ছবি : মেসেঞ্জার
জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার চাকলমুয়া সহীহ সুন্নাহ বালিকা মাদ্রাসার আবাসিকের নিখোঁজ সেই পাঁচ জন ছাত্রীকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। শুক্রবার (৬ সেপ্টেম্বর) বগুড়া থেকে উদ্ধার করে কালাই থানা এনে গভীর রাতে তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। ওই পাঁচ ছাত্রী দক্ষিণ কোরিয়ান বয় ব্যান্ড দলে (বিটিএস) আসক্তি ছিল বলে পুলিশের তদন্তে উঠেছে।
শুক্রবার ভোরে ওই মাদ্রাসার আবাসিকের পাঁচ জন ছাত্রীর খোঁজ পাচ্ছিল না মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ। এঘটনায় শুক্রবার দুপুরে মাদ্রাসার প্রধানশিক্ষক কামরুন্নাহার শিমু বাদী হয়ে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দেন।
থানায় দেওয়া লিখিত অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ওই মাদ্রাসায় মোট ৫৫ জন ছাত্রী পড়াশুনা করে। এরমধ্যে ৫০ জন ছাত্রী মাদ্রাসার আবাসিকে রয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে খাওয়া-দাওয়া শেষে আবাসিকের শিক্ষার্থীরা ঘুমিয়ে পড়ে।
প্রতিদিনের মতো শুক্রবার ভোরে শিক্ষার্থীদের ফজরের নামাজ আদায় করার জন্য আবাসিকের তত্ত্বাবধায়ক মোছাঃ মঞ্জুয়ারা বিবি দরজা খুলে দেন। এরপর মাদ্রাসার পরিচালক ফিরোজ হোসেনের মেয়েসহ পাঁচ জন শিক্ষার্থী বাহিরে গিয়ে আর মাদ্রাসায় ফিরেনি। মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ অন্য চার শিক্ষার্থীর বাসায় খোঁজ নেন। তারা কেউই বাসায় যায়নি।
নিখোঁজ পাঁচ শিক্ষার্থীর সবার বয়স ১০ থেকে ১২ বছর। এদের মধ্যে তিন জন শিক্ষার্থীর টাঙ্ক খুলে ভেতরে একটি করে চিরকুট পাওয়া যায়। এঘটনায় নিখোঁজ ছাত্রীদের অভিভাবকেরা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছিলেন।
এরপর পুলিশ ও মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ পাঁচ শিক্ষার্থীর সন্ধান শুরু করে। শুক্রবার রাতে ঢাকা যাওয়ার সময় বগুড়া থেকে তাদের আটক করে কালাই থানায় আনা হয়। শুক্রবারে পাঁচ ছাত্রীর অভিভাবককে থানায় ডেকে আনা হয়। মুচলেকা নিয়ে তাদের অভিভাবকদের জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া হয়। ওই পাঁচ ছাত্রী মাদ্রাসা থেকে পালানোর বিস্তারিত তথ্য জিডি তদন্তকারী কর্মকর্তা থানার উপপরির্দশক (এসআই) তোফায়েল আহাম্মেদকে জানান।
মাদ্রাসার পরিচালক ফিরোজ হোসেন বলেন, শুক্রবার ভোরে মাদ্রাসার আবাসিকের পাঁচ শিক্ষার্থীর নিখোঁজ হয়েছিল। এঘটনায় থানায় অভিযোগ দেওয়া হয়। ঢাকায় যাওয়ার সময় বগুড়া থেকে নিখোঁজ পাঁচ ছাত্রীকে পাওয়া যায়। থানায় এনে তাদের অভিভাবকের জিম্মায় দেওয়া হয়েছে।
কালাই থানায় উপপরির্দশক (এসআই) তোফায়েল আহাম্মেদ শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বলেন, মাদ্রাসার নিখোঁজ পাঁচ শিক্ষার্থী ছুটিতে নিজ বাড়িতে গেলে মুঠোফোনের ইউটিউবে দক্ষিণ কোরিয়ার ব্যান্ড দল (বিটিএস) দেখত।
এতে তারা বিটিএসে আসক্ত হয়ে পড়েছিল। তারা পাঁচ জন মাদ্রাসা থেকে পালিয়ে ঢাকায় গিয়ে কাজ করে টাকা জোগাড় করে বিটিএস দল করে টাকা রোজগারের পরিকল্পনা করে। একারণে তারা মাদ্রাসা থেকে পালিয়েছিল। পুলিশ তাদের উদ্ধার করে অভিভাবকের জিম্মায় দিয়েছে।
মেসেঞ্জার/রমি/তারেক
