ছবি : মেসেঞ্জার
রাঙামাটি জেলা শহরের অন্যতম বিদ্যাপীঠ রাণী দয়াময়ী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রণতোষ মল্লিক এর আর্থিক,প্রশাসনিক দুর্নীতি,অসদাচরণ ও অদক্ষতা এবং বেআইনী কার্যকলাপের প্রেক্ষিতে অনতিবিলম্বে অপসারণসহ তদন্ত পূর্বক আইনের আওয়াতায় নিয়ে আসা এসব দাবিতে রাঙামাটি বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
রবিবার (৮ সেপ্টেম্বর) সকালে রাণী দয়াময়ী উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ হতে জেলার মহাসড়ক প্রদক্ষিণ করে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে গিয়ে ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়।
রাণী দয়াময়ী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থী, অভিভাবক এবং নাগরিক সমাজের ব্যানারে মানববন্ধন কর্মসূচিতে অংশ নেন ওই বিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের ছাত্র-ছাত্রী,প্রাক্তন ছাত্র-ছাত্রী ও নাগরিক সমাজের নেতৃবন্ধ।
মানববন্ধন শেষে শিক্ষক রণতোষ মল্লিকের অপসারণ ও স্বচ্ছ তদন্ত চেয়ে জেলা প্রশাসকের মাধ্যেমে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ডা. ইউনূস এর বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন শিক্ষার্থীরা।
নাগরিক সমাজের পক্ষে শিক্ষার্থীদের দাবিকে সংহতি জানিয়ে মানববন্ধনে অংশ নেন বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের সাবেক সদস্য ও শিক্ষাবিদ নিরুপা দেওয়ান।
শিক্ষক রণতোষ মল্লিকের মাধ্যেমে নিজের ভূক্তভোগের শিকার হওয়া ঘটনা মানববন্ধনে তুলে ধরেন রাণী দয়াময়ী উচ্চ বিদ্যালয়ে দপ্তরি কাজে নিয়োজিত থাকা ভূক্তভোগী মনিরুল ইসলাম।
এছাড়াও মানববন্ধনে প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন, পহেলা চাকমা,সোহাগ চাকমা,উমেস চাকমা,উক্যওয়াই মারমা, তুহিন চাকমাসহ রাণী দয়াময়ী উচ্চ বিদ্যালয়ে অধ্যায়নরত শিক্ষার্থী বিনয় কুমার চাকমা,মোহিম চাকমা প্রমূক।
মানবন্ধনে শিক্ষার্থীরা প্রধান শিক্ষক রণতোষ মল্লিককের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বক্তব্যে বলেন, প্রধান শিক্ষক রণতোষ মল্লিকের অনিয়ম ও দুর্নীতির শেষ নেই। তার চাঁদাবাজি ও দুর্নীতি হিসাব করলে পাহাড় সমান হবে। বিদ্যালয়ে আর্থিক ও প্রশাসনিক বিভিন্ন খাতে তার দুর্নীতি অনেক। শুধু তাই নয়, স্কুলছাত্রীর ওপর হাত তুলতেও তিনি দ্বিধাবোধ করেন না। কোচিং বানিজ্য, রশিদবিহীন টাকা আদায় করা এসব দুর্নীতি তদন্ত হলে সবকিছু বের হবে। বিদ্যালয়ে কোনো শিক্ষার্থী কোচিং না করলেও কোচিং ফি দিতে হয়। যা এসব দুর্নীতিগুলো এতদিন নিরবে শিক্ষার্থীরা সহ্য করেছে।
শিক্ষার্থীরা আরো বলেন, শুধু তাই নয় মানববন্ধন কর্মসূচিতে না যাওয়ার জন্য হুমকি প্রদান করেন দুর্নীতিবাজ শিক্ষক রণতোষ মল্লিক। বিদ্যালয়ে অধ্যায়নরত বাঙালি শিক্ষার্থীরা সংহতি জানিয়ে মানববন্ধনে অংশগ্রহণে বাধা দেন এবং তালা মেরে শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীদেরকে আটকে রাখা হয়। যা রণতোষ মল্লিক সাম্প্রদায়িক ইস্যু সৃষ্টি করতে চাচ্ছেন।
ওই বিদ্যালয়ের দপ্তরি কাজে নিয়োজিত থাকা মনিরুল ইসলাম বলেন, দপ্তরির পদ এমপিওভূক্ত করার জন্য রাণী দয়াময়ী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রণতোষ মল্লিক ১৫ হাজার টাকা দাবি করেন। সেই টাকা না দেওয়ায় দপ্তরির চাকরিও চলে যায়। দুদকে শুনানি হলেও সেই টাকা এখনও ফেরত পাইনি।
মানববন্ধনে বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের সাবেক সদস্য ও শিক্ষাবিদ নিরুপা দেওয়ান বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ফসল হিসেবে আজকে স্বাধীনভাবে এখানে ছাত্র-ছাত্রীরা বলতে পারছে। এখন বাক স্বাধীনতা ফিরে এসেছে। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে জোর কওে প্রধান শিক্ষকদের পদত্যাগ করানো হয়েছে। সেসবচিত্র দেখে আমি নিজেই মর্মাহত ছিলাম। তবে সেধরনের কাজ রাঙামাটিতে হয়নি তার একমাত্র কারণ রাঙামাটির মানুষ অত্যান্ত শান্তিপ্রিয়। রণতোষ মল্লিকের উস্কানিতে অনলাইন পত্রিকায় মিথ্যাভাবে আমাকে জেএসএস এর পেইড এজেন্ট হিসেবে লেখা হয়েছে। যে পত্রিকায় লেখা হয়েছে আমি জেএসএস এর পেইড এজেন্ট তা প্রমাণ করতে হবে।
তিনি আরো বলেন, যখন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনে ছিলাম তখনও রণতোষ বাবুর বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ আসতো। রণতোষ মল্লিকের নেটওয়ার্ক এতই শক্ত তার অন্যায়ের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়া বিষয়গুলো তিনি ঘরে বসে জানেন।
মেসেঞ্জার/সুপ্রিয়/সৌরভ