ঢাকা,  বৃহস্পতিবার
৩১ অক্টোবর ২০২৪

The Daily Messenger

বানভাসি মানুষের পাশে লাল সবুজ সোসাইটি

লালমনিরহাট প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৪:০০, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪

বানভাসি মানুষের পাশে লাল সবুজ সোসাইটি

ছবি : মেসেঞ্জার

দেশে বন্যার্তদের জন্য উদ্ধার অভিযান, ত্রান সহায়তা, বন্যা পরবর্তী সময়ে জরুরী প্রয়োজনীয় সেবাসহ পূর্ণবাসনের কাজ চলমান রেখেছে সামাজিক সংগঠন লাল সবুজ সোসাইটি। 

দক্ষিণাঞ্চলের ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, কুমিল্লা সহ বন্যা প্লাবিত জেলাগুলোতে রাত দিন সেচ্ছাশ্রম দিয়ে বানভাসি মানুষের পাশে দাড়িয়েছে এই সোসাইটির সেচ্ছাসেবীরা। 

টানা ৩ দিন ২ রাত ফেনীর ছাগলনাইয়া, মুহুরীগঞ্জ  এবং লক্ষীপুরসহ আশে পাশে এলাকায় উদ্ধার অভিযান চালিয়েছে লাল সবুজ সোসাইটি ইমার্জেন্সি রেসপন্স টিম। ৫ টি বোটে প্রায় ৪০ জন ভলান্টিয়ার নিয়ে তারা ২ হাজার ৫শত মানুষকে উদ্ধার করে সাথে ২ হাজার ১শত পানিবন্দি মানুষের কাছে ত্রাণ সহায়তা পৌঁছে দিয়েছে। মুহুরীগঞ্জ থেকে ফেরার পথে ডাকাত আক্রমণ করে সেচ্ছাসেবীদের থেকে বোট ছিনিয়ে নেয়।

পানির স্তর কিছুটা হ্রাস পাওয়ার পর বিভিন্ন স্পটে মেডিকেল টিম, ত্রাণ সামগ্রী ও কাপর বিতরণ করা হয়। এছাড়াও লক্ষীপুর চন্দ্রগঞ্জ হাজিপাড়া এলাকার বিভিন্ন স্থানে বন্যার্তদের মাঝে ৫ শত ৫০টি পরিবারের মাঝে ত্রান সহায়তা, জরুরি ঔষধ ও স্যানিটারি প্যাড উপহার প্রদান করেছে লাল সবুজ সোসাইটি চট্টগ্রাম টিম। এছাড়া ১হাজার পরিবারের কাছে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করেছে সংগঠনটি। 

পানি কমার সাথে সাথে মেডিকেল সার্পোটসহ সর্বমোট ত্রাণ বিতরণ করা হয়েছে প্রায় ১০ হাজার পানি বন্দি মানুষের মাঝে। এরমধ্যে ফেনী, মুহুরিগঞ্জ, লক্ষিপুর, হাজীপাড়া, সোনাগাজি, গোবিন্দগঞ্জ, লালপুর, ফরহাদ নগরসহ আরও বেশ কিছু এলাকায়। লাল সবুজ সোসাইটির বিভিন্ন টিম মিলে নানান কার্যক্রামে সেচ্ছাসেবীরা যুক্ত হয়েছে ১ শত ৫০ জনের অধিক। 

এদিকে বন্যা পরবর্তী সময় বুধবার ৩ সেপ্টেম্বর গাইবান্ধা, নারায়ণগঞ্জ, চট্টগ্রাম থেকে ৪৪ জন ভলান্টিয়ার ফেনীর উদ্দেশ্য রওনা দেয়। বৃহস্পতিবার ৪ সেপ্টেম্বর জেলা প্রশাসক, জেলা তথ্য অফিসার ও সিভিল সার্জন ও ইউনিসেফ এর কর্মকর্তাদের সাথে মতবিনিময় করেন সেচ্ছাসেবীরা। 

পরদিন বন্যা পরবর্তী সময়ে করণীয় বিষয়গুলো নিয়ে ফেনী জেলার ৪৩টি ইউনিয়নে প্রচার করা হয়। তথ্য গ্রহণ করে এমন সংখ্যা জরিপ করে সেচ্ছাসেবীরা। জরীপে উঠে আসে প্রায় ৪ লক্ষ মানুষ। প্রচারণায় সার্বিক সহায়তা করেছে ইউনিসেফ ও জেলা তথ্য অফিস। এরপর মেডিকেল ক্যাম্প করে বিনামূল্যে ঔষধ বিতরণ ও পূর্নবাসনে কাজ করছে লাল সবুজ সোসাইটি।  

লাল সবুজ সোসাইটির চট্টগ্রাম টিমের সাধারণ সম্পাদক ফয়েজ উদ্দিন বলেন, প্রথম দিকে আমরা চেষ্টা করেছি যারা পানিতে আটকা পড়েছে তাদেরকে উদ্ধার করতে। তিন দিন দু রাতে আমরা পাঁচটি বোটে ২হাজার ৫শত মানুষকে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছি। পাশাপাশি চলমান শুকনো খাবার সরবরাহ ও মেডিকেল সার্পোট ছিলো।

সোসাইটির আর এক সেচ্ছাসেবী রাকিব আহমেদ বলেন, বন্যা পরবর্তী সময়ে আমরা চেষ্টা করেছি যে সমস্ত জায়গায় ত্রাণ পৌঁছায়নি সেগুলো জায়গায় ত্রাণ পৌঁছানোর। আমরা বিভিন্ন টিম বিভিন্ন জেলায় গিয়ে কাজ করেছি। ঢাকা থেকে আমরা পোশাক, শুকনো খাবার, ত্রাণ সামগ্রী ও মেডিকেল সাপোর্ট এর ব্যবস্থা করেছি। 

লাল সবুজ সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি তাহসিন উদ্দিন বলেন, চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় আমাদের সেচ্ছাসেবীরা সর্বদা এক্টিভ ছিলো। উদ্ধার থেকে শুরু করে মেডিকেল সাপোর্ট ও বন্যার্তদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ এবং বন্যা পরবর্তী সময়ে তথ্য গ্রহণ, পূর্ণবাসনে কাজ করছে আমাদের টিম। এখন পর্যন্ত ৪টি পরিবারকে ঘর তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। কয়েকটি পরিবারের স্যানিটেশনের ব্যবস্থা করা হয়েছে এছাড়াও বিছানা, দরজা সহ প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র দিয়ে তাদের পাশে থাকার চেষ্টা করছি। কাজ চলমান রয়েছে এটি আরও বাড়বে। দেশের যেকোনো দুর্যোগ মোকাবেলায় মানুষের পাশে থাকবে লাল সবুজ সোসাইটি। 

মেসেঞ্জার/ সাকিব/দিশা