ছবি : মেসেঞ্জার
সারাদেশে যখন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধানদের জোর করে পদত্যাগ করানোর হিড়িক পড়েছে ঠিক তখনি এর উল্টো ঘটনা ঘটেছে ঠাকুরগাঁওয়ে। জোর করে পদত্যাগ করানো প্রধান শিক্ষক সহ ৪ শিক্ষককে ফিরিয়ে এনে তাদের চেয়ার বসিয়েছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার গড়েয়া ইউনিয়নে চখমিল বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। যা রিতিমত প্রশংসার ঝড় তুলেছে।
এর আগে গত রোববার (২৫ আগস্ট) বিএনপির নেতাদের উস্কানিতে প্রধান শিক্ষকসহ ৪ জন শিক্ষককে জোরপূর্বক পদত্যাগ লিখে স্বাক্ষর করে নেয় এক দল শিক্ষার্থী।
জানা যায়, ঐ স্কুলের ছাত্রদেরকে হাতিয়ার বানিয়ে তাদের ভুল বুঝিয়ে গত রোববার দুপুরে ঐ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ সেলিম উদ্দীন, সহকারী শিক্ষক মোঃ ইয়াছিন আলী, মোঃ নুরে আলম এবং শরণ শিং জোরপূর্বক পদত্যাগ লিখে স্বাক্ষর করে নেয় এক দল শিক্ষার্থী।
এ খবর ছড়িয়ে পড়লে সামাজিক মাধ্যমে নিন্দা জানিয়ে দুঃখ প্রকাশ করে বর্তমান ও সাবেক শিক্ষার্থীরাসহ বিভিন্ন স্তরের মানুষ। কারণ তার সততা ও যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন করার কোনো সুযোগ নেই। জোর করে পদত্যাগ করানোর খবর শুনে ক্ষোভে ফেটে পড়েন ছাত্র-জনতা।
মঙ্গলবার সকালে তারা বিদ্যালয় মাঠ সমবেত হয়ে প্রিয় শিক্ষকদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফেরাতে বিক্ষোভ মিছিল করে। পরে বুধবারে স্থানীয় এলাকাবাসী এবং কমিটির সবাই বসে সিদ্ধান্ত নেয় যে বৃহস্পতিবার তারা স্বসম্মানে শিক্ষকদের বরণ করে নেবে।
এর পেক্ষিতে বৃহস্পতিবার সকাল ১০ টাই সাদা প্রাইভেট কারে করে শিক্ষকদের স্কুলে নিয়ে আসা হয়। পরবর্তীতে ফুলের মালা গলায় দিয়ে তাদের বরণ করে নেওয়া হয়। এ সময় শিক্ষার্থীরা তাদের স্যারের পা ধরে ক্ষমা চায় এবং কান্নার রোল পড়ে যায় সেই বিদ্যালয় মাঠে।
তারা বলেন, এই কাজ মূলত রাজনৈতিক কিছু নেতারা করেছে এটার জন্য দায়ী আমরা না।
উল্লেখ্য: গত (২৫ আগস্ট) রোববার চখমিল বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার জগন্নাথপুর ইউনিয়নের ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক সবুজ, চন্ডিপুর যুব দলের নেতা জীবন, অন্যান্য বিএনপি নেতাকর্মীরা সেই স্কুলে গিয়ে ছাত্রদেরকে উস্কিয়ে দেয়।
তারা স্কুলের শিক্ষকদের পদত্যাগের দাবিতে অবরুদ্ধ করে রাখে। এ সময় শিক্ষকদের দুটি গাড়িতে আগুন জ্বালিয়ে তারা উল্লাস করতে থাকে।
পরবর্তীতে পুলিশ সহ সেনাবাহিনীর একটি দল এসে শিক্ষকদের উদ্ধার করে নিয়ে যায়। এসময় শিক্ষকদের পদত্যাগ পত্র স্বাক্ষর করার পরেই তাদেরকে রুম থেকে বের করে দেয়া হয়। এ সময় কিছু রাজনৈতিক নেতারা শিক্ষকদের হত্যার হুমকি দেয়।
মেসেঞ্জার/আরিফ/আপেল