ঢাকা,  মঙ্গলবার
২২ অক্টোবর ২০২৪

The Daily Messenger

বিএনপি নেতার স্ত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে

গোপালগঞ্জ, প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২২:৪৯, ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪

আপডেট: ২৩:১৪, ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪

বিএনপি নেতার স্ত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে

ছবি : সংগৃহীত

মামলায় সহযোগিতা করা কথা বলে গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরে বিএনপির স্থানীয় এক নেতার স্ত্রীকে ধর্ষণ করা অভিযোগ উঠেছে আকরাম মোল্লা (৩৫) নামে এক আওয়ামী লীগ নেতাসহ ২ জনের বিরুদ্ধে বিরুদ্ধে। গত ৩১ আগস্ট উপজেলা কাশালীয়া ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটে। 

ধর্ষণের শিকার ওই নারী বাদী হয়ে সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) গোপালগঞ্জে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালে আদালতে দুইজনকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেছেন। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) কে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।

আসামীরা হলেন, মুকসুদপুর উপজেলার উজানী গ্রামের মতি মোল্যার ছেলে আকরাম মোল্যা (৩৫)। তিনি উজানী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। অপর আসামী একই উপজেলার নিশ্চিন্তপুর। গ্রামের অনিল কৃষ্ণ মন্ডলের ছেলে পরিতোষ মন্ডল (৪৫)। পরিতোষ মন্ডল কে ধর্ষণের  সহযোগী হিসেবে আসামী করা হয়েছে। 

মামলা সূত্রে জানা যায়, ভুক্তভোগী ওই নারীর স্বামী মুকসুদপুর থানার একটি মামলায় বেশকিছুদিন আগে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এরপর থেকে ওই ভুক্তভোগী কে কোর্টের সকল কাজে সহযোগীতা করতো অভিযুক্ত আওয়ামী লীগ নেতা আকরাম মোল্লা। গত ৩১ শে আগস্ট কোর্টে যাওয়ার কথা বলে ভুক্তভোগী ওই নারী কে পার্শ্ববর্তী গ্রাম নিশ্চিন্তপুরে আরেক অভিযুক্ত পরিতোষ মন্ডলের বাড়ি নিয়ে যায়। পরে পরিতোষ মন্ডলের সহযোগীতায় ভুক্তভোগীকে ধর্ষণ করে ওই আওয়ামী লীগ নেতা। এ সময় ওই নারী চিৎকার করলে অভিযুক্ত পরিতোষ তার বাসার সাউন্ডবক্সে ফুল ভলিউমে গান ছেড়ে দেয়। ওইদিন ভুক্তভোগী মুকসুদপুর থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ মামলা নিতে চায় না। পরে আজ ওই নারী বাদী হয়ে আজ গোপালগঞ্জের আদালতে মামলা দায়ের করেন। 

এবিষয়ে ওই ভুক্তভোগী নারী বলেন, আমার স্বামী উপজেলার উজানী ইউনিয়ন বিএনপির সক্রিয় একজন সদস্য। তিনি ইউনিয়ন বিএনপির কার্যকরী সদস্য পদে আছেন। আসামী আকরাম মোল্লা আমার ফুফাতো ননদের স্বামী। এবং উজানি ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। আমার স্বামী কে পুলিশ গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায় বেশ কয়েকদিন আগে। এরপর থেকে কোর্টের সকল কাজে তিনি আমাকে সহযোগীতা করতেন। ঘটনার দিন তিনি আমাকে কোর্টে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে পূর্বপরিকল্পিত ভাবে তার পরিচিত পাশের গ্রাম  নিশ্চিন্তপুরের পরিতোষের বাড়িতে নিয়ে যায়। পরে সেখানে আসামী আকরাম আমাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। এসময় আমি পরিতোষ কে ডাক দিলে পরিতোষ আমাকে সহযোগী না করে উল্টো তার বাসার সাউন্ডবক্সে ফুল ভলিউম দিয়ে গান ছেড়ে দেয়। পরে সেখান থেকে বাড়িতে ফিরে আমি মুকসুদপুর থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ মামলা নিতে রাজি না হওয়ায় আজকে কোর্টে হাজির হয়ে মামলা দিয়েছি। 

এবিষয়ে জানতে অভিযুক্ত আকরাম মোল্লার সঙ্গে যোগাযোগ চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। ঘটনার পর থেকেই পলাতক রয়েছে অভিযুক্তরা। 

এবিষয়ে উজানি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি শ্যামল কান্তি ঘোষ বলেন, বাদী এবং অভিযুক্ত আকরাম একে অপরের আত্মীয়। বাদীর স্বামীকে পুলিশ গ্রেপ্তারের পর থেকে দেখতাম ওরা একসঙ্গে কোর্টে যেত। তবে ধর্ষণের ঘটনা আমার জানা নেই। 

তিনি আরও বলেন, অভিযুক্ত আকরাম মোল্লা উজানী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। বিষয়টি প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হলে আমরা উপজেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বহিষ্কার করা হবে।

মেসেঞ্জার/সজিব