ঢাকা,  বৃহস্পতিবার
৩১ অক্টোবর ২০২৪

The Daily Messenger

সাবেক জনপ্রশাসন মন্ত্রীর অনুকূলে বরাদ্দ সরকারি মালামাল উদ্ধার

মেহেরপুর প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৩:৫৮, ৩১ আগস্ট ২০২৪

সাবেক জনপ্রশাসন মন্ত্রীর অনুকূলে বরাদ্দ সরকারি মালামাল উদ্ধার

ছবি : মেসেঞ্জার

মেহেরপুর শহরের একটি বাড়ি থেকে উদ্ধার হওয়া সাবেক জনপ্রশাসন মন্ত্রী ফরহাদ হোসেনের অনুকুলে বরাদ্দ দেওয়া পৌনে এককোটি টাকার ৩৩ প্রকারের সরকারি মালামাল জব্দ করেছে জেলা প্রশাসন। এসংক্রান্ত ঘটনায় জেলা ক্রীড়া সংস্থার পক্ষ থেকে একটি মামলার প্রস্তুতি চলছে। বাকি মালামাল প্রমান সাপেক্ষে স্ব স্ব বিভাগ মামলা দায়ের করবে বলে জেলা প্রশাসন থেকে জানানো হয়েছে।  

মেহেরপুরের জেলা প্রশাসক শামিম হাসান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, সরকারি মালামাল কোন ব্যক্তি বা জনপ্রতিনিধি তার নিজ হেফাজতে রাখতে পারেন না। যে যে মন্ত্রণালয়ের মালামাল সেই সেই মন্ত্রণালয়ের অফিস স্টোরে রাখার নিয়ম। জব্দকৃত মালামাল গুলোর মধ্যে প্রাথমিক ভাবে জেলা ক্রীড়া সংস্থার মালামালগুলো প্রমানিত হওয়ায় জেলা ক্রীড়া সংস্থার পক্ষ থেকে একটি মামলার প্রস্তুতি চলছে। বাকিগুলো প্রমানিত হলে স্ব স্ব বিভাগ মামলা দায়ের করবে। 

এর আগে বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) রাতে সদর উপজেলা ভূমি কমিশনার (এসি ল্যান্ড) গাজী মূয়ীদুর রহমানের নেতৃত্বে যৌথবাহিনীর একটি দল কাশ্যপপাড়ার সাবেক বিডিআর সদস্য সুরমান আলীর বাড়িতে অভিযান চালায়। সেখানে অভিযান চালিয়ে ৩৩ প্রকারের ত্রানের মালামাল উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারকৃত মালামালগুলো পৌরসভার গাড়ির মাধ্যমে প্রথমে থানায় নিয়ে সিজার লিষ্ট করা হয়। সিজার লিস্ট শেষে শুক্রবার (৩০ আগস্ট) রাতে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের জিম্মায় ফুড গোড়াউনে রাখা হয়েছে।  

জেলা প্রশাসনের জব্দকৃত তালিকা থেকে জানা গেছে তার মধ্যে টেলিভিশন ২টি, লুঙ্গি ২৩৭৬টি, শাড়ি ৩০৬২টি, টিফিন বক্স ২৯৭৭৬টি, শাল চাদর ২৭টি, হুইল চেয়ার ৬টি, অক্সিজেন সিলিন্ডার ৩টি, এপ্রোন ১১৯টি, আই প্রোটেক্টর গ্লাস ১১টি, স্টিক ৪০টি, মাস্ক ৪১৫টি, ক্রিকেট খেলার প্যাড ৮০ জোড়া, হ্যান্ড গ্লোবস ৮৭ জোড়া, হেলমেট ৩৯টি, ব্যাডমিন্টন খেলার নেট ১৪৩টি, কম্বল ৯৫টি, মশারী ৪৭টি, ক্রিকেট খেলার গার্ড ৩৫টি, ক্যাপ ১০০টি, সেটের বল ১১২টি, ফুটবল ১৮৬টি, দাবার বক্স ১৯১টি, হ্যান্ড স্যানিটাইজার ২৬টি, কুরআন শরিফ ৮০টি, ক্রিকেট খেলার স্ট্যাম্প ১৪০টি, ব্যাডমিন্টন ব্যাট ৫১৬টি, ক্রিকেট ব্যাট ১৭টি, ব্যাডমিন্টন কর্ক ৩৩৬টি, দড়ির গুড়ি ৫০টি, ক্রেস্ট ৩০টি, গেঞ্জি ১০০টি। জব্দকৃত সকল মালামালের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৭৭ লাখ ৭৬ হাজার ৪৫০ টাকা।

বাড়ির মালিক সুরমান আলী অভিযানের সময় বলেছিলেন, সাবেক জনপ্রশাসন মন্ত্রী ফরহাদ হোসেনের আত্মিয় দারিয়াপুরের দোলন দর্জী মাসিক ৬ হাজার টাকা হিসেবে তার বাড়ির নিচতলা ভাড়া নেন। সেখানে প্রায় একবছর ধরে মন্ত্রীর বিভিন্ন মালামাল রেখে আসছেন।

মেহেরপুর সদর উপজেলা ভূমি কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট গাজী মূয়ীদুর রহমান বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারি এই বাড়িতে সরকারি ত্রানের মালামাল রয়েছে। সে খবর পেয়ে আমরা অভিযান পরিচালনা করি। 

অভিযান পরিচালনার সময় সেনাবাহিনী ও পুলিশ পুরো বাড়িটিকে ঘিরে রাখে। এসময় সেখানে গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত হন। পাশাপশি স্থানীয় জনতাও ভিড় জমান। এসি ল্যান্ড গাজী মূয়ীদুর রহমান বলেন, বৃহস্পতিবার গভির রাত ও শুক্রবার সারাদিন ধরে সিজার লিস্টের কাজ করা হয়। রাত ১০টার দিকে সিজার লিস্টের মূল্য নিরুপণের কাজ শেষ হয়। খেলা ধুলার সামগ্রীগুলোতে সরকারি পণ্য, বিক্রির জন্য নয় লেখা থাকায় সেগুলো সরকারি বলে প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়। সে হিসেবে জেলা ক্রীড়া সংস্থা একটি মামলা করবেন। অন্যান্য মালামাল গুলো সরকারি হিসেবে প্রমানিত হলে স্ব স্ব প্রতিষ্ঠান পৃথক মামলা করবেন।

এ ব্যাপারে মেহেরপুর সদর থানার ওসি শেখ কনি মিয়া বলেন, মামলার প্রস্তুতি চলছে। 

মেসেঞ্জার/মাহাবুব/আজিজ