘটনায় আমাদের নতুন নতুন যানবাহনগুলো পুড়ে গেছে। কিছু ভাংচুর করা হয়েছে। এগুলো রিপ্লেস করতে কোটি টাকার প্রয়োজন। এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।

অপর দিকে, দুস্কৃতিকারীরা গাজীপুর মহানগর পুলিশের ৫টি পুলিশ বক্সে ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় চান্দনা চৌরাস্তার দৃষ্টিনন্দন পুলিশ বক্সটি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। বক্সটির টিনের চাল, চেয়ার-টেবিল ও আসবাব পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। জিঘাংসার আগুনে পুড়ে যাওয়া পুলিশ বক্সের কালচে ইট ও লোহার কাঠামো সহিংসতার স্বাক্ষী হয়ে দাড়িয়ে আছে। এছাড়ও গাজীপুর মহানগরীর গাজীপুরা, বোর্ড বাজার, গাছা ও কোনাবড়ী এলাকায় পুলিশ বক্সে আক্রমণ করেছে। এতে প্রায় ৩৫ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।

এছাড়াও, আন্দোলনের সুযোগে দুস্কৃতিকারীরা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের ঢাকা বিমান বন্দর থেকে গাজীপুরের চান্দনা চৌরাস্তা পর্যন্ত অংশে বাস্তবায়নাধীন বাস র‌্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) প্রকল্পের বিভিন্ন অংশে হামলা, ভাংচুর ও অগ্নি সংযোগ করেছে। হামলায় বিআরটি প্রজেক্টের ২৫টি এসক্যালেটর, একটিলিফট, দুই হাজার বর্গ মিটার এসএস রেলিং, একটি এস্কাভেটর, ৩ হাজার কেজি এমএসইওয়াল প্যানেল ফর্ম ওয়ার্ক, ৬টি ইলেকট্রিক হ্যামার, ৪টি ওয়েল্ডিং মেশিন, ২টি রোডকাটিং মেশিন, ৩৬০ মিটার ফেন্সিং ও প্লাস্টিক ট্রাফিক ব্যারিয়ার, ৭টি স্টেশনে জেনারেটর, পানির লাইন ও ইউলিটি সংযোগ এবং একটি প্রকল্প সাইট অফিসের ক্ষতি সাধন হয়েছে। এতে গাজীপুর অংশে ক্ষয়-ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৩০ কোটি টাকা। তবে, বিআরটি প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ড. মো.মনিরুজ্জামান সরেজমিনে পরিদর্শন শেষে জানান, প্রাথমিক হিসেবে প্রকল্পের প্রায় ৫০-৬০ কোটি টাকার মতো ক্ষতি হয়েছে। ক্ষয়-ক্ষতির পরিমাণ আরো বাড়তে পারে। তবে, গাজীপুর অংশে এ ক্ষতির পরিমাণ ২০ কোটি টাকা। এ ঘটনায় থানায় মামলা করেছে বিআরটি কর্তৃপক্ষ।

এছাড়াও গাজীপুর মহানগরীর টঙ্গী, কোনাবাড়ী এলাকায় আওয়ামী লীগ ও যুবলীগ অফিসে হামলা ও ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে। তাদের ক্ষয় ক্ষতির পরিমাণ জানা যায়নি।    

গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মাহবুব আলম  জানান, গাজীপুরে কোটা বিরোধী আন্দোলন চলাকালে মহানগরীর বিভিন্ন থানা এলাকায় সহিংসতা, যানবাহন ভাঙচুর ও নাশকতা সৃষ্টির অভিযোগে ৩৭টি মামলা রুজু হয়েছে। এসব মামলায় প্রায় ১৫ হাজার জন আসামী। তাদের মধ্যে কেউ কেউ একাধিক মামলায়ও আসামী হয়েছেন। শনিবার পর্যন্ত সব মামলায় ৩৯৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এরমধ্যে এজাহার নামীয় আসামী রয়েছেন ৬৩ জন।

তিনি আরো বলেন, বর্তমানে মহানগরীর জীবন যাত্রা স্বাভাবিক। মানুষের মাঝে স্বস্তি ফিরে এসেছে। ব্যবসা-বাণিজ্য স্বাভাবিকভাবে চলছে। কোথাও কোন সহিংসতার আশংকা নেই। বিভিন্ন ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিষ্ঠান নাশকতার ক্ষত কাটিয়ে ওঠতে চেষ্টা করছে। নাশকতার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে।

গাজীপুরের জেলা প্রশাসক আবুল ফাতে মোহাম্মদ সফিকুল ইসলাম বলেন, আমরা সরকারের সকল প্রতিষ্ঠানের সাথে সমন্বয় করে সর্বত্র নিরাপদ ও আস্থার পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে কাজ করছি। মানুষের মধ্যে স্বস্তি ফিরেছে। সকল কল-কারখানায় পুরোদমে উৎপাদন চলছে। মহাসড়কে কাফিউ শিথিল করার সময়ে যানবাহন ও মানুষের ভীড় বেড়েছে। কোথাও কোন সমস্যার খবর নেই।

মেসেঞ্জার/আসাদুজ্জামান/আজিজ