ঢাকা,  শনিবার
২১ ডিসেম্বর ২০২৪

The Daily Messenger

দিনাজপুরে প্রধান শিক্ষককে স্বপদে ফেরাতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন

দিনাজপুর প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৬:২৯, ২৮ আগস্ট ২০২৪

দিনাজপুরে প্রধান শিক্ষককে স্বপদে ফেরাতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন

ছবি : মেসেঞ্জার

দেশে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের পদত্যাগ করানোর হিড়িক চলছে। তার ছোয়া পড়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে। বিভিন্ন স্কুল, কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধানদের পদত্যাগ করানো হচ্ছে। আর এর সাথে শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ জড়িত রয়েছে।

কিন্তু দিনাজপুরের এক বিদ্যালয়ে ঘটেছে এর ব্যতিক্রম। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষককে স্বপদে ফেরাতে আন্দোলন শুরু করেছে শিক্ষার্থীরা। এমনকি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের চেয়ারে কাউকে বসতে দিতে নারাজ শিক্ষার্থীরা।

বুধবার (২৮ আগস্ট) এমনই দৃশ্যের দেখা মিললো দিনাজপুর শহরের সারদেশ্বরী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে। মঙ্গলবার থেকে তারা বিদ্যালয় চত্বরে বিক্ষোভ প্রদর্শন করছে।

তাদের দাবি, প্রধান শিক্ষককে বিদ্যালয়ে আসতে বাধা দিয়েছেন কিছু সুযোগ সন্ধানী শিক্ষক। শিক্ষার্থীদের ক্লাশ নেয়াও বন্ধ করেছেন। প্রধান শিক্ষকের ব্যাপারে এবং ক্লাশ বন্ধের ব্যাপারে জানতে চাইলে একেক সময় একেক কথা বলছেন সহকারী প্রধানসহ অন্যান্য শিক্ষকরা।

শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, বর্তমান প্রধান শিক্ষক রতন কুমার রায় যোগদান করার পর বিদ্যালয়ে হয়েছে অভুতপূর্ব উন্নয়ন, বেড়েছে শিক্ষার মান। তাই শিক্ষার্থীদের দাবি, প্রধান শিক্ষককে স্বপদে ফিরিয়ে দেয়া।

৯ম শ্রেণীর ছাত্রী রামিসা সারওয়ার বলেন, রোববার থেকে আমরা স্কুলে আসছি, কিন্তু কোন ধরনের ক্লাশ হয়নি। আজকে স্কুলে আসছি, কিন্তু কোন ধরনেরর ক্লাশ হয়নি। এখন পর্যন্ত আমাদের ক্লাশে হাজিরা পর্যন্ত নেয়া হয়নি। পরে জানতে পারছি যে, শিক্ষকরা আন্দোলন করছে। সহকারী প্রধান শিক্ষক রফিকুল স্যারকে প্রশ্ন করা হলে তিনি প্রধান শিক্ষকের ব্যাপারে বিভিন্ন জনকে বিভিন্ন কথা বলতেছে।

৮ম শ্রেণীর ছাত্রী বর্ষা বলেন, কয়েকদিন আগে আমাদের প্রধান শিক্ষক রতন স্যারকে কয়েকজন শিক্ষক অপমান করে। স্যার তো বিদ্যালয়ের উন্নয়ন করেছে আমাদের জন্য। এই কারণে কিছু শিক্ষক স্যারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের কথা বলে বেড়াচ্ছে। আমরা চাই স্যার যেন তার চেয়ারে পুনরায় ফেরত আসেন। নইলে সেই চেয়ারে আর কোন স্যারকে বসতে দিব না। প্রয়োজনে আমাদের আন্দোলন চলমান রাখব। স্যার না আসা পর্যন্ত আমরা ক্লাশে ফিরে যাব না।

তবে নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক এক ছাত্রী বলেন, “বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষকসহ কয়েকজন শিক্ষক নানান ভাবে হুমকি প্রদান করছে। এমনকি আমরা জেলা প্রশাসকের সাথে দেখা করতে যেতে চাইলে আমাদের আটকে রেখে বাধা প্রদান করা হচ্ছে।

বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক (গণিত) আঞ্জুমান আরা বলেন, “বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে কিছু আর্থিক অসংগতি রয়েছে। তাই সকল শিক্ষক চাচ্ছে এব্যাপারে অডিট হোক। এই কারণে শিক্ষকরা ক্লাসে যাচ্ছে না বা হাজিরা নিচ্ছে না।

বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলাম বলেন, “শিক্ষার্থীদেরকে জিম্মি করে ক্লাশ বর্জন করা তাদের ঠিক হয়নি। এটা আমাদের ভুল হয়েছে। প্রধান শিক্ষক অসুস্থ্য থাকায় বিদ্যালয়ে আসেননি। কিন্তু প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে কিছু আর্থিক অসংগতি রয়েছে। তিনি আমাদের সাথে কোন কথা বলছেন না।

তবে প্রধান শিক্ষক রতন কুমার রায় বলেন, “অযৌক্তিক দাবি দিয়ে তাকে নিয়ম বর্হিভুতভাবে বিদ্যালয় থেকে সরানোর চেষ্টা করছে একটি মহল।

বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট জানে আলম বলেন, “কিছুক্ষণ আগে আমি বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির দায়িত্ব পালন করার জন্য চিঠি হাতে পেয়েছি। শিক্ষক শিক্ষার্থীদেরর আন্দোলনের বিষয়ে আমি কিছু জানি না।

মেসেঞ্জার/কুরবান/আপেল