ঢাকা,  মঙ্গলবার
১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪

The Daily Messenger

তথ্য চাওয়ায় যুগান্তর প্রতিবেদককে হুমকি দিলেন সওজ প্রকৌশলী

পটুয়াখালী প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৫:৫০, ১ সেপ্টেম্বর ২০২৪

তথ্য চাওয়ায় যুগান্তর প্রতিবেদককে হুমকি দিলেন সওজ প্রকৌশলী

ছবি : মেসেঞ্জার

“ ১৫শ কোটি টাকার পায়রা সেতুতে লুটপাটের মহোৎসব। দুই-তৃতীয়াংশ টোলের অর্থ কর্মকর্তা-কর্মচারীর পকেটে। মুখ খুলছে না সওজ, দুর্নীতি ঢাকতে তদন্ত-অডিট।” এবং “পায়রা সেতু ব্যবস্থাপনায় ত্রুটি, সাধারণ পদ্ধতিতে পার হচ্ছে ভারী যান বাহন” শিরোনামে দুটি প্রতিবেদন দৈনিক যুগান্তরে প্রকাশ করা।

এদুটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয় পটুয়াখালী সড়ক ও জনপদ (সওজ) এর বিরুদ্ধে। এদুটি প্রতিবেদন ও তথ্য অধিকার আইনে তথ্য চাওয়ায় মামলা-জেল খাটানোর হুমকির শিকার হলেন পটুয়াখালীর যুগান্তরের উপকূলীয় প্রতিনিধি বিলাস দাস। এসবিষয়  (৩০ আগষ্ট) পটুয়াখালী সদর থানায় একটি জিডি করেন যুগান্তরের উপকূলীয় প্রতিনিধি বিলাস দাস।

জিডিতে তিনি উল্লেখ্য করে জানান, পটুয়াখালী সড়ক বিভাগের বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ উঠলে (২৫ আগষ্ট) তথ্য অধিকার আইন অনুযায়ী পটুয়াখালী সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীর কাছে লিখিত আবেদন করায়  সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী এ এম আতিক উল্লাহ (২৮ আগষ্ট) বিকেলে তাকে ফোন করে ক্ষিপ্ত কণ্ঠে তথ্য চেয়ে আবেদন করার কারন জানতে চান।

এসময় নির্বাহী প্রকৌশলী তাকে বলেন, আপনি পায়রা সেতুর টোল প্লাজা নিয়ে নিউজ করছেন। আপনার সর্ম্পকে আমি সব ধরনের খোঁজ-খবর নিছি এবং জানি। এখন আবার তথ্য অধিকার আইনে আবেদন করছেন। গভমেন্ট কিন্তু আপনার বিরুদ্ধে আমাকে মামলা করার রাইট দিছে। আপনাকে জেল খাটানোর রাইট দিছে। আপনার পেছনে গোয়েন্দা সংস্থার কোন তথ্য থাকে, গর্ভামেন্ট অফিসার হিসেবে আমাকে রাইট দিছে এবং সংবিধানও দিছে।

এর পূর্বে টোল প্লাজা নিয়ে বিশাল রিপোর্ট করছেন ভাবছিলেন যে অনেক কিছু করে ফেলবেন। আপিন সাংবাদিক হয়ে কি সবার বিরুদ্ধে প্রতিবেদন দিতে পারেন? এ সংক্রান্ত বিষয়ে বিলাসের সাথে আতিক উল্লাহর ২১ মিনিটি ৫০ সেকেন্ড কথা হয়। একপর্যায় তিনি পটুয়াখালী সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীর দায়িত্ব থাকা কালিন সময়ের সব ধরনের কার্যক্রম নিয়ে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ, উদঘাটন এবং ঘাটাঘাটি করতে নিষেধ করে। যা একজন সাংবাদিকের পেশা ও জীবনের প্রতি হুমকী স্বরুপ।

এ বিষয়ে বিলাস দাস  বলেন, একজন সাংবাদিক হিসেবে আমি আমার কর্তব্য পালন করেছি। সড়ক বিভাগের কোন কর্মকর্তার সাথে আমার কোন বিরোধ নেই। পটুয়াখালী সড়ক বিভাগের র্নিবাহী প্রকৌশলী এ.এম আতিক উল্লাহসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে টেন্ডার দুর্নীতি, অর্থের বিনিময় র্নিদিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে কাজ পাইয়ে দেয়া এবং ভুয়া বিল-ভাউচারে বরাদ্দের ৭০ শতাংশ অর্থ আত্মসাতের ঘটনায় দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এবং সওজ প্রধান প্রকৌশলীর কাছে অভিযোগ দেয়া হয়।

কিন্তু অজ্ঞাত কারনে কোন তদন্ত অথবা যথাযথ ব্যবস্থা নেয়নি কর্তৃপক্ষ। এসব অভিযোগের প্রেক্ষিতে অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে সওজের কাছে তথ্য চাওয়া হলে তারা তথ্য দেয়ার নামে টালবাহানা শুরু করে। তাদের অনিয়ম-দুর্নীতির বিরুদ্ধে অনুসন্ধান ও প্রতিবেদন প্রকাশ না করেত প্রভাবশালী মহলকে দিয়ে প্রভাবিত করা হয়। সর্বশেষ সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী আমাকে ফোন করে কৈফিয়ত জানতে চান।

এ প্রসঙ্গে পটুয়াখালী সওজের বর্তমান নির্বাহী প্রকৌশলী জামিল আক্তার বলেন-ব্যস্ততার কারনে আবেদনটি আমার নজরে আসেনি। আতিক উল্লাহ সাহেব র্দীঘদিন এখানে থাকায় কেউ হয়তো আবেদনের কপি তাকে দিয়েছেন।

এ প্রসঙ্গে সদর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. জসীম বলেন, লিখিত অভিযোগ জিডি হিসেবে অর্ন্তভুক্ত করেছি এবং একজন তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এবিষয়ে অভিযুক্ত সওজ বিভাগের সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী এ এম আতিক উল্লাহের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করে তার সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নি।

মেসেঞ্জার/মানিক/তারেক

×
Nagad