ছবি : মেসেঞ্জার
লালমনিরহাট শহরে রেলওয়ের জমিতে স্থানীয় এক আওয়ামীলীগ নেতার বহুল আলোচিত একটি অবৈধ স্থাপনা গুড়িয়ে দিলো রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) দুুপুরে শহরের বিডিআর রোডে বসুন্ধরা এলাকায় আওয়ামী লীগ নেতা শরীফ মোহাম্মদ আতাউল্লাহ সরকারের দখলকৃত অবৈধ স্থাপনা দুটি ভেকু দিয়ে গুড়িয়ে দেওয়া হয়।
এর আগে (২ জুলাই) মঙ্গলবার ওই অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করতে এসে আইনশৃঙ্খলার অবনতির আশংকার কথা বলে ফিরে গিয়েছিল রেলের লোকজন। গুঞ্জন রয়েছে স্থানীয় সাবেক এমপি অ্যাডভোকেট মতিয়ার রহমান ফোনে বন্ধ হয় উচ্ছেদ অভিযান।
রেলওয়ে সুত্রে জানা গেছে, শরীফ মোহাম্মদ আতাউল্লাহ সরকার নামে এক ব্যবসায়ী রেলওয়ের মালিকানাধীন জমিতে অবৈধভাবে আধাপাকা স্থাপনা নির্মাণ করে এক হাজার বর্গফুট ভূমি দখলে রাখেন। ২০২১ সালের (২৩ আগষ্ঠ) অবৈধ স্থাপনা সরাতে রেলওয়ের ভূ-সম্পত্তি বিভাগ তাঁকে উচ্ছেদ নোটিশ দেয়।
ওই নোটিশের বিরুদ্ধে একই বছরের (২১ নভেম্বর) আতাউল্লাহ সরকার প্রথমে লালমনিরহাট জজ আদালতে মোকদ্দমা দায়ের করেন। পরে তা প্রত্যাহার করে হাইকোর্ট বিভাগে রিট পিটিশন করেন। হাইকোর্টে তার আবেদন খারিজ করলে তিনি সুপ্রিমকোর্টে আপিল বিভাগে লিভ-টু আপিল করেন।
সেখানে রায় তাঁর পক্ষে না গেলে তিনি আপীল বিভাগে সিভিল রিভিউ পিটিশন করেন। (১৪ মার্চ) সুপ্রিম কোর্টের আপীল বিভাগ মোকদ্দমাটি খারিজ করেন। সে আলোকে লালমনিরহাট রেলবিভাগীয় ভূ-সম্পত্তি বিভাগ (১ জুলাইয়ের) মধ্যে অবৈধ স্থাপনাটি অপসারনে তাঁকে উচ্ছেদ নোটিশ দেয়।
পরের দিন (২ জুলাই) মঙ্গলবার উচ্ছেদ নোটিশ কার্যকর করতে রেল কর্তৃপক্ষ ঘটনাস্থলে গেলে বাঁধার সস্মখীন হন। জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক সুমন খান, জেলা যুবলীগের সভাপতি মোড়ল হুমায়ন কবীরের নেতৃত্বে বিপুল সংখ্যক আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী সেখানে জড়ো হয়।
তাঁরা উচ্ছেদ অভিযানে বাঁধা দিতে থাকে। এ সময় সাবেক এমপি জেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক অ্যাডভোকেট মতিয়ার রহমান উচ্ছেদ দলের প্রধানকে ফোন করলে থেমে যায় উচ্ছেদ প্রক্রিয়া। অবশেষে বৃহস্পতিবার সফলভাবে উচ্ছেদ অভিযান সম্পন্ন হয়।
এ সময় লালমনিরহাট রেলওয়ে বিভাগীয় ভূ-সম্পত্তি কর্মকর্তা পূর্ণেন্দু দেব, জেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাপসী তাবাসসুম উর্মিসহ প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
স্থানীয়রা জানান, ব্যবসায়ী শরীফ মোহাম্মদ আতাউল্লাহ সরকার এক সময় বিএনপি রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন। সম্প্রতি তিনি আওয়ামী লীগে যোগদান করেন। এদিকে রেল কর্তৃপক্ষ ওই ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে সরকারি দলিল জালিয়াতি করার অভিযোগ এনে লালমনিরহাট সদর থানায় এজাহার দায়ের করে। পরে তা দূর্নীতি দমন কমিশনের নজরে আনেন তারা। বর্তমানে তার বিরুদ্ধে দুদকে মামলা চলমান রয়েছে।
মেসেঞ্জার/লাডলা/তারেক