ঢাকা,  বৃহস্পতিবার
২১ নভেম্বর ২০২৪

The Daily Messenger

পঞ্চগড়ে দখলকৃত জমি উদ্ধারে জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি

পঞ্চগড় প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২১:৫৫, ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪

পঞ্চগড়ে দখলকৃত জমি উদ্ধারে জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি

ছবি : মেসেঞ্জার

নীলফামারী ৩ আসনের সাবেক সাংসদ মেজর রানা এবং জেমকন গ্রুপের মালিক ও যশোর ৩ আসনের সাবেক সাংসদ কাজী নাবিল আহমেদের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে ভূমি দখলের অভিযোগ উঠেছে। এসব জমি উদ্ধারের দাবিতে জেলা প্রশাসনে স্মারকলিপি প্রদানসহ বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেছে ভুক্তভোগী মানুষ।

সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ভূক্তভোগী সাধারণ বাসিন্দাগণের ব্যানারে পঞ্চগড় জেলার জেলা জজ কোর্ট এলাকা থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে পৌছান ভুক্তভোগীরা।

এ সময় তারা মেজর রানা ও জেমকন গ্রুপের মালিক কাজী নাবিল আহমেদের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে ভূমি দখল, মামলা দিয়ে স্থানীয়দের হয়রানি, মন্দির দখল, নদীর দখলের প্রতিবাদ জানিয়ে বিভিন্ন যোগান দিতে থাকেন।

পরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের চত্বরে ঘন্টাব্যাপি মানববন্ধন কর্মসূচিতে অংশ নেন তেতুঁলিয়া, পঞ্চগড় সদর ও আটোয়ারী উপজেলার বিভিন্ন এলাকার শতাধিক ভুক্তভোগী। মানবন্ধন শেষে পঞ্চগড় জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর একটি স্মারকলিপি প্রদান করেন ভুক্তভোগীরা। স্মারকলিপিটি গ্রহণ করেন পঞ্চগড়ের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আব্দুল কাদের।

মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন আলী আমজাদ, মাহজেবিন মনসুর, মুসলেহার রহমান প্রধান ফুলু, মোফাজ্জল হক, বিরেন্দ্রনাথ সিংহ, মখলেসুর রহমান প্রধান, কামরুজ্জামান কামু, আসির উদ্দিন, তরিকুলসহ  অনেক ভুক্তভোগী। 

তারা বলেন, নীলফামারী-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মেজর রানা ২০ বছরের বেশি সময় ধরে পঞ্চগড়ের তেতুঁলিয়া, সদর ও আটোয়ারী উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় নামমাত্র মূল্যে অল্প পরিমাণের জমি কিনে চা বাগানের নামে মানুষের একরের পর একর জমি দখল করে নিয়েছেন। সদর ও আটোয়ারী উপজেলায় সনাতন ধর্মালম্বীদের মন্দিরের জমি নিজের দাবি করে দখলে নিয়ে তালা মেরে দিয়েছেন। পরে পূজা আর্চনা বন্ধ করে দেন তিনি।

আরেকদিকে যশোর-৩ আসনের সাবেক সাংসদ ও জেমকন গ্রুপের মালিক কাজী নাবিল আহমেদ পঞ্চগড়ের তেতুঁলিয়া উপজেলায় নামমাত্র দামে ২০ বছর আগে জমি কেনা শুরু করে চা বাগান করেন। জমি কেনার পর থেকেই তারা বেপরোয়া হয়ে মানুষের জমি দখল শুরু করেন।

তাদের এ কর্মকান্ডে অতিষ্ঠ হয়ে উঠে এলাকার মানুষ। কিন্তু প্রতিবাদ করতে গেলেই প্রভাব বিস্তারের কারণে বিভিন্ন সময়ে দেয়া হতো মামলা। বতর্মানে ৫০০ টির বেশি মামলা দেয়া হয়েছে স্থানীয়দের নামে। থানায় ভূক্তভোগীরা তাদের নামে কোন মামলাই করতে পারেনি। হামলা-নির্যাতন ছিল নিত্যদিনের ব্যাপার।

ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, জেমকন গ্রুপের এলিন, হাফিজ, রশিদ ও তাহেরের মতো লোকদের নিয়ে গড়া হয়েছিল এক লাঠিয়াল বাহিনী। এদের দিয়ে চালানো হতো হামলা নির্যাতন। আদালতেও এই দুই এমপির বিরুদ্ধে কেউ পেতেন না কথা বলার সাহস। তাদের পক্ষে নিযুক্ত করা হতো বড় বড় উকিল।

এ কারণে আদালতে পাত্তাই পাওয়া যেত না। সাবেক এই দুই এমপি মিলে এসব এলাকায় ৫শ একর জমি কিনলেও দখল করেছেন ১৩০০ একর জমি। শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর এসব ভুক্তভোগীরা প্রতিবাদ করার সাহস পেয়ে উদ্ধার করতে চান তাদের বেদখল হাওয়া সব জমি।

তাই অবিলম্বে সাবেক এই দুই এমপির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ, ভুক্তভোগীদের জমি ফিরিয়ে দেয়া, তাদের বিরুদ্ধে করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারসহ এদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য দাবি ভুক্তভোগীদের। অন্যথায় সাবেক এই দুই এমপির বিরুদ্ধে কঠোর আন্দোলনে নামবেন বলে এমন হুঁশিয়ারী ক্ষতিগ্রস্ত ভুক্তভোগীদের।

পঞ্চগড় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আব্দুল কাদের বলেন, দুপুরে আমাদের কাছে একটি স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে স্মারকলিপি পাঠানোসহ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

এবিষয়ে জেমকন গ্রুপের ল্যান্ড এন্ড লিগ্যাল ম্যানেজার কামাল পারভেজের সাথে সাংবাদিকরা মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি মিটিংয়ে আছেন জানিয়ে পরে কথা বলবেন বলে ফোন রেখে দেন। পরে একাধিকবার তার মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

মেসেঞ্জার/দোয়েল/তারেক