ঢাকা,  মঙ্গলবার
১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪

The Daily Messenger

স্বামী লুৎফর রহমানের কবর দেখা হলোনা আমেনা বেগমের

ফুলবাড়ী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৮:৫৩, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪

স্বামী লুৎফর রহমানের কবর দেখা হলোনা আমেনা বেগমের

ছবি : মেসেঞ্জার

মহান মুক্তিযুদ্ধের ৬নং সেক্টরের প্রথম শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ লুৎফর রহমানের স্ত্রী আমেনা বেগম মারা গেছেন। শেষ বারের মতো আমেনা বেগমের ভাগ্যে তার স্বামী শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধার কবরটি দেখার ইচ্ছে পুরণ হলোনা।

তাদের একমাত্র সন্তান সৌদী আরব প্রবাসী মতিউর রহমানের সহযোগিতায় এবার হজ্ব পালন শেষ নিজ বাড়ি নোয়াখালী জেলার সোনাইমুড়ি উপজেলার বজরা ইউনিয়নে ফিরে আসলে বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) গভীর রাতে আমেনা বেগম মারা যান।

বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে জানাযা নামাজ সম্পন্ন করে শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী আমেনা বেগমকে বজরা শাহী জামে মসজিদের পাশে দাফন করা হয়েছে। মৃত্যুকালে তিনি সৌদী প্রবাসী একমাত্র সন্তান, ছেলের বউসহ নাতী ও পুতিসহ অসংখ্য গুনগ্রাহী রেখে গেছেন।

মরহুমা আমেনা বেগম মহান মুক্তিযুদ্ধে তার স্বামী শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা লুৎফর রহমানের কবরটি শেষ বারের মতো দেখে যেতে পারলেন না। তার স্বামী লুৎফর কবরটি রয়েছে কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলা সদরের ফুলবাড়ী কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের পাশে।

এবার মহান বিজয় দিবসে আমেনা বেগমসহ তার সন্তান মতিউর রহমান তার পরিবারের লোকজন শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ লুৎফর রহমানের কবর জিয়ারত করার কথা থাকলেও আমেনা বেগমের ভাগ্যে তা সম্ভব হলোনা।

উল্লেখ্য যে, মহান মুক্তিযুদ্ধে ৬ নং সেক্টরের প্রথম শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ লুৎফর রহমান ১৯৭১ সালে ২৬ মার্চ স্বাধীনতাযুদ্ধ ঘোষণার দুইদিন পর ২৮ মার্চ পাক পাকিনীর সঙ্গে সম্মূখযুদ্ধে লালমনিরহাট জেলার নেছরিয়া মাদ্রাসা সংলগ্ন এলাকায় পাক বাহিনীর গুলিতে শহীদ হন।

তিনি জীবদ্দশায় ফুলবাড়ী উপজেলা সদরের গংগারহাট ক্যাম্পে ইপিআর পদে কর্মরত ছিলেন। ওই সময় ফুলবাড়ীতে একদল পাক বাহিনী প্রবেশ করলে লুৎফর রহমান তাদেরকে প্রতিহত করার জন্য প্রতিরোধ্য হয়ে ওঠেন। তাদেরকে পরাস্থ্র করার জন্য পিছু নিলে এক সময় লালমনিরহাট জেলার নেছরিয়া মাদ্রাসা সংলগ্ন এলাকায় পাক বাহিনীর সঙ্গে লুৎফর রহমানের সম্মূখযুদ্ধ শুরু হয়। এ যুদ্ধে পাকবাহিনীর গুলিতে শহীদ হন লুৎফর রহমান।

পরবর্তীতে তার সহযোদ্ধারা শহীদ লুৎফর রহমানের মরদেহ লালমনিরহাট থেকে এনে ফুলবাড়ী কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ সংলগ্ন এলাকায় দাফন করেন। আগে শহীদ লুৎফর রহমানের কবর সম্পর্কে তার পরিবারের লোকজন জানতেন না।

ফুলবাড়ী মডেল প্রেস ক্লাব, ফুলবাড়ী সাহিত্য পরিষদ ও দৈনিক যায়যায়দিন পত্রিকার সুবাদে ফুলবাড়ীতে শহীদ লুৎফর রহমানের কবরটি সম্পর্কে জানতে পারে তার পরিবার। এই শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাকে সম্মান ও স্মরণীয় করে রাখতে ফুলবাড়ী মডেল প্রেস ক্লাব-এর মিলনায়তনের নামকরণ করা হয়েছে ‘শহীদ লুৎফর রহামান মিলনায়তন’।

প্রতিবছর (২৮ মার্চ) ফুলবাড়ী মডেল প্রেস ক্লাব, ফুলবাড়ী সাহিত্য পরিষদ ও দৈনিক যায়যায়দিন পত্রিকার উদ্যোগে শহীদ লুৎফর রহমানের শাহাদত বার্ষিকী পালন করা হয়ে থাকে ফুলবাড়ী উপজেলাবাসী।

মেসেঞ্জার/আনন্দ/তারেক

×
Nagad