ছবি : মেসেঞ্জার
নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার চরাঞ্চল শ্রীনগরে আধিপত্য বিস্তার ও জমিসংক্রান্ত বিরোধকে কেন্দ্র করে দফায় দফায় দুই গ্রুপের সংঘর্ষে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৬ জনে দাড়িয়েছে।
শুক্রবার (২৩ আগস্ট) বেলা ১২ টার দিকে নিহতদের পরিবারের পক্ষ থেকে আরও ২ জন নিহতের তথ্য নিশ্চিত করেন হামিদ মিয়া নামে এক স্বজন।
এছাড়া, রায়পুরা থানার সেকেন্ড অফিসার মো: হালিম বেলা পৌনে ১২ টার দিকে ৬ জন নিহতের তথ্য নিশ্চিত করেন।
এর আগে, গতকাল সকালে ঘটনাস্থলে নারী ও কিশোরসহ ৪ জন মারা যায় এবং রাতে ঢাকায় আরও ২ জন মারা যায়।
নিহতরা হলেন, সায়দাবাদ গ্রামের ইসমাইল বেপারীর ছেলে আমির হোসেন (৬৫) ও বাদল মিয়া (৪৫), শাহীন মিয়ার ছেলে জুনায়েদ (১৬), বাঘাইকান্দি গ্রামের সাহাবুদ্দিনের স্ত্রী ফিরোজা বেগম (৩৫), আব্বাস আলীর ছেলে আনিস মিয়া (৩০) এবং একই এলাকার আসাবউদ্দিনের ছেলে সিদ্দিক (২৮)।
এর মধ্যে বাদল মিয়া (৪৫) এবং সিদ্দিক (২৮) ঢাকা মেডিকেলে নেয়ার পথে মারা যায়। নিহতরা সবাই ওই এলাকার সাহেব বাড়ির অর্থাৎ সাবমিয়া গ্রুপের লোক।
স্থানীয়রা জানান, শ্রীনগরের সায়দাবাদ বাজার দখলকে কেন্দ্র করে গত ২ মাস ধরে একই এলাকার হানিফ মাস্টার গ্রুপ এবং সাবমিয়া গ্রুপের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলে আসছিল। সেই দ্বন্দ্বের জেরে বুধবার (২১ আগস্ট) সকাল থেকে দুই গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া চলতে থাকে। বুধবার দিবাগত রাতে সেটি টেঁটাযুদ্ধে রূপ নেয়। বৃহস্পতিবার ভোরে ৪ জন নিহত হন।
এরপর দুপুরের পর আবারও সংঘর্ষ হলে গুরুতর আহত অবস্থায় বাদল মিয়া এবং সিদ্দিক নামে ২ জনকে ঢাকা মেডিকেলে নেয়া হয়। নেয়ার পথে মারা যায় সিদ্দিক এবং মেডিকেলে নেয়ার পর রাতে মারা যায় বাদল মিয়া। দিনব্যাপী এই ঘটনায় টেটা, গুলি ও দেশীয় অস্ত্রের আঘাতে অন্তত ৫০ জন আহত হয়।
এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো মামলা করেনি নিহতদের পরিবার। মর্গ ঘুরে দেখা গেছে, মোট ৫ টি মরদেহ মর্গে আছে।
নিহতদের পরিবারের পক্ষ থেকে হামিদ মিয়া অভিযোগ করে বলেন, একটা মরদেহ ঢাকায়, বাকিসব নরসিংদী সদর হাসপাতালের মর্গে আছে। আমিসহ সকল স্বজনরা মর্গে আছি। এখানে পুলিশ নেই, চিকিৎসকও আসেনি এখন পর্যন্ত।
ময়নাতদন্তের কোনো অগ্রগতি দেখছিনা জানিয়ে তিনি বলেন, পুলিশ কোনো প্রকার সহায়তা করছেনা, মর্গে কোনো পুলিশ ও নেই। এমনকি ঘটনাস্থলে ও এখন পর্যন্ত কোনো পুলিশ যায়নি। সকলেই আমরা আতংকে আছি।
এ বিষয়ে রায়পুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাফায়েত হোসেন পলাশ এর কাছে মরদেহের ময়নাতদন্তের অগ্রগতি এবং পুলিশের অসহযোগীতার বিষয়ে মুঠোফোনে বেলা ১১ টা থেকে ১১ টা ৩০ পর্যন্ত একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেনননি।
সেকেন্ড অফিসার মোঃ হালিম মুঠোফোনে বলেন, এখনও পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি। মরদেহের ময়নাতন্তের প্রক্রিয়া চলছে।
পুলিশ অসহযোগীতা করেছে এমন প্রশ্নের জাবাবে বলেন, গতকাল আমরা ঘটনাস্থলে গিয়েছি ।
মেসেঞ্জার/কাউছার/আপেল