ঢাকা,  বুধবার
১৫ জানুয়ারি ২০২৫

The Daily Messenger

লামায় পাহাড়িদের কাজ করতে বাধা দিচ্ছে সন্ত্রাসী বাহিণী

লামা (বান্দরবান) প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৭:৫৬, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪

লামায় পাহাড়িদের কাজ করতে বাধা দিচ্ছে সন্ত্রাসী বাহিণী

ছবি : মেসেঞ্জার

বান্দরবানের লামার সরই ইউনিয়নে আন্দারীর ফুইট্টার ঝি‌রি এলাকায় স্থানীয় পাহাড়ি বাঙালি প্রায় শতাধিক পরিবারকে ‘সন্ত্রাসী বাহিনী’ দিয়ে নিজ জমিতে কাজ করতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে সাবেক স্থানীয় সরকার,পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী তাজুল ইসলামের বাহিনীর বিরুদ্ধে। সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে লামার সরইতে ফুইট্টা ঝি‌রি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

সরই এলাকার ভুক্তভো‌গীরা জানান, প্রতিদিনের মতো পাড়াবাসীরা ফুইট্টার ঝি‌রি এলাকায় নিজ জমিতে কাজ করতে গেলে হঠাৎ স্থানীয় সন্ত্রাসী মোঃ জাবেদ, সাবেক মন্ত্রী তাজুল ইসলামের ম্যানেজার ও সাবেক কুমিল্লা জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সাহাবু‌দ্দিন, সাহেদ হোসেনসহ একদল লোক দা,লাঠি ও ছুরি নিয়ে হামলা চালাতে আসে। এ সময় তাদের ভয়ে পাড়াবাসীরা কাজ না করে নিজেদের জায়গা থেকে পালিয়ে রক্ষা পায়।

আরো দাবি করেন, সাবেক স্থানীয় সরকার মন্ত্রী তাজুল ইসলাম লামার সরইতে নিয়মব‌হির্ভূতভাবে ভুয়া দলিলে জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে জোরপূর্বক দখলে নিয়েছেন প্রায় কয়েকশ কোটি টাকার জমি। ব্যাক্তিগত জমিতে এলজিইডি সরকারি টাকায় ব্রিজ, বেশ কয়েকটি রাস্তা প্রভাব খাটিয়ে নির্মাণ করেছে।

এ জ‌মিগু‌লোও সরকারি ভাবে জব্দ করার দাবি জানান এলাকার ভুক্তভোগীরা। সাবেক মন্ত্রী তাজুল ইসলামের স্বজন, কেয়ারটেকাররা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। তাদের ধরলে আত্নগোপনে থাকা সাবেক এই মন্ত্রী‌কেও খুঁজে পাওয়া সম্ভব হবে।

স্থানীয় বাসিন্দা নুরুল হক বলেন, বান্দরবানের স্থানীয় বাসিন্দা না হলে কেউ এখানে জায়গা কিনতে পারেন না। তাহলে মন্ত্রী কীভাবে জায়গা কিনলো? আমরা বান্দরবানে থেকে লিজ পাই না। বাইির থেকে এসে ওনারা কীভাবে জমি লিজ নেন। বিষয়‌টি তদন্ত করে তাদের লিজের জায়গা জমি বাতিলের দা‌বিসহ জড়িত থাকা সংশ্লিষ্ট কমকর্তাদের শাস্তির দাবি জানান তিনি।

স্থানীয় পাইসা প্রু মার্মা বলেন, এ জায়গাগু‌লো আমাদের দীর্ঘদিনের দখলে। এ জমিতে আমরা চাষাবাদ করে পরিবারের খরচ জোগান দেই। আগেও মন্ত্রীর লোকজন আমাদের এ জায়গা থেকে কয়েকবার সরানোর চেষ্টা চালিয়েছে।

কিন্তু সরকার পতনের পর কয়েকদিন ধরে আমরা শান্তিতে থাকলেও আবার তারা আমা‌দের ওপর হামলা চালিয়ে জমি দখলের অপচেষ্টা চালাচ্ছে। মন্ত্রী তাজুল ইসলাম সহ স্বজন‌দের এখানের সকল সম্পত্তি জব্দের জন্যও দাবি জানান এই বাসিন্দা।

সাবেক মন্ত্রী তাজুল ইসলামের এক আত্মীয় শাহ আলম মুকুল দাবি করেন,মন্ত্রীর নামে কোনও জায়গা নেই। তার স্ত্রী আমার এবং স্বজনদের জায়গা রয়েছে। আমার চট্টগ্রাম এবং ঢাকায় কোটি টাকার ব্যাবসা রয়েছে। সেই টাকা দিয়েই জায়গা কিনেছি। অন্যরা কীভাবে কিনেছে জানি না। আমরা কোনও জালিয়াতি করিনি। আমাদের জমির দলিলে কোনও সমস্যা নাই। আমরা জোরপূর্বক কারোর জায়গাও দখল করিনি। সরকার পতনের পর আমাদের জায়গা থেকে বহিরাগতরা গাছপালা কেটে নিয়ে যাচ্ছে। সাবেক মন্ত্রী তাজুল ইসলামের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘মন্ত্রী পালিয়ে বর্তমানে দেশের বাইরে।

এ বিষয়ে সরই পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এনামুল হক বলেন, হামলার কোনও খবর পাইনি। তবে সাবেক মন্ত্রীর জায়গায় গিয়ে অনেকে গাছপালা কেটে নিয়ে গেছে বলে শুনেছি। তবে এ বিষয়েরে আমি কোনও অভিযোগ এখনও পাইনি।

উল্লেখ্য,বান্দরবানের লামার সরই সাবেক মন্ত্রী তাজুল ইসলামের স্ত্রী ফৌ‌জিয়া ইসলামসহ তার স্বজন‌দের প্রায় ৫০০ একরেরও বেশি জমি দীর্ঘদিন দখলে রয়েছে।

মেসেঞ্জার/বিপ্লব/তারেক